Advertisement
০৩ মে ২০২৪
Police Investigation

গাড়িতে করে এসে চুরি! অবশেষে নাগালে ‘ভিআইপি’ চোর

অভিযুক্তের নাম নাদিম কুরেশি ওরফে কপিল ত্যাগী। বাড়ি উত্তরপ্রদেশের গাজ়িয়াবাদে। সল্টলেকের একটি ব্লকে চুরির ঘটনায় নাদিম ওরফে কপিলকে ২০২১ সালে চিহ্নিত করেছিল বিধাননগর পূর্ব থানার পুলিশ।

An image of arrest

—প্রতীকী চিত্র।

নিজস্ব সংবাদদাতা
কলকাতা শেষ আপডেট: ২৫ জুলাই ২০২৩ ০৯:২০
Share: Save:

মুম্বইয়ে খাস শাহরুখ খানের পাড়া ছাড়াও বিভিন্ন অভিজাত এলাকায় রয়েছে তার একাধিক ফ্ল্যাট। তার ছেলেমেয়েরা পড়াশোনা করে নামী স্কুলে। তাকে ঘিরে আঁটোসাঁটো নিরাপত্তার বলয়। অথচ, বারোশোরও বেশি চুরির মামলা রয়েছে সেই ব্যক্তির বিরুদ্ধে! ধরা পড়লেও সে যেন চুরি বিদ্যের নাম অক্ষুণ্ণ রাখতে চেয়েছে। জেলের বাইরে এসে চুরির টাকাতেই বিলাসবহুল জীবনযাপন করেছে। তার পরে ফের ধরা পড়েছে চুরির অভিযোগে। ছাড়া পেয়ে আবারও একই পথে হেঁটেছে এই ‘ভিআইপি’ চোর। এ ভাবেই কেটে গিয়েছে দু’দশক। দেশের বিভিন্ন জেলে তাকে নিয়ে এতটাই কাড়াকাড়ি যে, বিধাননগরের পুলিশ তাকে শনাক্ত করলেও হাতের নাগালে পেতেই কেটে গেল এক বছরেরও বেশি সময়।

তার নাম নাদিম কুরেশি ওরফে কপিল ত্যাগী। বাড়ি উত্তরপ্রদেশের গাজ়িয়াবাদে। সল্টলেকের একটি ব্লকে চুরির ঘটনায় নাদিম ওরফে কপিলকে ২০২১ সালে চিহ্নিত করেছিল বিধাননগর পূর্ব থানার পুলিশ। কিন্তু পুলিশের দাবি, একাধিক জেলের ভাত খাওয়া কপিলকে হাতে পেতেই লেগে গেল এক বছরেরও বেশি সময়। উত্তরপ্রদেশ পুলিশেরসাহায্যে গত বৃহস্পতিবার তাকে ধরে এনে দমদম জেলে রাখা হয়। বিধাননগর কমিশনারেট সূত্রের খবর, সোমবার বিধাননগর এসিজেএম আদালতে নাদিমকে হাজির করানো হলে বিচারক তাকে পুলিশি হেফাজতে রাখার নির্দেশ দেন।

পুলিশ জানায়, ২০২১ সালের সেপ্টেম্বরে সল্টলেকের সিএল ব্লকে একটি আবাসনের দু’টি ফ্ল্যাট থেকে নগদ ১২ লক্ষ টাকা ও সোনার গয়না চুরি যায়। পুলিশ তদন্তে নেমে জানতে পারে, সাদা গাড়িতে চেপে এসে এক ব্যক্তি ওই আবাসনে ঢুকেছিল। সেই ব্যক্তির খোঁজ করতে গিয়েই নাদিমকে চিহ্নিত করে বিধাননগরের পুলিশ। তার সম্পর্কে খোঁজ করতে গিয়ে তদন্তকারীরা জানতে পারেন, নাদিম তখন রাজস্থানে একটি চুরির মামলায় জেল খাটছে। গ্রেফতারি পরোয়ানা নিয়ে বিধাননগরের পুলিশ সেখানে গেলেও নাদিমকে হাতে পায়নি। কারণ, চুরি ও ডাকাতির বিভিন্ন মামলায় সে কখনও তিহাড় জেলে, কখনও গাজ়িয়াবাদের জেলে ঘুরছে। পুলিশের দাবি, নাদিমের বিরুদ্ধে বিভিন্ন রাজ্যে এত মামলা যে, আইনি জটিলতায় তাকে হাতে পেতেই লেগে গিয়েছে এক বছরেরও বেশি সময়।

সমাজমাধ্যমে খোঁজ করলেই নাদিমের অপরাধের বহু খবর মিলবে। তবে, এ রাজ্যে সে প্রথম ধরা পড়ল বলেই বিধাননগর পুলিশের দাবি। কী ভাবে একের পর এক চুরি করত নাদিম? পুলিশ জেনেছে, দামি গাড়ি চেপেই সে দেশের বিভিন্ন রাজ্যে যেত চুরি করতে। সঙ্গে থাকত ব্যক্তিগত দেহরক্ষী, বাউন্সার। অভিজাত এলাকায় বিত্তশালীদের ফ্ল্যাটের দিকেই নজর থাকত নাদিমের। আকাশছোঁয়া বহুতলে গাড়ি নিয়ে সটান ঢুকে পড়ত সে। হাতে ধরা অ্যাটাচিতে থাকত তালা ভাঙার যন্ত্র। নাদিমের চালচলন দেখে আবাসনের নিরাপত্তারক্ষীরা তাকে প্রশ্ন করতে বা বাধা দেওয়ার সাহস পেতেন না। প্রথমেই আবাসনে ঢুকে সে লিফ্‌টে করে উঠে যেত সব চেয়ে উঁচু তলায়। তার পরে সিঁড়ি দিয়ে নামতে নামতে খেয়াল করত, কোন কোন ফ্ল্যাট খালি রয়েছে। এর পরে তালা ভাঙার যন্ত্র বার করে সেই ফাঁকা ফ্ল্যাটে ঢুকে চুরি করে বেরিয়ে যেত সে।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

অন্য বিষয়গুলি:

police investigation Thief arrest
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE