কলকাতা বিশ্ববিদ্যালয়ের অস্থায়ী উপাচার্য হিসেবে কাজে যোগ দিয়েই নিজেকে ‘সরকারের লোক’ বলে দাবি করে বিতর্ক তৈরি করেছিলেন সুগত মারজিত। এ বার ওই পদে ছ’মাসের মেয়াদ বাড়ল তাঁর এবং সেই বৃদ্ধির পরে একই পথে হাঁটলেন তিনি।
অস্থায়ী উপাচার্য-পদে সুগতবাবুর মেয়াদ আরও ছ’মাস বাড়ানো হয়েছে বুধবারেই। স্বাভাবিক ভাবেই প্রশ্ন উঠছে, নিয়োগের সময় ‘সরকারের লোক’ বলে নিজেকে দাগিয়ে দেওয়ার ইনাম হিসেবেই কি এই মেয়াদ বৃদ্ধি? উপাচার্যের জবাব, ‘‘এখন আর এ-সব নিয়ে বিতর্ক কেন? আমি আগে যা বলেছি, সেখান থেকে সরছি না।’’
এই মন্তব্যের পরে ফের প্রশ্ন উঠছে, স্বশাসিত বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্যের পদে থেকে নিজেকে সরকারের লোক বলা কতটা আইনসঙ্গত ও শোভন? গত জুলাইয়ে অস্থায়ী উপাচার্যের দায়িত্ব নিয়েই সুগতবাবু বলেছিলেন, ‘‘অপছন্দের লোক হলে সরকার আমাকে নিয়োগ করতেন না।’’ এ দিন নিজের বক্তব্যের ব্যাখ্যাও তিনি দিয়েছেন পাল্টা প্রশ্ন তুলেই। তাঁর কথায়, ‘‘রাজ্যপাল আর সরকারই তো অস্থায়ী উপাচার্য হিসেবে আমার মেয়াদ বাড়িয়েছেন। তাঁদের পছন্দের লোক না-হলে কি এটা হতো?’’
খোদ উপাচার্য যেখানে নিজেকে সরকারের লোক বলে দাবি করছেন, সেখানে বিশ্ববিদ্যালয়ের স্বশাসন থাকবে কি না, সেই প্রশ্ন ছ’মাস আগেও উঠেছিল। এ দিনও উঠল।
সুগতবাবুর এ দিনের মন্তব্য শুনে বিদ্যাসাগর বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রাক্তন উপাচার্য আনন্দদেব মুখোপাধ্যায় বলেছেন, ‘‘উপাচার্যের নিরপেক্ষ দৃষ্টি নেই।’’ তাঁর ধারণা, বিশ্ববিদ্যালয়ের দৈনন্দিন কাজে উপাচার্যের এই ধরনের মন্তব্যের প্রভাব পড়বে।
শিক্ষাবিদ পবিত্র সরকার অবশ্য ব্যাপারটাকে সুগতবাবুর সারল্য হিসেবেই দেখছেন। মাস ছয়েক আগে উপাচার্য-পদে সুগতবাবুর নিয়োগের সময় তাঁর সরকার-স্তুতি প্রসঙ্গে পবিত্রবাবু জানিয়েছিলেন, উপাচার্য হিসেবে এ ভাবে অবস্থান স্পষ্ট করা বিশ্ববিদ্যালয়ের পক্ষে আদৌ ভাল না খারাপ, সেটা পরে বোঝা যাবে। এ দিন তিনি বলেন, ‘‘উপাচার্য হিসেবে সুগত কী ভাবে নিজের দায়িত্ব পালন করছেন, সেটা বিশ্ববিদ্যালয়ের লোকজনই বলতে পারবেন।’’
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy