Advertisement
২০ মে ২০২৪

রাস্তায় নৈমিত্তিক যানজট, পাতালেও বিভ্রাট মেট্রোয়

পুজোর শহরে যান-যন্ত্রণা চলছেই। তাতে ভোগান্তির বাড়তি মাত্রা যোগ করল মেট্রো রেল। শুক্রবার সকালে আবারও মেট্রো-দুর্ভোগে পড়ে নাকাল হলেন নিত্যযাত্রীরা। পৌনে ৯টা নাগাদ ময়দান স্টেশনের ‘ইন্টিগ্রেটেড পাওয়ার সাপ্লাই সিস্টেম’ খারাপ হয়ে যায়। বিদ্যুৎ সরবরাহের গোলোযোগে ভেঙে পড়ে স্টেশনের সব সিগন্যাল ব্যবস্থা। দাঁড়িয়ে পড়ে ট্রেন। আর তাতেই শুরু বিপত্তির।

নিজস্ব সংবাদদাতা
শেষ আপডেট: ২৭ সেপ্টেম্বর ২০১৪ ০০:৪৭
Share: Save:

পুজোর শহরে যান-যন্ত্রণা চলছেই। তাতে ভোগান্তির বাড়তি মাত্রা যোগ করল মেট্রো রেল।

শুক্রবার সকালে আবারও মেট্রো-দুর্ভোগে পড়ে নাকাল হলেন নিত্যযাত্রীরা। পৌনে ৯টা নাগাদ ময়দান স্টেশনের ‘ইন্টিগ্রেটেড পাওয়ার সাপ্লাই সিস্টেম’ খারাপ হয়ে যায়। বিদ্যুৎ সরবরাহের গোলোযোগে ভেঙে পড়ে স্টেশনের সব সিগন্যাল ব্যবস্থা। দাঁড়িয়ে পড়ে ট্রেন। আর তাতেই শুরু বিপত্তির।

আগে-পরের সব স্টেশনেই এই ঘটনার রেশ গিয়ে পড়লে আটকে পড়েন হাজার হাজার যাত্রী। খবর পেয়ে ঘটনাস্থলে যান মেট্রোর ইঞ্জিনিয়ারেরা। মেরামত করতে সময় লাগে প্রায় তিন ঘণ্টা। ফলে তিন ঘণ্টা ধরে এ দিন মেট্রো চলাচল ব্যাহত হয়। যদিও কী কারণে মেট্রোর গোলমাল হয়েছে, তা স্পষ্ট করে বলেননি কর্তৃপক্ষ। যান্ত্রিক ত্রুটি বলেই দায় সেরেছেন তাঁরা। উল্টে মেট্রো জানিয়েছে, এ দিনের ঘটনায় কোনও ট্রেন বাতিল করা হয়নি। কিন্তু যাত্রীদের বক্তব্য, ওই তিন ঘণ্টার মধ্যে সময় পরিবর্তন করে অনেক ট্রেনই এ দিন তুলে নিয়েছেন মেট্রো কর্তৃপক্ষ।

এমনিতেই পুজোর প্রস্তুতি এবং পুজোর বাজারের জন্য গত কয়েক দিন ধরে শহরের মূল রাস্তাগুলিতে যানজট হচ্ছে। চিত্তরঞ্জন অ্যাভিনিউ, শ্যামাপ্রসাদ মুখার্জি রোজ, হরিশ মুখার্জি রোড, এ পি সি রোড, এ জে সি বসু রোড, কলেজ স্ট্রিটে ঘণ্টার পর ঘণ্টা সকাল-সন্ধ্যায় থমকে যাচ্ছে যান চলাচল। এই পরিস্থিতিতে শহরের এক মাত্র ভরসা পাতাল রেল। শুক্রবার সকালে সেই পাতাল রেলেও গোলমাল দেখা দিল।

এ দিন সকাল সাড়ে ৯টা নাগাদ মহানায়ক উত্তমকুমার স্টেশনে পৌঁছে দেখা যায়, ভিড়ে ঠাসা একটি ট্রেন দাঁড়িয়ে রয়েছে। প্ল্যাটফর্মেও থিকথিক করছে ভিড়। বোঝা গেল, ট্রেনটি বেশ কিছুক্ষণ ধরেই সেখানে দাঁড়িয়ে রয়েছে। সিগন্যাল হওয়ার পরে কয়েক বারের চেষ্টার পরে অবশেষে মেট্রোটির দরজা বন্ধ হল। কিন্তু বিদ্যুৎ না থাকায় সিগন্যাল দেওয়া যাচ্ছিল না। ফলে হাতে লিখে মোটরম্যানকে দেওয়া হল ট্রেন ছাড়ার ছাড়পত্র। চলতে শুরু করল ট্রেন।

এর পরে দমদমমুখী প্ল্যাটফর্মে ঢুকল একটি বাতানুকূল ট্রেন। যাত্রীরা নামতে না নামতেই ভিড় আছড়ে পড়ল দরজায়। ভিতরে আবার শুরু হল প্রবল ঠেলাঠেলি আর ধাক্কাধাক্কি। এই ট্রেনটিতে আগে থেকেই ভিড় ছিল। নতুন করে আরও যাত্রী ওঠার চেষ্টা করায় অনেকে ধরেই ঝুলে রইলেন। যাত্রীদের বারবার গেট ছেড়ে নেমে দাঁড়াতে অনুরোধ করা হল। পুলিশকর্মীদেরও ওই অতিরিক্ত যাত্রীদের নামিয়ে দিতে অনুরোধ করা হল। কিন্তু কেউ কান দিলেন না। ট্রেনের দরজাও বন্ধ হল না। দশ মিনিট চেষ্টার পরে দরজায় ঝুলে থাকা যাত্রীদের নামানো গেলে ট্রেন ছাড়ল।

ট্রেনে অধিকাংশই ছিলেন অফিসযাত্রী। কালীঘাটে যখন মেট্রো পৌঁছল, ঘড়িতে তখন ১০টা ২৫। কেউ কেউ অফিসে ফোন করে তাঁদের পরিস্থিতির কথা জানাচ্ছেন। কেউ আবার পরিচিতদের ফোন করে মেট্রো না ধরার পরামর্শ দিচ্ছিলেন। এখানেও মিনিট দশেক দাঁড়িয়ে রইল মেট্রো।

মেট্রোটি যতীন দাস পার্ক পৌঁছল ১০টা ৩৯ মিনিটে। যতীন দাস পার্ক থেকে দশ মিনিট পরে রওনা হয়ে মেট্রো পৌঁছল নেতাজি ভবন। সেখানে মেট্রো দাঁড়িয়ে রইল প্রায় ষোলো মিনিট। এর মধ্যে আচমকা দু’-এক বার কিছুক্ষণ করে কামরার এসি বন্ধ হয়ে গেল। অবশেষে ১০টা ৫৫ মিনিটে রবীন্দ্র সদন স্টেশনে পৌঁছল ট্রেনটি। তার পরের তিনটি স্টেশনে অবশ্য আর দাঁড়ায়নি সেই মেট্রো।

এ দিনের ঘটনায় মেট্রো নিয়ে রীতিমতো আতঙ্কিত হয়ে পড়েছেন যাত্রীরা। সামনে পুজো। শহরের ব্যস্ত রাস্তার বিকল্প হিসেবে পাতাল রেলের উপরেই ভরসা করেন শহরবাসী। এ দিনের ভোগান্তির পরে যাত্রীরা প্রশ্ন তুলেছেন, এখন থেকেই বিভ্রাট শুরু হয়ে গেলে পুজোয় যাত্রীদের বাড়তি চাপ সামলাবে কী করে মেট্রো?

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE