Advertisement
১৯ মে ২০২৪
Bus

অনুমতি মিললেও কত বাস চলবে, সংশয়

বাসমালিকরা বলছেন, ডিজ়েলের মূল্যবৃদ্ধি তো আছেই, এ ছাড়া মাত্র ৫০ শতাংশ যাত্রী নিয়ে চলাচলের অনুমতি মেলায় আয়ের তুলনায় ব্যয় বাড়বে।

 ঠাসাঠাসি: জরুরি পরিষেবায় যুক্ত কর্মীদের জন্য নির্দিষ্ট সরকারি বাসে ভিড়। সোমবার, ধর্মতলায়।

ঠাসাঠাসি: জরুরি পরিষেবায় যুক্ত কর্মীদের জন্য নির্দিষ্ট সরকারি বাসে ভিড়। সোমবার, ধর্মতলায়। ছবি: সুমন বল্লভ

নিজস্ব সংবাদদাতা
কলকাতা শেষ আপডেট: ২৯ জুন ২০২১ ০৬:৪৮
Share: Save:

আগামী পয়লা জুলাই থেকে সরকারি-বেসরকারি বাস ছাড়াও অটো এবং টোটো চলার অনুমতি দেওয়ার কথা সোমবার নবান্নে জানিয়েছেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। একই সঙ্গে স্পষ্ট করেছেন, লোকাল ট্রেন এবং মেট্রো পরিষেবা স্বাভাবিক করার ছাড়পত্র এখনই দেওয়া হচ্ছে না। যাত্রীদের করোনা-বিধি মেনে যাতায়াত ছাড়াও নিয়মিত বাস জীবাণুমুক্ত করার কথা বলেছেন মুখ্যমন্ত্রী। তবে তাঁর ঘোষণা সত্ত্বেও ডিজ়েলের চড়া দামের কারণে কত বাস রাস্তায় নামবে, সেই সংশয় অবশ্য থাকছেই।

বেসরকারি বাসমালিকদের বড় অংশ বলছেন, ডিজ়েলের মূল্যবৃদ্ধি তো আছেই। এ ছাড়া মাত্র ৫০ শতাংশ যাত্রী নিয়ে চলাচলের অনুমতি মেলায় আয়ের তুলনায় ব্যয় বাড়বে। বাড়তি ভাড়া নিয়ে যাত্রীদের সঙ্গে বাসকর্মীদের টানাপড়েনও বাড়বে বলে আশঙ্কা করছেন বেসরকারি বাসের মালিকদের একাংশ। ‘সিটি সাবার্বান বাস সার্ভিস’-এর সাধারণ সম্পাদক টিটু সাহা বলেন, ‘‘পুরনো ভাড়ায় বাস চালানো কার্যত অসম্ভব। আমরা যাত্রীদের সঙ্গে সংঘাতে গিয়ে অতিরিক্ত ভাড়া নেওয়ার বিরুদ্ধে। ফলে কী হবে বলা মুশকিল।’’ ‘বাস-মিনিবাস সার্ভিস ওনার্স অ্যাসোসিয়েশন’-এর সাধারণ সম্পাদক প্রদীপনারায়ণ বসু বলেন, ‘‘সরকারি সাহায্য ছাড়া কী ভাবে সমস্যা মিটবে জানি না।’’

একই রকম আশঙ্কা রয়েছে সরকারি বাস নিয়েও। সরকারি স্বাস্থ্যকর্মীদের যাতায়াতের জন্য এখনও দৈনিক গড়ে ১৮০টি বাস লাগছে। আদালতের কর্মীদের জন্য লাগছে আরও ১৫-২০টি বাস। ওই চাহিদা মিটিয়ে নতুন করে যাত্রীদের জন্য কত বাস চালানো যাবে, তা নিয়ে সন্দিহান রাজ্য পরিবহণ নিগমের আধিকারিকেরাই। তাঁদের বক্তব্য, ট্যাঙ্কার প্রতি ডিজ়েলের মূল্য
সাড়ে ১০ লক্ষ টাকা ছাড়িয়েছে। বহু ডিপোয় সপ্তাহে এক ট্যাঙ্কার ডিজ়েলও বরাদ্দ করা যাচ্ছে না বলে অভিযোগ। অথচ, দৈনিক ৪-৫ ট্যাঙ্কার তেল প্রয়োজন। ফলে যাত্রী-ভাড়ার আয় থেকে খরচ পুষিয়ে ক’দিন বাস চালানো যাবে, তা নিশ্চিত করে বলতে পারছেন না কেউই। শ’খানেক ইলেক্ট্রিক বাস দিয়ে পরিষেবার কতটা চাপ নেওয়া যাবে, তা নিয়েও চিন্তায় আধিকারিকেরা।

তবে অটো চলার ক্ষেত্রে ছাড়পত্র মেলায় স্বস্তিতে চালকেরা। যদিও ৫০ শতাংশ যাত্রী নিয়ে চলাচলের নির্দেশ থাকায় অটোর যাত্রীদের ঘাড়েও বাড়তি ভাড়ার বোঝা চাপতে পারে বলে আশঙ্কা। নিত্যযাত্রীদের বড় অংশের মতে, বাসের অভাবের সঙ্গে ট্রেন এবং মেট্রো চালু না হওয়ায় অটোর উপরে চাপ বাড়বে। যাতায়াতে খসবে বেশি টাকা। সোমবারই বিশেষ মেট্রোয় যাত্রী-সংখ্যা ৩৮ হাজার ছাপিয়ে গিয়েছে। আগামী দিনে যা আরও বাড়তে পারে। অনেকেই বলছেন, মেট্রো-নির্ভর রুটগুলিতে অটোয় যাতায়াতের কারণে যাত্রীদের পকেটে টান পড়বে।

এ দিন পেট্রল-ডিজ়েলের মূল্যবৃদ্ধির প্রতিবাদে বিক্ষোভ দেখায় ‘বাস-মিনিবাস সমন্বয় সমিতি’ এবং ‘ফেডারেশন অব ওয়েস্ট বেঙ্গল ট্রাক অপারেটর্স অ্যাসোসিয়েশন’। পরিবহণ শিল্পের সমস্যা নিয়ে প্রধানমন্ত্রীকে চিঠি দিয়েছেন ‘বাস-মিনিবাস সমন্বয় সমিতি’র সাধারণ সম্পাদক রাহুল চট্টোপাধ্যায়। ট্রাক সংগঠনের প্রতিনিধিরাও সজল ঘোষের নেতৃত্বে কসবায় পরিবহণ ভবনে স্মারকলিপি দেন।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

অন্য বিষয়গুলি:

Mamata Banerjee Bus Mini Bus
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE