Advertisement
৩০ এপ্রিল ২০২৪
Malaria

একা ডেঙ্গি নয়, শহরে ভয় ধরাচ্ছে দোসর ম্যালেরিয়া

গত তিন মাসে ম্যালেরিয়া সংক্রমণের হার বেশ খানিকটা বেড়েছে শহরে। মশাবাহিত রোগ ঠেকাতে বৃহস্পতিবার কলকাতা পুরভবনে সমস্ত স্বাস্থ্য আধিকারিককে নিয়ে বৈঠক করেন ডেপুটি মেয়র অতীন ঘোষ।

প্রতীকী ছবি।

প্রতীকী ছবি।

নিজস্ব সংবাদদাতা
কলকাতা শেষ আপডেট: ০৫ নভেম্বর ২০২২ ০৬:৩৬
Share: Save:

একা ডেঙ্গিতে রক্ষা নেই, ম্যালেরিয়া দোসর। কলকাতায় ডেঙ্গির পাশাপাশি ম্যালেরিয়া আক্রান্তের সংখ্যাও বাড়ছে। পুরসভার স্বাস্থ্য বিভাগ সূত্রের খবর, দক্ষিণ কলকাতার তুলনায় উত্তর ও মধ্য কলকাতায় ম্যালেরিয়া আক্রান্তের সংখ্যা বেশি। রাজ্যের স্বাস্থ্য-অধিকর্তা সিদ্ধার্থ নিয়োগী বলেন, ‘‘কলকাতায় ডেঙ্গির পাশাপাশি ম্যালেরিয়ার দাপটও রয়েছে। সাধারণ মানুষকে সচেতন হতে অনুরোধ করছি। জল কোনও ভাবেই জমিয়ে রাখা চলবে না। মশারি ছাড়া ঘুমোবেন না।’’

পুরসভা সূত্রের খবর, গত তিন মাসে ম্যালেরিয়া সংক্রমণের হার বেশ খানিকটা বেড়েছে শহরে। মশাবাহিত রোগ ঠেকাতে বৃহস্পতিবার কলকাতা পুরভবনে সমস্ত স্বাস্থ্য আধিকারিককে নিয়ে বৈঠক করেন ডেপুটি মেয়র অতীন ঘোষ। ডেঙ্গির পাশাপাশি ম্যালেরিয়া নিয়ন্ত্রণেও সমস্ত এগ্‌জিকিউটিভ অফিসারকে আরও বেশি সতর্কতা অবলম্বন করতে বলা হয়েছে। পুরসভা সূত্রের খবর, উত্তর ও মধ্য কলকাতার বড়বাজার, পোস্তা, স্ট্র্যান্ড রোড এবং ধর্মতলার ফুটপাতে বহু মানুষ রাতে ঘুমোন। ওই সমস্ত এলাকাতেই ম্যালেরিয়া আক্রান্তের সংখ্যা সর্বাধিক। পুর স্বাস্থ্য বিভাগ জানিয়েছে, উত্তর কলকাতায় ফ্যালসিপেরাম ম্যালেরিয়ায় আক্রান্তের সংখ্যা তুলনায় বেশি।

শহরে ম্যালেরিয়া আক্রান্তের সংখ্যা বাড়তে থাকায় পুরসভার স্বাস্থ্য বিভাগের তরফে ইতিমধ্যেই ২০ হাজার মশারি বিলির কাজ শুরু হয়েছে। কাউন্সিলরদের মাধ্যমে ওয়ার্ডে ওয়ার্ডে তা বিলি করা হচ্ছে। পুর স্বাস্থ্য বিভাগের এক আধিকারিক জানান, শহরের ফুটপাতে অনেকেই মশারি ছাড়া ঘুমোন। ওই সমস্ত পরিযায়ী শ্রমিক মাঝেমধ্যে ফুটপাতের ঠিকানাও বদলান। তাঁদের মধ্যে অনেকে ম্যালেরিয়ায় আক্রান্ত হলেও ওষুধের পুরো কোর্স শেষ করেন না। এমন ফুটপাতবাসীদের খুঁজে বার করতে বলা হয়েছে স্বাস্থ্যকর্মীদের।

শহরে ডেঙ্গি ও ম্যালেরিয়ার মতো মশাবাহিত রোগের দাপট উত্তরোত্তর বাড়তে থাকায় সাধারণ মানুষ আতঙ্কিত। শুক্রবার ‘টক টু মেয়র’ অনুষ্ঠানে অনেকেই মশাবাহিত রোগ নিয়ে মেয়রের কাছে ক্ষোভ প্রকাশ করেন। রাজ্য স্বাস্থ্য দফতরের পরিসংখ্যান অনুযায়ী, কলকাতা পুর এলাকার ১২ নম্বর বরোর ১০৬ নম্বর ওয়ার্ডে ডেঙ্গি আক্রান্তের হার সর্বাধিক। এ দিন ‘টক টু মেয়র’ অনুষ্ঠানে ওই ওয়ার্ডের এক বাসিন্দা অভিযোগ করেন, এলাকায় ডেঙ্গি আক্রান্তের সংখ্যা বেড়েই চলেছে। তাঁরা আতঙ্কিত। মেয়রকে তিনি বলেন, ‘‘মশার প্রকোপ কমাতে দয়া করে পদক্ষেপ করুন।’’ তাঁর কাছ থেকেই মেয়র জানতে পারেন, ১০৬ নম্বর ওয়ার্ডে একাধিক ফাঁকা জায়গা পড়ে রয়েছে। যেখানে জন্মাচ্ছে মশা। যার প্রেক্ষিতে মেয়র বলেন, ‘‘অনেকেই বছরের পর বছর ফাঁকা জমি ফেলে রেখে দেন।

সেখানে আবর্জনা জমে মশার আঁতুড়ঘর তৈরি হয়। জমির মালিকদের নোটিস দেওয়া সত্ত্বেও তাঁরা পরিষ্কার করেন না। তখন বাধ্য হয়ে পুরসভাকেই সেই কাজ করতে হয়।’’ মেয়রের হুঁশিয়ারি, এ বার থেকে ফাঁকা জমি ফেলে রাখলে পুরসভা পরিষ্কার করার বদলে তিন গুণ অতিরিক্ত ফি আদায় করবে। ওই টাকা পুরসভা জমির মালিকের থেকে সম্পত্তিকর বাবদ আদায় করবে। ফাঁকা জমি ও বাড়ি নিয়ে উপযুক্ত পদক্ষেপ করতে পুর কমিশনারকে আদালতে যাওয়ার পরামর্শ দেন মেয়র।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

অন্য বিষয়গুলি:

Malaria Dengue KMC
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE