ফাইল চিত্র।
করোনার পরিবেশে কলকাতা হাইকোর্টে ভিডিয়ো-বৈঠকের মাধ্যমে মামলার শুনানি চলছে। তবে বুধবার থেকে আলিপুরের দায়রা ও ফৌজদারি আদালতে বিচার প্রক্রিয়ার কাজ পুরোদস্তুর চালু হওয়ার কথা। সোমবার, জেলা বিচারকের দফতরের তরফে একটি নির্দেশিকা জারি করে জানানো হয়েছে, এ বার থেকে প্রতিদিনই আইনজীবীদের আদালতে হাজির থাকতে হবে। অন্য দিকে, হাইকোর্টের আইনজীবীরা কবে সশরীরে বিচার প্রক্রিয়ায় অংশগ্রহণ করতে পারবেন, তা নিয়ে আগামিকাল, বুধবার তাঁদের সঙ্গে আলোচনা করা হতে পারে বলে জানান সেখানকার বার অ্যাসোসিয়েশনের সম্পাদক ধীরাজ ত্রিবেদী। যদিও এই সিদ্ধান্ত মঙ্গলবার থেকেই কার্যকর হওয়ার কথা ছিল। কিন্তু প্রাক্তন রাষ্ট্রপতি প্রণব মুখোপাধ্যায় প্রয়াত হওয়ায় হাইকোর্ট এবং নিম্ন আদালতে মঙ্গলবার ছুটি ঘোষণা করা হয়েছে। তাই এই নির্দেশিকা বুধবার থেকে কার্যকর হবে বলেই জেলা বিচারকের দফতর সূত্রের খবর।
আদালত সূত্রের খবর, নির্দেশিকায় জানানো হয়েছে, সেপ্টেম্বর মাসে ফৌজদারি ও দায়রা আদালতের সব এজলাসেই সোম থেকে শনিবার আইনজীবীদের সশরীরে অংশগ্রহণের মাধ্যমে মামলার শুনানি প্রক্রিয়া চালু হবে। চলতি মাসেই নির্ধারিত কয়েকটি দিনে গুরুত্বপূর্ণ কিছু মামলার বিচার প্রক্রিয়াও শুরু করা হবে বলে নির্দেশিকায় জানানো হয়েছে। আলিপুর আদালতের আইনজীবীদের একাংশের বক্তব্য, দিনের পর দিন আংশিক ও পূর্ণ সময় আদালত বন্ধ থাকায় প্রচুর মামলা জমে যাচ্ছে। ফলে সংক্রমণের পরিবেশে কিছুটা ঝুঁকি নিয়েই ফৌজদারি ও দায়রা আদালত পূর্ণাঙ্গ ব্যবস্থায় চালু করা হচ্ছে।
এর আগে আদালতের আইনজীবী, বিচারক ও বহু কর্মী করোনায় আক্রান্ত হয়েছেন। সম্প্রতি ফৌজদারি আদালতের সরকারি আইনজীবী ও কর্মীদেরও করোনা পরীক্ষা করা হয়। তাই সংক্রমণ প্রতিরোধের সব রকম বিধি-নিষেধ ও সতর্কতা বজায় রেখেই আদালত চালু রাখা হবে।
সূত্রের খবর, আপাতত সেপ্টেম্বর মাসে যে মামলাগুলি দায়ের হবে, সেগুলির শুনানি করা হবে। পাশাপাশি পুরনো মামলার তালিকা তৈরি হবে এবং সেগুলির শুনানির তারিখও ধার্য করা হবে। প্রাথমিক ভাবে সোম থেকে শনি আদালতের পুরো সময় কাজকর্ম শুরু করা হবে। পরে পরিস্থিতি অনুযায়ী বিচারকেরা পুরনো মামলার শুনানির বিষয়ে সিদ্ধান্ত নেবেন। প্রতিটি মামলার শুনানিতেই আইনজীবীদের আদালতে হাজির হতে হবে। পরিস্থিতি অনুযায়ী জেলা বিচারকের দফতর পরবর্তী নির্দেশিকা জারি করতে পারে। তার পরে পুরনো মামলার শুনানি ও বিচার প্রক্রিয়ার বিষয়টি স্পষ্ট হবে।
আলিপুর বার অ্যাসোসিয়েশনের তরফে আইনজীবী বৈশ্বানর চট্টোপাধ্যায় বলেন, ‘‘আপাতত আলিপুর আদালতের কার্যপ্রক্রিয়াকে স্বাভাবিক ছন্দে ফেরানোর চেষ্টা করা হয়েছে বলে মনে করা হচ্ছে। পরবর্তী পর্যায়ে করোনা সংক্রমণের পরিস্থিতি পর্যালোচনা করার পরে পুরনো মামলার শুনানি ও নিষ্পত্তি নিয়ে সিদ্ধান্ত নেওয়া হতে পারে।’’
যদিও করোনা আবহে ছুটির দিন বাদে কলকাতা হাইকোর্টে প্রতিদিনই ভিডিয়ো-বৈঠকের মাধ্যমে দুই পক্ষ রাজি থাকলে বিচারপতিরা মামলা শুনছেন। নিষ্পত্তিও করছেন। সংক্রমণের কারণে এখনও পর্যন্ত আইনজীবীরা সেখানে সশরীরে মামলায় অংশগ্রহণ করছেন না। দায়ের হওয়া মামলার তালিকা প্রস্তুত করা হচ্ছে। ওই তালিকা অনুযায়ী বিচারপতিরা ভিডিয়ো-বৈঠকের মাধ্যমে মামলার শুনানি করছেন।
কলকাতা হাইকোর্টের বার অ্যাসোসিয়েশনের সম্পাদক ধীরাজ ত্রিবেদী বলেন, ‘‘আলিপুর আদালতে সপ্তাহে রোজ আইনজীবীরা মামলায় অংশগ্রহণ করবেন শুনেছি। সেখানে স্বাভাবিক অবস্থা ফিরিয়ে আনার উদ্যোগ নেওয়া হচ্ছে। কিন্তু এখনও পর্যন্ত হাইকোর্টের আইনজীবীরা সশরীরে মামলায় অংশগ্রহণের বিষয়ে কোনও সিদ্ধান্ত নেননি। বুধবার তাঁদের সঙ্গে আলোচনা করা হতে পারে।’’
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy