প্রতীকী ছবি।
ডেঙ্গিতে রাজ্যে মৃত্যুর হার একই জায়গায়। সাম্প্রতিক সময়ে এমনই পর্যবেক্ষণ স্বাস্থ্যকর্তাদের। তাঁদেরই প্রশ্ন, তবে কি স্বাস্থ্য ভবনের জারি করা প্রোটোকল মেনে ডেঙ্গি-ম্যালেরিয়ার চিকিৎসায় ঘাটতি থাকছে? সেই সংশয় থেকেই সরকারি স্তরে ডেঙ্গি-ম্যালেরিয়ার চিকিৎসায় যুক্ত চিকিৎসক, নার্স ও হাসপাতালের কর্তাদের নিয়ে বৃহস্পতিবার অনলাইনে বৈঠক করল স্বাস্থ্য দফতর।
ডেঙ্গি প্রতিরোধ কর্মসূচির বিষয়ে বিভিন্ন পুরসভার কর্তাদের সঙ্গে এ দিন বৈঠক করেন পুর ও নগরোন্নয়ন মন্ত্রী ফিরহাদ হাকিম। বৈঠকে তাঁর নির্দেশ, ওয়ার্ডের সাফাইকর্মীদের নিয়ে সপ্তাহে অন্তত এক দিন এলাকা পরিদর্শন করবেন স্থানীয় কাউন্সিলর। ডেঙ্গি নিয়ন্ত্রণ কর্মসূচিও জোরদার করতে হবে। সমস্ত জলাশয় এবং এলাকার সর্বত্র নজরদারি বাড়াতে বলা হয়। যা দেখে চিকিৎসকদের মত, “ডেঙ্গি মোকাবিলায় কোথাও পরিকাঠামোগত ফাঁক থাকছে। তা মেটাতে চাইছে উভয় দফতরই। না হলে নভেম্বর শেষ হলেও মশাবাহিত রোগ মেটার লক্ষণ দেখা যাবে না।” এদিন ডেঙ্গি নিয়ন্ত্রণে কলকাতা পুরসভার বিরুদ্ধে ব্যর্থতার অভিযোগ তুলে পুর ভবনের কাছে মেয়রের পদত্যাগের দাবিতে মশারি টাঙিয়ে বিক্ষোভ দেখায় কংগ্রেস।
অন্য দিকে, স্বাস্থ্য দফতরের বৈঠকে প্রোটোকল ধরে পুনরায় প্রশিক্ষণ দেন সংক্রামক রোগের চিকিৎসক যোগীরাজ রায় ও সৌমেন্দ্রনাথ হালদার, মেডিসিনের চিকিৎসক জ্যোতির্ময় পাল এবং শিশুরোগ চিকিৎসক মিহির সরকার। জানা যাচ্ছে, প্রশিক্ষণের আগে রাজ্যের স্বাস্থ্য অধিকর্তা ও স্বাস্থ্য-শিক্ষা অধিকর্তার সঙ্গে বৈঠক করেন তাঁরা। পরে অনলাইনে দু’ঘণ্টার প্রশিক্ষণ হয়। তীব্র জ্বরে আক্রান্ত রোগীকে কী চিকিৎসা দিতে হবে, ডেঙ্গি ধরা পড়ার পরে কী ধরনের ওষুধ দিতে হবে, তা কতটা মজুত থাকছে, কী নিয়মে রোগীকে স্যালাইন দিতে হবে, আচমকা শ্বাসকষ্ট হলে কী করণীয়, সে সব প্রোটোকল ধরে বোঝান যোগীরাজ।
সূত্রের খবর, স্বাস্থ্য দফতরের বিশেষজ্ঞ দলের পর্যবেক্ষণ, অনেক হাসপাতালে রোগীকে অতিরিক্ত ফ্লুইড বা স্যালাইন দেওয়া হচ্ছে। তাতে ক্ষতিই হচ্ছে। কয়েকটি মৃত্যুর নথি পরীক্ষা করে দেখা গিয়েছে, রোগী সুস্থ হতে শুরু করলেও তাঁকে স্যালাইন দেওয়া হয়েছে। এ দিনের প্রশিক্ষণে ফের বোঝানো হয়, দিনে দু’বার পিসিভি (রক্তে প্যাকড সেল মাত্রা) পরীক্ষা করে ফ্লুইডের ব্যবস্থা করতে হবে। কখন প্লেটলেট দিতে হবে, কোন পরিস্থিতিতে স্যালাইনের মাত্রা বাড়াতে-কমাতে হবে, বলা হয় তা-ও। ম্যালেরিয়া-রোধী ওষুধের ব্যবহার থেকে ডেঙ্গি সংক্রমণের মাত্রা জরিপ করার বিষয়ে পাঠ দেন সৌমেন্দ্রনাথ। প্রোটোকল মেনে চিকিৎসা দিলে ডেঙ্গিতে কতটা সুফল পাওয়া সম্ভব, ব্যাখ্যা দেন জ্যোর্তিময়।
একই ভাবে বড়দের মতো শিশুদের ডেঙ্গি-ম্যালেরিয়ার ক্ষেত্রেও চিকিৎসা কোন পথে চলবে, বোঝান মিহির। স্বাস্থ্য দফতর সূত্রের খবর, প্রোটোকল না মেনে চিকিৎসার নজির মিলেছে বেশ কিছু বেসরকারি হাসপাতালে। অতিরিক্ত স্যালাইন দেওয়ার ফলে ফুসফুসে জল জমে শ্বাসকষ্ট, হার্ট ফেলিয়োর হতে পারে। অপ্রয়োজনে প্লেটলেট দিলে রক্ত জমাট বেঁধেও বিপত্তি ঘটছে বলে পর্যবেক্ষণ। আজ, শুক্রবার বেসরকারি হাসপাতালের চিকিৎসক, নার্সদের প্রশিক্ষণ দেবে স্বাস্থ্য ভবন।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy