কলকাতার বিধানচন্দ্র রায় শিশু হাসপাতালের ঘটনা। প্রতীকী ছবি।
শিশু বিক্রি বা জন্মের ভুয়ো শংসাপত্র তৈরি করে শিশু হস্তান্তরের একাধিক ঘটনা সামনে এসেছে গত কয়েক মাসে। যার প্রেক্ষিতে সন্তান দানে ইচ্ছুক ব্যক্তিদের কাছে প্রশাসনের আর্জি, প্রতিপালনের সামর্থ্য না থাকলে সরকারের কাছে সন্তানকে দিয়ে দিন।
কয়েক সপ্তাহ আগে কলকাতার বিধানচন্দ্র রায় শিশু হাসপাতালে চিকিৎসার জন্য নিয়ে আসা একটি শিশুর জন্মের শংসাপত্র দেখে সন্দেহ হওয়ায় শিশুকল্যাণ কমিটিকে খবর দেন হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ। এখন শিশুটি কমিটির হেফাজতে। কমিটির চেয়ারপার্সন মহুয়া শূররায় সম্প্রতি জানান, তদন্তে দেখা গিয়েছে, শিশুটির জন্মের শংসাপত্রটি জাল। কলকাতা পুলিশকে ঘটনাটি জানানো হয়েছে। তাঁর কথায়, ‘‘ছ’মাসে এ ধরনের অবৈধ ভাবে শিশু হস্তান্তরের একাধিক ঘটনার কথা জানতে পেরেছি। এর সঙ্গে অসাধু চক্র জড়িয়ে রয়েছে। প্রতিপালনের ক্ষমতা না থাকলে সন্তানকে প্রশাসনের কাছে দিয়ে দিতে পারেন যে কেউ। সরকারই তার দেখাশোনার দায়িত্ব নেবে।’’
বিধানচন্দ্র রায় শিশু হাসপাতালের এক চিকিৎসক বলেন, ‘‘অনেক সময়ে হাসপাতালে এমন অনেক শিশুকে আনা হয়, যাদের সঙ্গে তাদের জন্মদাত্রী মা বা বাবারা থাকেন না। সে ক্ষেত্রে আমাদের সতর্ক থাকতে হয়। এমনই একটি শিশুর জন্ম সংক্রান্ত নথি দেখে সন্দেহ হওয়ায় চাইল্ড ওয়েলফেয়ার কমিটিকে খবর দেওয়া হয়েছিল। চিকিৎসার পরে বাচ্চাটিকে কমিটির হেফাজতে দেওয়া হয়েছে।’’
মহুয়া বলেন, ‘‘ওই শিশুটিকে শিশুকল্যাণ কমিটির কাছে হাজির করানোর পরে আমরা তার অভিভাবকদের সঙ্গে কথা বলি। ওঁদের বাড়ি হাওড়ায়। ওঁরা প্রথমে বাচ্চাটিকে নিজেদের বলে দাবি করেছিলেন। পরে নানা প্রশ্নের মুখে পড়ে শেষ পর্যন্ত স্বীকার করেন যে, বাচ্চাটি তাঁদের নয়। তাঁরা তাকে বড় করছেন।’’ সেই সঙ্গে তিনি যোগ করেন, ‘‘এ ভাবে বাচ্চা নেওয়া যায় না। দত্তক নেওয়ার সুনির্দিষ্ট সরকারি পদ্ধতি আছে। এ ভাবে শিশু আদানপ্রদান হলে টাকাপয়সার অবৈধ কারবার গড়ে ওঠে। পাচার-চক্র সক্রিয় হয়। প্রশাসন এ নিয়ে সতর্ক রয়েছে। সে কারণেই এই ধরনের ঘটনা নজরে এলে আমরা পুলিশকে জানাই।’’
মাসকয়েক আগে হাওড়ার সাঁকরাইলে শিশু বিক্রির অভিযোগে গ্রেফতার করা হয়েছিল এক দম্পতিকে। এখন তাঁরা জেলে রয়েছেন। তদন্তে জানা যায়, পর পর কয়েকটি সন্তান বিক্রি করেছিলেন ওই দম্পতি। এই কাজে সমর্থন ছিল তাঁদের এক আত্মীয়ের। উত্তর ২৪ পরগনা জেলা থেকেও জন্মের ভুয়ো শংসাপত্র বানিয়ে শিশু হস্তান্তরের ঘটনা সামনে এসেছে বলে জানা গিয়েছে।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy