সাত সকালে প্রকাশ্য রাস্তায় এক মহিলার গলা থেকে হার ছিনতাই করে পালাল দুষ্কৃতীরা। আবারও ঘটনাস্থল সেই কেষ্টপুর। গত শুক্রবার রাতে সেখানেই ভিআইপি রোডের উপর এক দল দুষ্কৃতীর হাতে অপদস্থ হতে হয়েছিল এক মহিলা সাংবাদিককে। এ দিন তার মাত্র পাঁচশো মিটারের মধ্যেই প্রফুল্লকানন এলাকায় ছিনতাইকারীদের খপ্পরে পড়লেন অঞ্জনা গোয়েল নামে এক গৃহবধূ। দুষ্কৃতীদের রুখতে গিয়ে তিনি জখমও হয়েছেন। ঘটনায় প্রবল অস্বস্তিতে পড়েছে বিধাননগর কমিশনারেটের পুলিশ। প্রশ্ন উঠেছে ওই এলাকার আইনশৃঙ্খলা নিয়ন্ত্রণে পুলিশের ভূমিকা নিয়েও।
পুলিশ জানিয়েছে, বৃহস্পতিবার সকাল সওয়া ৯টা নাগাদ ওই ঘটনা ঘটে। কেষ্টপুরের প্রফুল্লকাননের বাসিন্দা দীনেশ গোয়েল ও তাঁর স্ত্রী অঞ্জনাদেবী স্থানীয় একটি ডায়াগনস্টিক সেন্টার থেকে রিকশা করে ফিরছিলেন। প্রফুল্লকাননে নিজেদের বাড়ির খানিকটা আগে দীনেশবাবু রিকশা থেকে নেমে যান। তারপরে অঞ্জনাদেবী বাড়ির কাছাকাছি পৌঁছে রিকশা ছেড়ে হেঁটে নিজেদের আবাসনে ফিরছিলেন। ইতিমধ্যেই দুই দুষ্কৃতী একটি মোটরবাইকে এসে অঞ্জনাদেবীর হারটি ছিনতাই করে। দুষ্কৃতীদের বাধা দিতে গিয়ে তিনি পড়ে যান। দুষ্কৃতীরা তাঁর শাড়ি ছিঁড়ে দিয়ে হার ছিনতাই করে পালায়।
অঞ্জনাদেবী বলেন, ‘‘আমি এখনও আতঙ্কে আছি। পুরো ব্যাপারটা যেন একটা ঘোরের মধ্যে হয়ে গেল। এমন ভাবে হারটা টানল যে গলার কাছে আঘাত লেগেছে। আমাদের পাড়ায় কখনও এমন হয়নি।’’ তাঁর স্বামী দীনেশবাবুর কথায়, ‘‘এখন তো মনে হচ্ছে পাড়ার মধ্যে থেকেও আমরা নিরাপদ নই।’’ গোটা ঘটনায় চাঞ্চল্য ছড়িয়েছে প্রফুল্লকানন এলাকায়। বাসিন্দারা জানান, কখনও তাঁদের এলাকায় এমন ঘটনা ঘটেনি।
ভিআইপি রোডের উপরের বিভিন্ন পানশালাকে কেন্দ্র করে কেষ্টপুর, বাগুইআটি, তেঘরিয়ার মতো জায়গায় দুষ্কৃতীদের উপদ্রবের অভিযোগ দীর্ঘ দিনের। এর পাশাপাশি অনেক জায়গায় চোরাগোপ্তা জুয়ার আড্ডাও বসে বলে অভিযোগ। মাস দু’য়েক আগে বাগুইআটি বাজারের ভিতরে জুয়ার আসরে হানা দিয়ে কয়েক জনকে গ্রেফতার করেছিল বাগুইআটি থানার পুলিশ। কিন্তু সেই রাতে জুয়ারিদের লোকজন বাগুইআটি থানার পুলিশকে মারধরও করে।
এ দিন সকালে ওই ভাবে আবাসিক এলাকায় ঢুকে ছিনতাইয়ের ঘটনা ঘটার পরে বাসিন্দাদের দাবি, এলাকায় পুলিশি প্রহরা অবিলম্বে বাড়ানো হোক। তাঁদের অভিযোগ, ভিআইপি রোডের ওপরে পুলিশের গাড়ি ঘোরে। কিন্তু আবাসিক এলাকায় পুলিশের গাড়ি খুব বেশি চোখে পড়ে না। তবে গোয়েন্দাপ্রধান কঙ্করপ্রসাদ বারুইয়ের পাল্টা দাবি, পুলিশের গাড়ি প্রয়োজন অনুযায়ী সব জায়গাতেই টহল দেয়। এ ভাবে সাত সকালে ছিনতাইয়ের ঘটনা নিয়ে কমিশনারেটের পুলিশ কার্যত মুখে কুলুপ এঁটেছে। কঙ্করবাবু শুধু বলেন,‘‘ ঘটনার তদন্ত হচ্ছে। গোয়েন্দা বিভাগের আধিকারিকেরা ওই মহিলার বাড়িতে গিয়ে তাঁর সঙ্গে কথা বলেন।’’
যদিও পুলিশ সূত্রে খবর, কমিশনারেট তৈরি হলেও পুলিশি পরিকাঠামোয় বিশেষ কোনও উন্নতি হয়নি বাগুইআটি, বিমানবন্দর কিংবা নিউটাউনের মতো থানাগুলিতে। থানার পরিকাঠামোর তুলনায় এলাকা অনেক বড় সব থানা এলাকাতেই। যে কারণে সব জায়গায় পুলিশি টহলদারি ঠিকমতো হয় না। তাই কমিশনারেটের তরফ থেকে বাগুইআটি, বিমানবন্দরের মতো থানাগুলিকে ভেঙে থানার সংখ্যা বাড়ানোর প্রস্তাব পাঠানো হয়েছে স্বরাষ্ট্র দফতরে।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy