শহরের আর এক প্রান্তে তখনও লেলিহান শিখা নেভাতে হিমশিম খাচ্ছে দমকল। তারই মধ্যে আবার কালো ধোঁয়া। দেখেই রাস্তায় বেরিয়ে পড়েছিলেন সকলে। আতঙ্কে চিৎকার করছিলেন তাঁরা। খবর পেয়েই অবশ্য চলে আসে দমকল। সঙ্গে বিপর্যয় মোকাবিলা বাহিনী। যার ফলে বড়সড় বিপদ এড়ানো গিয়েছে।
সোমবার বিকেল তিনটে নাগাদ ভবানীপুরে যদুবাবুর বাজারের পিছনে একটি পাঁচতলা বাড়িতে আগুন লাগে। দমকল সূত্রে জানা গিয়েছে, সেখানে মিষ্টি তৈরি হয়। দমকলের দু’টি ইঞ্জিন ঘণ্টাখানেকের মধ্যেই আগুন নিয়ন্ত্রণে আনলেও প্রবল আতঙ্কিত হয়ে পড়েন বাসিন্দারা। আগের দিনই বাগড়ি মার্কেটের অগ্নিকাণ্ডে পুড়ে গিয়েছে অসংখ্য দোকান। ভবানীপুরে ওই বাড়িটির পাশেই যদুবাবুর বাজার। আগুনের খবর পেয়ে ওই বাজারের প্রায় প্রত্যেক দোকানিই রাস্তায় বেরিয়ে আসেন।
স্থানীয় বাসিন্দারা জানান, পাঁচতলা ওই বাড়িটি দক্ষিণ কলকাতার একটি মিষ্টির দোকানের মালিকের। পাঁচতলায় মিষ্টি তৈরির কারখানা। এ দিন জনা আটেক কর্মচারী সেখানে মিষ্টি তৈরি করছিলেন। তখনই আগুন লাগে। কোনও রকমে তাঁরা দৌড়ে নীচে নেমে আসেন। দমকল জানিয়েছে, ঘন জনবসতিপূর্ণ এলাকা হওয়া সত্ত্বেও প্রতিদিন প্রায় ২০ থেকে ২২টি রান্নার গ্যাস সিলিন্ডার ওই কারখানায় ব্যবহার করা হয়।
স্থানীয় বাসিন্দারা জানান, দীর্ঘদিন ধরেই তাঁরা ওই মিষ্টি কারখানার বিরুদ্ধে বিভিন্ন জায়গায় অভিযোগ জানিয়েছেন। তাঁদের অভিযোগ, ওই কারখানার জেরে নর্দমা বন্ধ হয়ে যাচ্ছে। তা ছাড়া, ঘিঞ্জি এলাকায় একাধিক সিলিন্ডার নিয়ে কাজ করার জেরে বড় বিপদের আশঙ্কাও রয়েছে। স্থানীয় এক বাসিন্দা বলেন, ‘‘আরও বড় বিপদ ঘটতে পারত। এত সর্বনাশ হচ্ছে। কিন্তু কেউ কিছু শিখছে না। এমন ঘিঞ্জি এলাকায় কেন দিনে কুড়িটা সিলিন্ডার নিয়ে কাজ হবে?’’
সিলিন্ডার না কি শর্ট সার্কিট— এ দিন কী থেকে আগুন লেগেছিল, তা নিয়ে তদন্তে নেমেছে দমকল।
কিন্তু ঘন জনবসতির মধ্যে কি মিষ্টির কারখানা করা আদৌ বৈধ? এ প্রশ্ন উঠতেই দমকল ও পুরসভার মধ্যে দড়ি টানাটানি শুরু হয়ে গিয়েছে। দমকলের তরফে জানানো হয়েছে, ওই কারখানার লাইসেন্স রয়েছে কি না, তা খতিয়ে দেখার দায়িত্ব পুরসভার। পুরসভার তরফে জানানো হয়েছে, সব দিক খতিয়ে দেখে দমকলের তরফেও অনুমতি দেওয়া হয়। তাই দমকল দায় এড়াতে পারে না।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy