ভক্তি: পুজোয় অঞ্জলি দিচ্ছেন দৃষ্টিহীনেরা। শনিবার। নিজস্ব চিত্র
সরস্বতী প্রতিমা দেখতে কেমন?
কেউ জানেন না ওঁরা। তবে বীণাপাণি সরস্বতীকে মনে মনে কল্পনা করে নিয়েছেন। মনে মনে গাঁদা ফুলেরও একটা চেহারা ভেবে নিয়েছেন তাঁরা। চোখে দেখতে না পেলেও তাই পুজোর আয়োজনে কোনও অভাব রাখেন না কেউ। শনিবার প্রতি বছরের মতো এ বারেও এ ভাবেই বাগ্দেবীর আরাধনায় মাতলেন এ শহরের দৃষ্টিহীনেরা।
বিধাননগরের তিন নম্বর সেক্টরের ১৬ নম্বর ট্যাঙ্কের কাছে দৃষ্টিহীনদের নিয়ে একটি কর্মশালা চালায় এক স্বেচ্ছাসেবী সংগঠন। দু’দশকেরও বেশি সময় ধরে সেখানে দৃষ্টিহীনেরা বিভিন্ন ধরনের জিনিস হাতে তৈরি করেন। সেখানে প্রতি বছরই সরস্বতী পুজো হয়, যার আয়োজক ওই দৃষ্টিহীন মানুষেরাই। সংগঠনটির সম্পাদক স্বপন ঘোষাল জানান, সেখানে জন্ম থেকে দৃষ্টিহীনেরা যেমন রয়েছেন, তেমনই রয়েছেন জন্মের কয়েক বছর পরে দৃষ্টিশক্তি হারিয়ে ফেলা ছেলেমেয়েরাও। তিনি বলেন, ‘‘আমাদের সবটাই চলে কল্পনার উপরে। যাঁরা কিছু বছর দেখতে পেয়েছেন, তাঁরাই বাকিদের মধ্যে সরস্বতী সম্বন্ধে খানিকটা ধারণা তৈরি করেছেন।’’
তাঁদেরই এক জন, কাকলি বড়ুইকে শনিবার দেখা গেল ধারালো বঁটিতে পুজোর ফল কেটে চলেছেন। বললেন, ‘‘এটা অভ্যাসের ব্যাপার। অন্যদের সঙ্গে আমাদের তফাত এটুকুই যে, তাঁরা কী করছেন, কিসের জন্য করছেন, তা দেখতে পান। আমরা নিজেদের মতো করে সব বিষয়ে ধারণা করে নিই।’’ আর এক সদস্যা পলি হাজরার প্রশ্ন, ‘‘যাঁরা দেখতে পান, তাঁরাও কি সত্যিই জানেন সরস্বতীকে দেখতে কেমন? যিনি মূর্তি গড়েন, তিনিও তো কল্পনা থেকেই প্রতিমা গড়েন।’’ এ দিন পুজোর পরে সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানেও যোগ দিলেন ওই দৃষ্টিহীন মানুষেরা।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy