প্রতীকী ছবি
ব্যাঙ্ক জালিয়াতির অপরাধে দু’জনকে সাত বছরের কারাদণ্ড দিল বারাসত আদালত। বিচারক ভবানীশঙ্কর শর্মা বৃহস্পতিবার বাপ্পাদিত্য বিশ্বাস ও সমীরণ সাহা নামে ওই দু’জনকে এর পাশাপাশি জরিমানাও করেন। পুলিশ জানায়, অতিমারিতে এক বেসরকারি ব্যাঙ্কের চেন্নাইবাসী গ্রাহক, জয়শ্রী শেখরের অ্যাকাউন্ট থেকে প্রায় ৩ কোটি ২১ লক্ষ টাকা উধাও হয়ে যায়। সেই ঘটনায় ব্যাঙ্কের বাগুইআটি শাখা এফআইআর দায়ের করে। বাপ্পাদিত্য সেখানকারই কর্মী ছিল।
মামলার সরকারি কৌঁসুলি বিভাস চট্টোপাধ্যায় জানান, বাপ্পাদিত্য ব্যাঙ্কের কাছে থাকা ওই মহিলার মোবাইল নম্বর এবং ইমেল আইডি বদলে দিয়েছিল। তার পরে তাঁর নামে একটি ডেবিট কার্ড তুলে নেয় সে। সেই কার্ডের তথ্য ব্যবহার করেই তিনটি ভুয়ো অ্যাকাউন্টে টাকা সরানো হয়েছিল। বাপ্পাদিত্যের সঙ্গী সমীরণ ওই অ্যাকাউন্টগুলির মালিক।
তদন্তকারীরা জানান, আদালতে অপরাধ প্রমাণ করতে সরকারি কৌঁসুলি গাণিতিক পদ্ধতি (লুন অ্যালগরিদম) ব্যবহার করেন। তামিল মহিলার সাক্ষ্যের ক্ষেত্রে ব্যবহার করা হয়েছে গুগলের অনুবাদ প্রযুক্তি।
বাপ্পাদিত্যের আইনজীবী সৌভিক বসুঠাকুর অবশ্য পুলিশি তদন্ত নিয়েই আদালতে প্রশ্ন তুলেছিলেন। তাঁর বক্তব্য, ব্যাঙ্কের কম্পিউটার ব্যবহার করার অধিকার যে বাপ্পাদিত্যের ছিল না, তা ব্যাঙ্ক ম্যানেজারের সাক্ষ্য থেকেই স্পষ্ট। যারা গ্রাহকের তথ্য বদলেছে, তাদের অভিযুক্ত করেনি পুলিশ। হোয়াটসঅ্যাপ চ্যাট-এর তথ্য সংশ্লিষ্ট সংস্থার কাছ থেকে তদন্তকারী অফিসার আনেননি। এমনকি, নিয়ম মেনে তিনি ব্যাঙ্কের সিসি ক্যামেরার হার্ড ডিস্কও বাজেয়াপ্ত করেননি। তিনি বলেন, ‘‘বাপ্পাদিত্যই যে অপরাধ করেছেন, তা বহু ক্ষেত্রেই তদন্তকারীরা প্রমাণ করতে পারেননি। এটা আমি আদালতেও বলেছিলাম।’’
সৌভিকের বক্তব্য, পুলিশের তরফে লুন অ্যালগরিদমের ব্যবহার করা হয়েছে। কিন্তু তদন্তকারীরা কি ওই প্রযুক্তির ব্যাপারে বিশেষজ্ঞ? তেমন কোনও শংসাপত্র কি তাঁদের আছে? বিশেষজ্ঞের মতামত ছাড়া কী ভাবে এই প্রযুক্তির ব্যাখ্যা গ্রহণযোগ্য হয়, সেই প্রশ্নও তুলেছেন তিনি।
জয়শ্রী সাক্ষ্য দিতে এসে জানান, তিনি তামিল ছাড়া অন্য ভাষা বোঝেন না। সৌভিকের প্রশ্ন, ব্যাঙ্ক ম্যানেজার ও তদন্তকারী অফিসার কোনও দোভাষী ছাড়া কী ভাবে জয়শ্রীর সঙ্গে কথা বললেন এবং বক্তব্য বুঝলেন?
নিয়ম অনুযায়ী, বাপ্পাদিত্য এই রায়ের বিরুদ্ধে কলকাতা হাই কোর্টে মামলা করতে পারে। তবে সৌভিক জানিয়েছেন, মক্কেলের সঙ্গে শুক্রবার দুপুর পর্যন্ত এ বিষয়ে কথা হয়নি।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy