গাড়ি থামতেই বন্ধ জানালার বাইরে উৎসুক যুবকদের ভিড়। এবং লাগাতার প্রশ্ন— ‘‘দাদা কী করাবেন? কম টাকায় করে দেব। খুচরোও রয়েছে।’’
গাড়ি থেকে নেমেও স্বস্তি নেই, বরং অস্বস্তিই বেশি। কারণ এক ঝাঁক যুবক তখন ঘিরে ধরে একের পর এক প্রস্তাব দিতে শুরু করেছেন— ‘‘লাইসেন্স নবীকরণ করাতে পাঁচশো টাকা এবং কমিশন বাবদ মাত্র তিনশো!’’ পাশের জন এগিয়ে আসেন এ বার, ‘‘আমি আরও কমে করে দেব।’’ তবে আশপাশে পুলিশ দেখলেই সঙ্গে সঙ্গে ধাঁ!
বেলতলা পিভিডির সামনে জাঁকিয়ে বসা এই দালাল-রাজ উপড়ে ফেলতেই এ বার ক্লোজড সার্কিট ক্যামেরার শরণাপন্ন রাজ্য পরিবণ দফতর। কারণ, পিভিডি-র প্রবেশপথে পুলিশ মোতায়েন করে বা সাধারণ মানুষের জন্য সচেতনতার প্রচার চালিয়েও তাদের দাপট পুরোপুরি নির্মূল করা যায়নি। অভিযোগ, হেল্প ডেস্ক থাকা সত্ত্বেও ওই দালালদের খপ্পরে পড়ে যাচ্ছেন সাধারণ মানুষদের একাংশ। সমস্যা সমাধানে তাই শুধু বেলতলা নয়,
এ বার শহরের তিনটি পাবলিক মোটর ভেহিক্ল ডিপার্টমেন্ট (পিভিডি)-কে সিসি ক্যামেরায় মুড়ে ফেলা হচ্ছে।
পরিবহণ দফতরের এক কর্তা জানান, সম্প্রতি সিদ্ধান্ত হয়েছে বেলতলা, কসবা এবং সল্টলেকের পিভিডিগুলির প্রবেশপথ থেকে শুরু করে হেল্প-ডেস্ক— সর্বত্রই সিসিটিভির মাধ্যমে নজরদারি চালানো হবে। মোট ৩৫টি সিসি ক্যামেরা বসানোর জন্য বরাদ্দ হয়েছে ১৭ লক্ষ টাকা। পাশাপাশি দফতরের সমস্ত কাজে স্বচ্ছতা বজায় রাখতেও সিসিটিভির প্রয়োজনীয়তা রয়েছে বলে জানান দফতরের এক কর্তা।
অপরাধীদের শনাক্ত করা বা ট্র্যাফিক আইন ভাঙলে জরিমানা করার ক্ষেত্রে সিসিটিভির সাহায্য নেয় পুলিশ। বহু ক্ষেত্রেই শুধু সিসি ক্যামেরার দৌলতে চুরির ঘটনার কিনারা করা গিয়েছে। তাই পরিবহণ কর্তাদেরও আশা, এই পথে দালাল-রাজের ১০০ শতাংশই ঠেকানো যাবে।
কী ভাবে চলবে নজরদারি?
পরিবহণ দফতর সূত্রের খবর, এখন মাঝেমধ্যেই কর্তারা বাইরে বেরিয়ে এসে নজরদারি চালান। কিন্তু দালাল বলে আলাদা করে কাউকে চিহ্নিত করা যায় না।
এ বার সিসিটিভির মাধ্যমে দালালদের শনাক্ত করে ফুটেজ তুলে দেওয়া হবে পুলিশের হাতে। এর পরে অভিযুক্তের বিরুদ্ধে আইনানুগ ব্যবস্থা নেওয়া হবে। পরিবহণ দফতরের এক কর্তা বলেন, ‘‘হেল্পডেস্ক করে দেওয়া আছে। সেখানে সরাসরি গ্রাহকেরা এসে সমস্ত কাজ করাতে পারেন। সাধারণ মানুষ সচেতন হলে দালাল-রাজ এমনিতেই বন্ধ হয়ে যাবে।’’
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy