এ যেন ‘আইনি পথে’ তোলাবাজি।
এলাকায় বেআইনি বাড়ি তৈরি হচ্ছে এই অভিযোগ করে আদলতে মামলা দায়ের করেন এক ব্যাক্তি। সেই মামলায় আদালতের নির্দেশে পুলিশ ব্যবস্থা নিতেই বেআইনি বাড়ির মালিক বা তাঁর সঙ্গে যুক্ত প্রোমোটারের কাছে হাজির ওই আবেদনকারী এবং তাঁর সাঙ্গোপাঙ্গরা। তাঁদের দাবি, মোটা টাকা (তোলা) দিলেই সব মামলা তুলে নিয়ে বন্ধ হয়ে যাওয়া বাড়ির কাজ শুরু করতে দেওয়া হবে।
লালবাজার সূত্রে জানা গিয়েছে, একবালপুর এলাকার দুই দুষ্কৃতীকে অস্ত্র আইনে গ্রেফতারের পরে বন্দর এলাকার একাংশে ওই ‘আইনি পথে’ তোলবাজির কথা সামনে এসেছে। ধৃত ওই দুই দুষ্কৃতীর নাম আসিফ নোমানি এবং মহম্মদ মুমতাজ। দু’জনেরই বাড়ি একবালপুর থানার মোমিনপুরে। লালবাজারের গোয়েন্দারা জানিয়েছেন, বন্দর বিভাগের বিশেষ বিভাগ (এসএসপিডি) ওই দু’জনকে গত রবিবার গ্রেফতার করে। ওই তোলাবাজির অভিযোগ সামনে এলে লালবাজারের গুন্ডাদমন শাখার অফিসারেরা তাঁদের হেফাজতে নেবে বলে জানায় পুলিশ। প্রাথমিক তদন্তে পুলিশ জানিয়েছে, ধৃত নোমানির নেতৃত্বে বন্দর এলাকায় ওই তোলাবজির চক্রটি গত কয়েক মাস ধরে সক্রিয় ছিল। ওই চক্রের দু’জন গ্রেফতার হলেও বাকিরা পলাতক।
পুলিশের একাংশের দাবি, ওই চক্রের সদস্যেরা প্রত্যেকেই স্থানীয়। ফলে একবালপুর, মোমিনপুর, খিদিরপুর এলাকায় কোথায় কোথায় বেআইনি নির্মাণ হচ্ছে, তা তাদের নখদর্পণে থকত। ধৃতদের কাছ থেকে তদন্তকারীরা জানতে পেরেছেন, প্রথমে ওই বেআইনি বাড়ির প্রোমোটারের সঙ্গে যোগাযোগ করত তারা। এর পরে তোলা চাইত। প্রোমোটার তাদের পছন্দমতো টাকা না দিলেই ধৃত নোমানির নির্দেশে আদালতে বেআইনি বাড়ি তৈরি রুখতে মামলা দায়ের করা হতো। আদালত ওই বাড়ির কাজ বন্ধের নির্দেশ স্থানীয় থানাকে দিলেই পুলিশ কাজ বন্ধ করে দিত। এর পরেই
ফের ওই প্রোমোটারের সঙ্গে যোগাযোগ করত ওই চক্রটি। মামলা তুলে নেওয়া হবে এই আশ্বাস দিয়ে ওই প্রোমোটারের কাছে টাকা
চাওয়া হতো। টাকা না দিলেই চলত মারধর, হুমকি।
লালবাজারের এক কর্তা জানান, বেআইনি বাড়ি তৈরির সঙ্গে যুক্ত থাকায় কোনও প্রোমোটারই প্রথমে পুলিশের দ্বারস্থ হতেন না। একবালপুর থানায় নভেম্বর মাসে এক প্রোমোটার প্রথমে তোলাবাজির একটি অভিযোগ দায়ের করেন। পরে পুলিশের শীর্ষ কর্তাদের নজরে ওই তোলাবাজির চক্রের কাজকর্মের খবর আসে। এর পরেই নড়েচড়ে বসে লালবাজার এবং স্থানীয় পুলিশ। অস্ত্র-সহ গ্রেফতার করা হয় ওই দু’জনকে।
পুলিশ সূত্রে জানা গিয়েছে, ওই দু’জন গ্রেফতার হতেই মোমিনপুর এলাকার আরও দুই প্রোমোটার ওই চক্রের বিরুদ্ধে মামলা দায়ের করেছেন থানায়। ওই প্রোমোটারদের কয়েক জনের সঙ্গে যোগাযোগ করা হলে তাঁরা এ বিষয়ে অবশ্য কোনও মন্তব্যই করতে চাননি।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy