প্রতীকী ছবি।
ফের ভুয়ো সিবিআই অফিসার! তবে এর কোনও নীলবাতি গাড়ি ছিল না। বরং এই চাকরিতে গোপনে থাকতে হয় বলেই সকলকে জানিয়ে ছিল সে। আর সেই সূত্রেই এক আইনজীবী দম্পতিকে সিবিআইয়ে চাকরি পাইয়ে দেওয়ার নামে প্রায় ৪০ লক্ষ টাকা প্রতারণার অভিযোগে ওই ভুয়ো অফিসারকে গ্রেফতার করেছে পুলিশ।
রবিবার রাতে ঘটনাটি ঘটেছে বরাহনগরে। পুলিশ জানায়, ওই যুবকের নাম কৃশানু মণ্ডল। সে বাগুইআটির রঘুনাথপুর পাম্প হাউস এলাকায় একটি আবাসনে থাকে। ২০১৬ সালে ফ্ল্যাটের রেজিস্ট্রি করতে শিয়ালদহ আদালতে গিয়ে বরাহনগরের বাসিন্দা, পেশায় আইনজীবী বিশ্বজিৎ চট্টোপাধ্যায়ের সঙ্গে পরিচয় হয়েছিল তার। সেখান থেকেই ঘনিষ্ঠতা। বিশ্বজিতের স্ত্রী ইন্দিরা বলেন, “কৃশানুকে নিজের ভাইয়ের মতো বিশ্বাস করতাম। ও জানিয়েছিল, সিবিআইয়ে চাকরি করতে করতে অন্য কাজও করা যায়। তাই ও একটি বেসরকারি হাসপাতালে কাজ করত। আমার স্বামীকে মাঝেমধ্যে বিভিন্ন জায়গায় নিয়েও যেত।” ওই দম্পতি জানাচ্ছেন, ধীরে ধীরে তাঁদের বাড়িতেও আসতে থাকে ওই যুবক। এমনকি সিবিআইয়ের পরিচয়পত্রও দেখিয়েছিল সে।
ইন্দিরার দাবি, এক দিন কৃশানু তাঁকে জানিয়েছিল, সিবিআইয়ে চাকরি পেতে প্রায় ৩ লক্ষ টাকা দিতে হয়েছে তাকে। সেখানে ৪ লক্ষ টাকা দিলে দম্পতির সিবিআইয়ে সাব-ইনস্পেক্টর পদে চাকরি হয়ে যাবে। সেই মতো ২০১৬ সালে প্রথমে ওই যুবককে ৪ লক্ষ টাকা ওই যুবককে দেন দম্পতি। অভিযোগ, এর পরে বছর কেটে গেলেও চাকরি হয়নি। সেই সময়ে কৃশানু দাবি করেছিল, নিয়োগ নিয়ে সুপ্রিম কোর্টে মামলা চলায় নিয়োগে দেরি হবে। কিন্তু জট ছাড়াতে আরও টাকা লাগবে। সোমবার ইন্দিরা বলেন, “এর পরে চলতি বছর পর্যন্ত ধাপে ধাপে ৪০ লক্ষ টাকা ওকে দিয়েছি। গয়না বেচে টাকা জোগাড় করেছি। শেষের দিকে বিভিন্ন ভাবে আমাদের ভয় দেখাত কৃশানু।” গত পাঁচ মাস ধরে টাকা দেওয়া বন্ধ করে দিয়েছিলেন ওই দম্পতি। তার পরে ওই যুবকও বেশি যোগাযোগ রাখত না। এমনকি টাকা ফেরত দেওয়ার নামেও মিথ্যা বলতে শুরু করে বলে অভিযোগ।
গত রবিবার সন্ধ্যায় কৃশানু ইন্দিরাদের বাড়িতে যায়। সে চলে যাওয়ার পরেই পুলিশে খবর দেন ওই দম্পতি। এ দিকে, বিশ্বজিৎদের বাড়িতে কৃশানু এসেছে সেই খবর পেয়ে সেখানে হাজির হন স্থানীয় কয়েক জন বাসিন্দা। জানা যায়, তাঁদের থেকেও টাকা হাতিয়েছে কৃশানু। এর পরে বরাহনগর থানার পুলিশ ওই এলাকা থেকেই গ্রেফতার করে কৃশানুকে। তার থেকে ভুয়ো পরিচয়পত্র ও নিয়োগপত্র উদ্ধার হয়েছে। ব্যারাকপুর সিটি পুলিশের এক কর্তা বলেন, ‘‘এই ঘটনার পিছনে আরও কেউ জড়িত কি না, তা খতিয়ে দেখা হচ্ছে।’’
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy