এ বার হয়তো বদলাবে এই ছবি। ছবি: দীপঙ্কর মজুমদার।
ট্রেন থেকে নেমে হাওড়া স্টেশনের বাইরে পা দিলেই এ বার দেখা মিলবে গঙ্গার। বেআইনি ঘুপচি হোটেল আর ঝুপড়ি দোকানের সারিবদ্ধ দৃশ্যদূষণ গঙ্গাকে যে ভাবে আড়াল করে রেখেছে, সেই ছবিটাই এ বার বদলাতে উদ্যোগী হয়েছেন কলকাতা বন্দর কর্তৃপক্ষ। সম্প্রতি তাঁরা হাওড়া পুরসভা ও সিটি পুলিশকে চিঠি দিয়ে চাঁদমারি ঘাট এলাকার সমস্ত হোটেল ও বেআইনি নির্মাণ অবিলম্বে ভেঙে দেওয়ার কাজে সহযোগিতা চেয়েছেন।
কলকাতার দিকে গঙ্গাতীরের সৌন্দর্যায়ন হয়েছিল আগেই। হাওড়ার দিকে, বিশেষ করে হাওড়া স্টেশনের উল্টো দিকে গঙ্গাতীরের সৌন্দর্যায়নের জন্য বছর দুয়েক আগে হাওড়া পুরসভাও ১০ কোটি টাকার একটি প্রকল্প তৈরি করে। পুর-বৈঠকে তা সর্বসম্মতিক্রমে অনুমোদিতও হয়। কিন্তু হাওড়া বাসস্ট্যান্ড ও গঙ্গাতীরের জমি যথাক্রমে ‘কলকাতা মেট্রোপলিটন ডেভেলপমেন্ট অথরিটি’ (কেমএমডিএ) ও কলকাতা বন্দর কর্তৃপক্ষের হওয়ায় এক ইঞ্চিও এগোতে পারেনি পুরসভা। সেই সঙ্গে গোদের উপরে বিষফোঁড়ার মতো ছিল গঙ্গাতীরে বসে থাকা বেআইনি দখলদার।
হাওড়া বাসস্ট্যান্ড চত্বর ও গঙ্গাতীরের সৌন্দর্যায়নের দায়িত্বপ্রাপ্ত, হাওড়ার ডেপুটি মেয়র মিনতি অধিকারী বলেন, ‘‘গঙ্গাতীরের পুরনো সৌন্দর্য ফিরিয়ে এনে ওই এলাকাটি সাধারণ মানুষের জন্য উন্মুক্ত করে দিতে আমরা কলকাতা বন্দর কর্তৃপক্ষকে বারবার চিঠি দিয়েছি। সম্প্রতি হাওড়ার পুর-কমিশনারকে চিঠি দিয়ে বন্দর কর্তৃপক্ষ জানিয়েছেন, সাধারণ মানুষের স্বার্থের কথা মাথায় রেখে এ বার গঙ্গাতীরের দখলদারদের হটিয়ে দেওয়া হবে। তাঁদের অনেক সময় দেওয়া হয়েছে। এ বিষয়ে সমস্ত আইনি জটিলতাও কেটে গিয়েছে।’’
এ বিষয়ে হাওড়ার পুর-কমিশনার নীলা়ঞ্জন চট্টোপাধ্যায় বলেন, ‘‘আগামী বুধবার আমরা গঙ্গার ঘাট পরিদর্শনে যাব। তার পরে কী ব্যবস্থা নেওয়া হবে, তা বন্দর কর্তৃপক্ষকে জানাব।’’
হাওড়া পুরসভা সূত্রে জানা গিয়েছে, দখলদার হটিয়ে দিতে পারলেই গঙ্গার তীর পুরোপুরি উন্মুক্ত হয়ে যাবে। মানুষ প্রাণ ভরে নিঃশ্বাস নিতে পারবেন। ওই জায়গায় সবুজায়নের পাশাপাশি খাবারের ছোট ছোট স্টল ও কিয়স্ক তৈরি করা হবে। মানুষ যাতে গঙ্গাতীরে কিছুক্ষণ হাঁটতে বা বসতে পারেন, সে ব্যবস্থাও করা হবে। পুরসভা সূত্রে জানা গিয়েছে, চাঁদমারি ঘাট এলাকার সৌন্দর্যায়নের পাশাপাশি হাওড়া বাসস্ট্যান্ড চত্বরেরও উন্নতি করা হবে। তৈরি হবে শীতাতপ নিয়ন্ত্রিত স্ট্যান্ড ও স্কাইওয়াক। বিনা বাধায় হাওড়া স্টেশনে সরাসরি পৌঁছতে এই স্কাইওয়াক তৈরি হবে মুখরাম কানোরিয়া রোড থেকে লঞ্চঘাট পর্যন্ত। ডেপুটি মেয়রের দাবি, গত দু’বছরে অনেকটাই বদলে দেওয়া গিয়েছে হাওড়া বাসস্ট্যান্ড চত্বর। তৈরি হয়েছে তিন-তিনটি পার্ক, ওয়াচ টাওয়ার। বসানো হয়েছে চারটি ঠান্ডা জলের যন্ত্র।
ডেপুটি মেয়র বলেন, ‘‘হাওড়া স্টেশন ও বাসস্ট্যান্ড চত্বরে পুরসভার কোনও জমি নেই। সব জমিই কেএমডিএ-র। তা সত্ত্বেও ওই এলাকার গুরুত্ব বিবেচনা করে আমরা সৌন্দর্যায়নের কাজ করছি। কেএমডিএ-র কাছ থেকে জমি পেলেই বাকি কাজ শুরু করব।’’
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy