কালীঘাটে পুরসভার পাঁচ তলা একটি ফাঁকা বাড়ি। সেই বাড়িকে কেন্দ্র করে বছরের পর বছর পরিকল্পনার মিছিল। কিছুই বাস্তবায়িত হয়নি। সেখানেই এ বার হাসপাতাল তৈরির পরিকল্পনা করেছে পুরসভা।
কলকাতা পুরসভা ন’-এর দশকের মাঝামাঝি কালীঘাটে একটি পাঁচ তলা বাড়ি তৈরি করেছিল। প্রথমে ঠিক ছিল এখানে হকারদের পুনর্বাসন দেওয়া হবে। কিন্তু হকাররা বাড়িটিতে যেতে রাজি হননি। পরে এখানে ম্যালেরিয়া হাসপাতাল তৈরির পরিকল্পনা করে পুরসভা। আদালতের নির্দেশে সেই কাজও হয়নি। এর পরে পুর-কর্তৃপক্ষ সিদ্ধান্ত নেন, ওই বাড়ির একটি অংশে শহরের খাবারের নমুনা পরীক্ষার আধুনিক ল্যাবরেটরি তৈরি হবে। শেষ পর্যন্ত তাও বাতিল হয়ে যায়। গত পুরবোর্ড ক্ষমতায় আসার পরে এখানে হাসপাতাল তৈরির সিদ্ধান্ত নেয়। পুর-কর্তৃপক্ষের দাবি, এ বছরের মধ্যেই এই বাড়িতে হাসপাতাল গড়ে উঠবে।
কলকাতা পুরসভার মেয়র পারিষদ (স্বাস্থ্য) অতীন ঘোষ বলেন, “এই ফাঁকা বাড়িটিতে ১০০ শয্যার একটি হাসপাতাল তৈরি হবে। জাতীয় স্বাস্থ্য মিশন প্রকল্পে পুরসভার উদ্যোগে এই হাসপাতাল তৈরি হচ্ছে। ইতিমধ্যেই এই প্রকল্পের জন্য দরপত্রও ডাকা হয়েছে। দ্রুত কাজ শুরু হবে। এ বছরের শেষের দিকে এই প্রকল্পের কাজ শেষ হবে বলে আশা করছি।’’
পুর-প্রশাসন জানিয়েছে, পরিকাঠামোগত কিছু ত্রুটি থাকায় ল্যাবরেটরি তৈরি করা যায়নি। অবশেষে, গত পুরবোর্ডের আমলেই ১০০ শয্যা বিশিষ্ট একটি হাসপাতাল তৈরির সিদ্ধান্ত হয়। বাড়িটি-র দোতলা এবং তিন তলা মিলিয়ে শয্যা ছাড়াও হাসপাতালের প্রয়োজনীয় পরিকাঠামো থাকবে বলেও মেয়র পারিষদ জানান।
স্বাস্থ্য দফতরের এক আধিকারিকের কথায়, বাড়িটিতে জায়গার অভাব নেই। বর্তমানে কলকাতা পুরসভার নিজস্ব একটি ল্যাবরেটরি রয়েছে। শহরের বিভিন্ন এলাকা থেকে খাবারের নমুনা সংগ্রহ করে সেখানে পরীক্ষা করা সহজসাধ্য। এ ছাড়া, এখানে থাকলে ল্যাবরেটরির কাজকর্ম পুরসভার নজরদারিতে থাকে। এখান থেকে ল্যাবরেটরি সরিয়ে নিয়ে গেলে অসুবিধা হতে পারে। সেই কারণেই ওই বাড়িতে আধুনিকমানের ল্যাবরেটরি তৈরির পরিকল্পনা বাতিল হয়ে যায়।
এখন বাড়িটিতে ঢোকার মুখে ভবঘুরে বসে থাকে। আশপাশে ডাঁই হয়ে রয়েছে আবর্জনা। মাঝেমধ্যেই বাড়ির বেসমেন্টে জল চুঁইয়ে পড়ে জমে যায়। অভিযোগ, এই জমা জল মশার আঁতুড়। জানলা এবং গ্রিলে লাগানো ফাইবার গ্লাসও চুরি হয়ে গিয়েছে। এ ভাবেই বাড়িটি ক্রমেই নষ্ট হয়ে যাচ্ছে। পুরবোর্ডে বামফ্রন্ট ক্ষমতায় থাকার সময়ে বাড়িটি রং করানোও হয়। পুরসভার প্ল্যানিং অ্যান্ড ডেভেলপমেন্ট দফতর এটি তৈরি করেন। পরে তা ইঞ্জিনিয়ারিং দফতরকে রক্ষণাবেক্ষণের দায়িত্ব দেওয়া হয়। আপাতত কলকাতা পুরসভা এখানে নিরাপত্তারক্ষীর ব্যবস্থা করেছে।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy