বিক্ষোভে পড়ুয়া ও অভিভাবকেরা। মঙ্গলবার, লি রোডে। নিজস্ব চিত্র
ডাক্তারি ও ইঞ্জিনিয়ারিং প্রবেশিকা পরীক্ষার একটি বেসরকারি প্রশিক্ষণ কেন্দ্রের সামনে বিক্ষোভের জেরে এলাকায় উত্তেজনা ছড়াল। মঙ্গলবার দুপুরে লি রোডের ওই কেন্দ্রের সামনে বিক্ষোভ দেখান পড়ুয়া এবং তাদের অভিভাবকেরা। পরিস্থিতি সামলাতে ঘটনাস্থলে যায় ভবানীপুর থানার পুলিশ।
সূত্রের খবর, সর্বভারতীয় ওই বেসরকারি প্রশিক্ষণ কেন্দ্রের লি রোডের শাখায় ছাত্রছাত্রী প্রায় ২৫০০ জন। সেখানে সপ্তম থেকে দ্বাদশ শ্রেণি পর্যন্ত ছাত্রছাত্রীদের বিভিন্ন বিষয়ে পড়ানো হয়। তবে ডাক্তারি-ইঞ্জিনিয়ারিং প্রবেশিকা পরীক্ষার প্রশিক্ষণের জন্যই সুনাম রয়েছে কেন্দ্রটির। প্রায় ৫০ জন শিক্ষক-শিক্ষিকা সপ্তাহে দু’দিন ছাত্রছাত্রীদের বিভিন্ন বিষয়ে ক্লাস নেন। অভিযোগ, গত দু’সপ্তাহ ধরে ক্লাস বন্ধ রয়েছে। অভিভাবকেরা জানিয়েছেন, ক্লাস কেন বন্ধ এবং কবে ফের ক্লাস শুরু হবে সংস্থার তরফে সে বিষয়ে কিছু জানানো হয়নি। শুধু জানানো হয়েছে, অনিবার্য কারণবশত ক্লাস বন্ধ আছে।
এক অভিভাবক জানান, শনিবার তাঁরা জানতে পারেন, শিক্ষকদের বেতন অনিয়মিত এবং পুরো টাকা পাচ্ছেন না। এর জেরেই শিক্ষকেরা ক্লাস বন্ধ রেখেছেন। পরে পড়ুয়াদের ক্লাস বন্ধের কথা হোয়াটসঅ্যাপে জানানো হয়। অভিভাবকদের দাবি, বাধ্য হয়েই মঙ্গলবার থেকে তাঁরা বিক্ষোভে নামেন।
হুগলির রিষড়ার বাসিন্দা বিশ্বনাথ দাস ছেলেকে নিয়ে এ দিন ওই বিক্ষোভে শামিল হয়েছিলেন। তাঁর ছেলে অভিজিৎ দ্বাদশ শ্রেণির ছাত্র। এই অবস্থায় ছেলেকে নতুন করে কোথায় ভর্তি করাবেন, ভেবে পাচ্ছেন না তিনি। তাঁর অভিযোগ, ‘‘প্রায় আড়াই লক্ষ টাকা দিয়ে ছেলেকে ভর্তি করিয়েছি। অনিয়মিত ক্লাসের ফলে ছেলের ভবিষ্যৎ এখন প্রায় অন্ধকারে।’’ একই অভিযোগ অপূর্ব চক্রবর্তী, স্বপন সরকার, পারমিতা মণ্ডল নামে তিন অভিভাবকেরও। কেন সংস্থার অভ্যন্তরীণ সমস্যায় ছাত্রছাত্রীরা ভুগবে, সেই প্রশ্ন তোলেন তাঁরা।
এ দিকে, ওই কেন্দ্রের শিক্ষকদের দাবি, বাধ্য হয়েই তাঁরা ক্লাস না নেওয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছেন। পদার্থবিদ্যার শিক্ষক সন্দীপ সান্যালের অভিযোগ, এক বছর ধরে তাঁদের বেতন অনিয়মিত। কোনও মাসেই তাঁরা পুরো বেতন পাচ্ছেন না। কর্তৃপক্ষকে বারবার জানিয়েও কাজ হয়নি। অন্য শিক্ষক কিশোর পাত্রের দাবি, ‘‘বেতন চাইলে চাকরি থেকে বার করার ভয় দেখাচ্ছেন কর্তৃপক্ষ।’’
সমস্যা নিয়ে মঙ্গলবার বিকেল পর্যন্ত সংস্থার প্রতিনিধিদের সঙ্গে অভিভাবকদের আলোচনা চলে। শেষে ওই কেন্দ্রের এক আধিকারিক আশ্বাস দিয়ে জানান, আজ, বুধবার দিল্লির প্রধান কার্যালয় থেকে সংস্থার কর্তারা কলকাতায় আসবেন। তাঁরা এলে দ্রুত সমস্যা মিটিয়ে ফের নিয়মিত ক্লাস শুরু হবে।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy