সোনালির সঙ্গে নীলাময়।
আচমকা স্ত্রীর মৃত্যু কিছুতেই মেনে নিতে পারেননি তিনি। সব সময়ে বিয়ের ভিডিয়ো বা অ্যালবামের পাতা উল্টে দেখতেন। কোনও মতে সেই ধাক্কা সামলে বুধবার কলকাতা থেকে লালগড় ফিরে কাজে যোগ দিয়েছিলেন।
কিন্তু বৃহস্পতিবার সকালে ব্যারাকেই নিজের সার্ভিস রাইফেলের গুলিতে মৃত্যু হল সিআরপি-র কনস্টেবল নীলাময় পালের। প্রাথমিক তদন্তে পুলিশের অনুমান, এটি আত্মহত্যা।
মাত্র ২১ দিনের ব্যবধানে স্বামী ও স্ত্রীর মৃত্যুতে শোকের ছায়া নেমেছে পিকনিক গার্ডেন রোডে নীলাময়ের বাড়ি ও পাড়ায়। বুধবার রাতেও যিনি ফোন করেছিলেন বাড়িতে, এ দিন সকালে তাঁর এমন আচমকা অস্বাভাবিক মৃত্যু কোনও মতেই মানতে পারছেন না পরিজনেরা। ওই দম্পতির ৬ বছরের মেয়ে কিছুই বুঝে উঠতে পারছে না। বাবা কাজে ফিরে যাওয়ার পর থেকে সে-ও রয়েছে মামার বাড়িতে।
নীলাময়ের ছোট ভাই দেবনারায়ণ পাল জানান, বাইপাসের ধারে এক হাসপাতালে পিত্তথলিতে পাথরের অস্ত্রোপচার করতে গিয়ে ৫ ডিসেম্বর মৃত্যু হয় ওই জওয়ানের স্ত্রী সোনালি পাল সাহার। সেটা মানতে পারেননি নীলাময়। চিকিৎসায় গাফিলতিতে স্ত্রীর মৃত্যু হয়েছে বলে তিনি আত্মীয়দের কাছে আক্ষেপও করেছিলেন। দেবনারায়ণ বলেন, ‘‘বৌদির মৃত্যু নিয়ে দাদা খুবই ভেঙে পড়েছিলেন। নিজের ঘরে বসে পুরনো ছবি দেখতেন। মেয়েকে বোর্ডিংয়ে দিতে চাইলে আমরাই আপত্তি করি।’’
মাত্র আট বছর আগে বিয়ে হয়েছিল নীলাময় ও সোনালির। তাঁদের মেয়ে কৃত্তিকা প্রথম শ্রেণির ছাত্রী। বুধবার ভোরে বাবা লালগড়ে চলে যাওয়ার পরে বড় জেঠিমা উমাদেবী ও পরিবারের অন্যদের সঙ্গে চিড়িয়াখানা ঘুরতে গিয়েছিল সে। এ দিন উমাদেবী বলেন, ‘‘লালগড়ে ফিরেও নীলাময় ফোন করেছিল, কথাও হল। সকালে এমন খবর আসবে, ভাবতেই পারছি না।’’ লালগড় ব্লক সদরে সিআরপি-র ৫০ নম্বর ব্যাটালিয়নে কর্মরত ছিলেন নীলাময়। বুধবারই তিনি লালগড় হেড কোয়ার্টার্সে রিপোর্ট করেছিলেন। সম্প্রতি ছত্তীসগঢ়ের রায়পুরে তাঁর বদলির নির্দেশ জারি হয়েছিল।
সিআরপি সূত্রের খবর, এ দিন ব্যারাকে আচমকা নিজের ‘ইনসাস’ রাইফেল থুতনিতে ঠেকিয়ে গুলি চালিয়ে দেন নীলাময়। লালগড় প্রাথমিক স্বাস্থ্যকেন্দ্রে নিয়ে যাওয়া হলে চিকিৎসকেরা তাঁকে মৃত ঘোষণা করেন। তাঁর সহকর্মীরা জানিয়েছেন, মানসিক ভাবে খুব বিপর্যস্ত ছিলেন বলেও জানিয়েছিলেন ওই জওয়ান।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy