অর্পিতা সিংহ
ব্যোমকেশ বা ফেলুদা নন, বরং নীরেন্দ্রনাথ চক্রবর্তীর ভাদুড়ীমশাই ও সৈয়দ মুস্তাফা সিরাজের কর্নেল তাঁর প্রিয় গোয়েন্দা। ‘ওঁদের মধ্যে আমি সাধারণ জীবনের একটা ছাপ পাই। আর শিল্পীর কাজটাও তো অনেকটা গোয়েন্দার মতো। যা চোখের সামনে ধরা দিচ্ছে না, তাকে খুঁজে মূর্ত করে তুলতে হবে,’’ বলছিলেন চিত্রশিল্পী অর্পিতা সিংহ। প্রায় তিরিশ বছর আগে শহরের এক শিল্প কর্মশালায় যোগ দিতে এসেছিলেন, তার পরে এ বার। ৫ ফেব্রুয়ারি থেকে এ শহরে যে সিমা অ্যাওয়ার্ড শো শুরু হবে, তার অন্যতম জুরি হিসেবেই এ বার জন্মভূমিতে আসা তাঁর।
বাবার মৃত্যুর পরে দশ বছর বয়সে মায়ের সঙ্গে কলকাতা ছেড়েছিলেন, কিন্তু শৈশবস্মৃতি অটুট। ‘‘বাচ্চা বয়সে কান্নাকাটি করছিলাম, বাড়িতে যিনি কাজ করতেন, তিনি রান্না করতে করতেই হয়তো একটা পুতুল বানিয়ে দিলেন। পরে বুঝেছি, এটাই লোকশিল্প।’’
লোকশিল্প, গ্রাফিক্স, ইনস্টলেশন, ছাপাই ছবি ইত্যাদি— বিভিন্ন মাধ্যম থেকে জুরিরা এ বার বেছে নিয়েছেন ১৯৬টি সৃষ্টি। ৫ ফেব্রুয়ারি থেকে সিমা আর্ট গ্যালারি, স্টুডিও ২১, অ্যাকাডেমি অব ফাইন আর্টস, জেম সিনেমা, ৩ ডোভার পার্কে প্রায় এক মাস দেখা যাবে কাজগুলি। ‘‘নতুনদের ক্রাফ্টসম্যানশিপ চমৎকার, প্রথাগত অয়েল ও চারকোল ছেড়ে অনেকেই বেরিয়ে আসছেন, নতুন মাধ্যমে নতুন কিছু বলার চেষ্টা করছেন,’’ বলছিলেন তিনি।
এই নতুনত্বের কথা বারবার বলছেন অর্পিতা। একদা ছবি আঁকা ছাড়াও হ্যান্ডলুম বোর্ডে ডিজাইনার ছিলেন। ‘‘এখন শাড়ি বোনায়, কী ভাবে সেটি ড্রেপ করতে হবে, তা নিয়েও পরীক্ষানিরীক্ষা হয়। আগে তো শুধু আঁচল, বুটি আর জমিতেই ডিজাইনিং চলত।’’ হাল আমলে মঞ্জুষা, তন্তুজের ঘুরে দাঁড়ানোর কথাও মনে করিয়া দেওয়া গেল তাঁকে। ‘‘এই ট্রেন্ড সারা ভারতে। লোকশিল্পের প্রতি আগ্রহ সর্বত্র বাড়ছে,’’ বললেন শিল্পী।
লোকজীবন এবং আধুনিকতার হরেক বুননে-রঙে-রেখাতেই এ শহরকে শিল্পের জানান দিতে চলেছে সিমার দ্বিবার্ষিক অ্যাওয়ার্ড শো। শুরু হচ্ছে আগামী রবিবার থেকেই।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy