ঘটনাস্থলে উপাচার্য সুগত মারজিত। সোমবার।—নিজস্ব চিত্র।
বালিগঞ্জ সায়েন্স কলেজের দোতলায় প্রাণীবিদ্যার পরীক্ষাগারে আগুন লেগে দু’টি পরীক্ষাগার ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। ঘটনাটি ঘটেছে সোমবার সন্ধ্যায়। আশঙ্কা করা হচ্ছে, সংরক্ষণ করা বেশ কিছু বিলুপ্ত প্রাণীর চামড়াও পুড়ে গিয়েছে।
দমকল জানিয়েছে, আগুন লাগে বিকেল সাড়ে পাঁচটা নাগাদ। খবর পেয়ে দমকলের ১৪টি ইঞ্জিন ঘটনাস্থলে পৌঁছয়। প্রায় দু’ঘণ্টা পরে আগুন নিয়ন্ত্রণে আনেন দমকলের কর্মীরা। কলেজের ছাত্র-শিক্ষকদের দাবি, পুড়ে গিয়েছে ওই পরীক্ষাগার ও পাশে থাকা কলকাতা বিশ্ববিদ্যালয়ের বহু পুরনো সংগ্রহশালার অনেকটাই। আশঙ্কা করা হচ্ছে, দোতলার বারান্দায় রাখা অ্যান্টার্কটিকার লেপার্ড সিল, দক্ষিণ এশিয়ার নদীর ডলফিন, দক্ষিণ ও মধ্য আমেরিকার মার্মোসেট, প্যাঙ্গোলিন, জায়ান্ট কাঠবিড়ালি-সহ বহু দুষ্প্রাপ্য প্রাণীর সংরক্ষণ করা দেহ নষ্ট হয়ে গিয়েছে। ওই সংগ্রশালাতেই রাখা আছে তিমির মতো বহু প্রাণীর মাথার খুলি এবং ডলফিন, ভালুক, সিংহের ভ্রূণ। খবর পেয়ে এ দিন সন্ধ্যায় ঘটনাস্থলে যান কলকাতা বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য সুগত মারজিত। তিনি বলেন, ‘‘মঙ্গলবার ওই ক্যাম্পাসে প্রশাসনিক কাজ হলেও বন্ধ থাকবে পঠনপাঠন।’’
প্রাথমিক ভাবে দমকলের অনুমান, দোতলার প্রাণীবিদ্যা বিভাগের ওই পরীক্ষাগারে শর্ট সার্কিট হওয়াতেই কোনও ভাবে আগুন লেগে গিয়েছে। ওই পরীক্ষাগারে রাসায়নিক থাকায় প্রচুর কালো ধোঁয়া বেরোয়। তাতে কাজ করতে অসুবিধা হয় দমকলকর্মীদের। দমকলের মতে, ওই রাসায়নিকের কারণেই আগুন দ্রুত ছড়িয়ে পড়েছিল। ওই ঘটনায় দু’জন প়ড়ুয়া অসুস্থ হয়ে পড়েন। আগুন লাগার খবর পেয়ে এই কলেজের বিভিন্ন তলায় যে পড়ুয়া, শিক্ষক, শিক্ষাকর্মী, গবেষকেরা ছিলেন, তাঁদের মধ্যে ১৩ জন কলেজের ছাদে উঠে যান। পরে তাঁদের দমকলকর্মীরা নামিয়ে আনেন।
ঘটনাস্থলে পৌঁছে দেখা যায়, সায়েন্স কলেজ শুধু নয়, কলেজ লাগোয়া বালিগঞ্জ সার্কুলার রোডও ধোঁয়ায় ভরে গিয়েছে। সেখানে হাঁটার সময়ে নিঃশ্বাস নিতে কষ্ট হচ্ছে। রাস্তার চলাফেরা করা সাধারণ মানুষ ধোঁয়ার প্রকোপে কাশতে শুরু করে দিয়েছেন। দমকলের কর্মীরা আগুন নেভানোর আপ্রাণ চেষ্টা করছেন। প্রাণীবিদ্যার ছাত্রদের কথায়, আগুন লাগার সময়ে তাঁরা দোতলার বারান্দায় বসেছিলেন। হঠাৎই পোড়া গন্ধ নাকে আসে। দেখেন, দরজা ও জানালার ফাঁক দিয়ে গলগল করে কালো ধোঁয়া বেরোচ্ছে, সঙ্গে আগুন। বোঝা গেল ওই পরীক্ষাগারে আগুন লেগে গিয়েছে। ঘটনার সময়ে যাঁরা ওই পরীক্ষাগারে ছিলেন, তাঁরা তাড়াতাড়ি বেরিয়ে আসেন সেখান থেকে। আতঙ্কে ছোটাছুটি শুরু করেন পড়ুয়ারা। কয়েক জন পড়ুয়াকে বাইরে বেরিয়ে আসতে সাহায্য করেন বিভাগের অধ্যাপকেরা।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy