বিধাননগর পুরসভা। —ফাইল চিত্র।
এলাকায় অবাধ বেআইনি নির্মাণ নিয়ন্ত্রণ করতে না পারায় উচ্চ আদালতে তোপের মুখে পড়েছিল বিধাননগর পুরসভা। সংযুক্ত এলাকার দু’টি ওয়ার্ডের বেআইনি নির্মাণ নিয়ে একটি মামলার পরিপ্রেক্ষিতে ওই ঘটনা ঘটে। এ বার ওই মামলার সঙ্গে বেআইনি নির্মাণ সংক্রান্ত আরও কয়েকটি মামলা যুক্ত হতে চলেছে। তার সাপেক্ষে বিধাননগরের একাধিক ওয়ার্ডে বিভিন্ন নির্মাণের বিরুদ্ধে নোটিস পাঠাচ্ছে পুরসভা। তাতে প্রোমোটারদের থেকে জানতে চাওয়া হবে, কী ভাবে ওই ধরনের নির্মাণ তাঁরা তৈরি করেছেন।
একটি জনস্বার্থ মামলাকে কেন্দ্র করে উচ্চ আদালত বিধাননগর পুরসভার কাছে জানতে চেয়েছিল, ওই সব বেআইনি নির্মাণ নিয়ে পুর কর্তৃপক্ষ কী ব্যবস্থা নিচ্ছেন? বিধাননগরের ৩৫ ও ৩৬ নম্বর ওয়ার্ডের (সংযুক্ত এলাকা বলে পরিচিত) বেআইনি নির্মাণ নিয়ে সেই মামলা হয়। তার পরে উচ্চ আদালত জানিয়েছিল, পুরসভার উচ্চপদস্থ দুই আধিকারিক এ বিষয়ে নিজেদের দায় এড়াতে পারেন না। এর পরে সেই সব বেআইনি ভাবে নির্মিত বাড়ি খালি করিয়ে ভেঙে দেওয়ার নোটিস দিয়েছিল পুরসভা। পুর আধিকারিকেরা জানাচ্ছেন, বিধাননগরের একাধিক ওয়ার্ডে বেআইনি নির্মাণ সংক্রান্ত একাধিক মামলা রয়েছে। সংযুক্ত এলাকার মামলাটির সঙ্গে ওই মামলাগুলির কয়েকটি যুক্ত হবে। তাই ওই সব নির্মাণকেও নোটিস পাঠানো হয়েছে।
পুর কর্তৃপক্ষের দাবি, আদালতে মামলা না হলেও এলাকায় বেআইনি নির্মাণ ঠেকাতে পুরসভা গত কয়েক মাস ধরে তৎপরতা দেখাচ্ছে। তাই নতুন নিয়ম জারি করা হয়েছে যে, গ্রাহক গৃহঋণ নিতে গেলেও সংশ্লিষ্ট নির্মাণের পুর অনুমোদন রয়েছে কি না, তা যেন ব্যাঙ্ক খতিয়ে দেখে নেয়। একই নির্দেশ দেওয়া হয়েছে বিদ্যুৎ সংস্থাগুলিকেও। এক আধিকারিকের কথায়, ‘‘এ বার শক্ত হাতে বেআইনি নির্মাণের মোকাবিলা করা হবে। যে কারণে সংযুক্ত এলাকার বাইরের ওয়ার্ডগুলিতেও নোটিস পাঠানো হয়েছে।’’
পুরসভা সূত্রের খবর, মামলা চলা ৩৫ ও ৩৬ নম্বর ওয়ার্ডের প্রায় ২০০টি বাড়িতে নোটিস দিয়ে প্রোমোটারদের নির্দেশ দেওয়া হয়েছে যে, সংশ্লিষ্ট নির্মাণগুলি খালি করিয়ে সেগুলি ভেঙে দিতে হবে। ওই সব জায়গার মধ্যে রয়েছে কুলিপাড়া, নাওভাঙার মতো বিভিন্ন ছোট ছোট এলাকা। উল্লেখ্য, মূল সল্টলেকে ততটা সমস্যা না থাকলেও সংযুক্ত এলাকা বা রাজারহাট-গোপালপুর, রাজারহাট-নিউ টাউন অঞ্চলে বেআইনি নির্মাণের অজস্র অভিযোগ রয়েছে। সেই সব নির্মাণ বাতিল নকশা অনুযায়ী গড়ে উঠেছে বলেই বার বার অভিযোগ উঠেছে। ১৪ নম্বর ওয়ার্ডের তালবাগানে একটি বহুতল হেলেও পড়েছে। এমন নানা ঘটনা ঘিরে বেআইনি নির্মাণ ঠেকাতে পুর প্রতিনিধিদের আদৌ কতটা সদিচ্ছা রয়েছে, সেই প্রশ্নও তুলেছেন সাধারণ নাগরিকেরা।
পুরসভার আধিকারিকেরা জানাচ্ছেন, বেআইনি নির্মাণ ঠেকাতে তাঁরা এ বার বিজ্ঞপ্তি জারি করে জানাবেন যে, যে কোনও সম্পত্তি কেনার আগে সেটি পুরসভার অনুমোদিত কি না, তা যেন পুরসভায় এসে খোঁজ নেন সাধারণ নাগরিকেরা।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy