সুনীল উপাধ্যায় অন্তর্ধান রহস্যের কিনারা করতে কলকাতার ভারতীয় জাদুঘরে হানা দিল সিআইডি। সুনীল ছিলেন জাদুঘরের মুখ্য সংরক্ষণ আধিকারিক। শুক্রবার দুপুরে সিআইডি-র ডেপুটি সুপার অনুরাধা মণ্ডলের নেতৃত্বে তিন জন গোয়েন্দার একটি দল জাদুঘরে যান। সুনীল উপাধ্যায় যে ঘরে বসে কাজ করতেন, প্রথমে গোয়েন্দারা সেখানে ঢোকেন। কিছুক্ষণ তল্লাশি চালিয়ে ওই ঘর থেকে কিছু নথি বাজেয়াপ্ত করেন তদন্তকারীরা। জাদুঘরের অন্য কয়েকটি বিভাগেও তল্লাশি চালান তাঁরা। কথা বলেন সুনীলের কয়েক জন সহকর্মীর সঙ্গেও।
গত ৩ জুলাই থেকে সুনীলবাবু নিখোঁজ। এ ব্যাপারে কলকাতা পুলিশ একটি অপহরণের মামলা রুজু করে চার মাসেরও বেশি তদন্ত করেছিল। কিন্তু তাতে কোনও ফল মেলেনি। সুনীলবাবুর আত্মীয়দের আবেদনের পরিপ্রেক্ষিতে গত ২৪ নভেম্বর সুপ্রিম কোর্ট সিআইডি-র স্পেশ্যাল আইজি দময়ন্তী সেনকে ওই ঘটনার তদন্তের নির্দেশ দেয়। ওই নির্দেশের পরে তদন্তে নেমে এই প্রথম নিখোঁজ কেন্দ্রীয় সরকারি আধিকারিকের কর্মস্থলে গেলেন গোয়েন্দারা। এর আগে কলকাতা পুলিশের তদন্তকারীদের সঙ্গে এ ব্যাপারে কথা বলে সিআইডি। তাঁদের কাছ থেকে কিছু নথিও নেয়। প্রসঙ্গত, বছর পঁয়ত্রিশের সুনীল উপাধ্যায় অবিবাহিত।
সিআইডি জেনেছে, কলকাতার ভারতীয় জাদুঘরের দুষ্প্রাপ্য সামগ্রী দেখভালের দায়িত্বে ছিলেন সুনীলবাবু। তিনি নিখোঁজ হওয়ার কিছু দিন আগে অভিযোগ উঠেছিল, জাদুঘরের বেশ কিছু দুষ্প্রাপ্য প্রত্নতাত্ত্বিক সামগ্রী বেআইনি ভাবে সরিয়ে নিয়ে বিদেশে নিলাম করে দেওয়া হচ্ছে। ওই অনিয়ম নিয়ে সুনীলবাবু মুখ খুলেছিলেন বলে তদন্তকারীরা জানতে পারেন। তবে ওই ঘটনার সঙ্গে সুনীলবাবুর নিখোঁজ হওয়ার কোনও যোগসূত্র আছে কি না, তা খতিয়ে দেখা হচ্ছে বলে গোয়েন্দারা জানিয়েছেন। তবে সুনীলবাবুর পরিবারের সদস্যেরা অন্য রাজ্যে থাকায় তাঁদের সঙ্গে এখনও কথা বলতে পারেনি সিআইডি। গোয়েন্দারা সুনীলবাবুর আত্মীয়দের সঙ্গে যোগাযোগ করার চেষ্টা করছেন।
কলকাতার চারু মার্কেট এলাকার একটি বাড়িতে ভাড়া থাকতেন সুনীল উপাধ্যায়। সিআইডি সূত্রের খবর, ৩ জুলাই ওই বাড়ি থেকে অফিসে যাবেন বলে বেরিয়েছিলেন তিনি। তার পর থেকেই আর খোঁজ নেই তাঁর। তবে ওই দিন সুনীলবাবু নিজের মোবাইল ফোনটি বাড়িতে রেখে গিয়েছিলেন। পরদিন সুনীলবাবুর এক আত্মীয় চারু মার্কেট থানায় নিখোঁজ ডায়েরি করেন। তারও ১৫ দিন পরে সুনীলবাবুর ভাইয়ের অভিযোগের ভিত্তিতে অপহরণের মামলা রুজু করে তদন্ত শুরু করে পুলিশ।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy