প্রতীকী ছবি।
কোথাও সরু জলধারা তো, কোথাও নোংরা-ঘোলা জল। কোথাও আবার পুরসভার পানীয় জল থেকে পোকা বার হওয়ার অভিযোগ। গরম শুরু হতেই দক্ষিণ কলকাতার বিস্তীর্ণ অংশে ‘জল-যন্ত্রণা’র ছবি। আর প্রতিদিন এই নিয়ে অভিযোগ শুনতে শুনতে রীতিমতো নাজেহাল অবস্থা কলকাতা পুরসভার আধিকারিকদের! তাঁদের দাবি, অভিযোগ পেলেই সমস্যা সমাধানের চেষ্টা করা হচ্ছে। অথচ জল নিয়ে কোনও অভিযোগের কথা মানতেই চাননি পুরসভার জল বিভাগের এক কর্তা!
মার্চের মাঝামাঝি থেকেই শহরে চড়ছে তাপমাত্রার পারদ। এপ্রিলের গোড়ায় দিনের তাপমাত্রা চল্লিশ ছুঁই-ছুঁই। গরমে রীতিমতো নাজেহাল অবস্থা আমজনতার। দিন দুয়েক আগে দু’-এক পশলা বৃষ্টি হলেও তাপমাত্রার সে ভাবে পরিবর্তন হয়নি। আর ‘গোদের ওপর বিষফোড়া’র মতো আবার গরম বাড়তেই সমানুপাতিক হারে দক্ষিণে বেড়েছে জল-যন্ত্রণা। বেহালা, বাঘা যতীন, যাদবপুর, বেলেঘাটা, টালিগঞ্জ, ই এম বাইপাসের ধারের বিস্তীর্ণ এলাকা জুড়ে পানীয় জলের সঙ্কট দেখা দিচ্ছে কিছু দিন ধরেই। স্থানীয়দের অভিযোগ, বার বার পুরসভায় জানিয়েও অবস্থার পরিবর্তন হচ্ছে না। বাঘা যতীনে আবার পুরসভার পানীয় জল থেকে পোকা বার হওয়ার অভিযোগ করছেন এলাকার মহিলারা। পাশাপাশি কলকাতা পুরসভার ১১১ নম্বর ওয়ার্ডের রবীন্দ্রপল্লি এলাকাতেও পানীয় জল নিয়ে একাধিক অভিযোগ রয়েছে।
বেহালার একটি অংশের বাসিন্দাদের অভিযোগ, ‘‘কল খুললেই পাইপ দিয়ে ঘোলা জল বেরোচ্ছে। মাঝেমধ্যেই পুরসভার জলের কল থেকে এ রকম জল বেরোয়।’’ বাইপাসের আনন্দপুর এলাকার এক বাসিন্দা বলেন, ‘‘সকাল-বিকেল পুরসভার জল আসে ঠিকই। তবে এত সরু হয়ে জল পড়ে যে তা নিতে দীর্ঘ লাইন পড়ে যায়।’’ সকালে জল এলেও বিকেলে জল না আসার অভিযোগ করছেন আবার কেউ কেউ। বেহালার ১৩২ নম্বর ওয়ার্ডের অভয় বিদ্যালঙ্কার রোডের বাসিন্দা আর্য ঘোষ বলেন, ‘‘মাঝেমধ্যেই পুরসভার কল থেকে ঘোলা ও নোংরা জল বেরোয়। যা পানের অযোগ্য। এ দিকে অনেকেই পুরসভার এই জলের উপরে নির্ভরশীল।’’ তাঁর দাবি, পুরসভায় অভিযোগ করায় অবস্থার সামান্য পরিবর্তন হয়েছে। ঠাকুরপুকুর পঞ্চানতলার সোমনাথ নন্দী বলেন, ‘‘এই এলাকায় জলের সমস্যা রোজকার ঘটনা। সামনে ভোট তাই এখন সমস্যা মেটাতে তৎপর পুরসভা। ভোটের পরে কী হবে তাই ভাবছি!’’ জল-যন্ত্রণার একই অভিযোগ টালিগঞ্জের বিস্তীর্ণ এলাকায়। বিদায়ী কাউন্সিলরেরাও জানাচ্ছেন, গরম পড়তেই পানীয় জল নিয়ে অভিযোগ শুনতে শুনতে তাঁরা রীতিমতো নাজেহাল।
পুরসভা সূত্রের খবর, গরমের সময়ে প্রতি বছর শহরে জলের চাহিদা বেড়ে যায়। কিন্তু গরমে গঙ্গার জলস্তর নেমে যাওয়ায় অনেক সময়েই জল তুলতে সমস্যা দেখা দেয়। চাহিদা মেটাতে পুরসভা বিভিন্ন জায়গায় পানীয় জলের গাড়ি পাঠায়। পাশাপাশি পুরসভার জলাধারগুলিতেও অতিরিক্ত জল মজুত করা থাকে। মজুত পরিস্রুত পানীয় জল কমে যাওয়ায় সাময়িক সমস্যা দেখা দেয়।
যদিও জলকষ্টের অভিযোগ মানতে চাননি পুরসভার জল বিভাগের আধিকারিকেরা। সংশ্লিষ্ট বিভাগের এক কর্তার দাবি, ‘‘জল নিয়ে কোনও অভিযোগ আমাদের কাছে নেই। সব কিছুই স্বাভাবিক নিয়মে চলছে।’’
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy