প্রতীকী চিত্র।
মোটরবাইক নিয়ে সবে এসে দাঁড়িয়ে ছিলেন আত্মীয়ের বাড়ির সামনে। আচমকাই পিছন থেকে গলায় হাল্কা টান। চমকে উঠলেন প্রৌঢ়। মুখ ঘুরিয়ে দেখলেন, পিছনের বাইকে বসা অপরিচিত এক যুবকের হাতে তাঁর গলার সোনার হার। তারা কারা, কেন হার ছিনিয়ে নিচ্ছে— এই সব নিয়ে বচসার মাঝেই চলল গুলি। হারের পাশাপাশি প্রৌঢ়ের হাতের সোনার ব্রেসলেটও ছিনিয়ে নিয়ে চম্পট দিল বাইক আরোহী দুই দুষ্কৃতী। মঙ্গলবার দুপুরে ঘটনাটি ঘটেছে বরাহনগরে। এলাকার সিসি ক্যামেরার ফুটেজের সূত্র ধরে তদন্ত শুরু করেছে পুলিশ। যদিও এখনও কেউ গ্রেফতার হয়নি।
পুলিশ সূত্রের খবর, বরাহনগর পুরসভার ২৭ নম্বর ওয়ার্ডের কালীচরণ ঘোষ রোডের বাসিন্দা, পেশায় ব্যবসায়ী পবিত্র বারিকের কাকা দিন কয়েক আগে মারা গিয়েছেন। প্রতিদিনের মতো এ দিনও পৌনে ১২টা নাগাদ বাইক নিয়ে শম্ভুনাথ দাস লেনে কাকার বাড়িতে এসেছিলেন পবিত্র। অভিযোগ, রাস্তায় একটি বাইক তাঁর পিছু নিয়েছিল। কিন্তু তাতে তেমন আমল দেননি ওই প্রৌঢ়।
তদন্তকারীদের তিনি জানিয়েছেন, কাকার বাড়ির সামনে এসে দাঁড়ানোর পরেই ওই ঘটনা ঘটে। হেলমেটে মুখ ঢাকা দুই যুবকও বাইক নিয়ে এসে ওই প্রৌঢ়ের পিছনে দাঁড়ায়। পবিত্র বলেন, ‘‘গলায় টান লাগতেই মুখ ঘুরিয়ে দেখি, ওই দুই যুবকের এক জনের হাতে আমার সোনার চেন! জানতে চাই, কেন তারা হার ছিনিয়ে নিল? কিন্তু ওরা উল্টোপাল্টা কথা বলতে শুরু করে।’’ অভিযোগ, এর পরেই তাদের এক জন কোমরে গোঁজা রিভলভার বার করে হুমকি দেয়, ‘চেঁচামেচি করে লাভ নেই।’ এর পরে পবিত্রের হাত থেকে সোনার ব্রেসলেটও ছিনিয়ে নেয় তারা। তার পরে চম্পট দেয়। তখনই চেঁচিয়ে কাকিমা ও ভাইকে ডাকেন প্রৌঢ়।
বারান্দায় বেরিয়ে আসেন পবিত্রের কাকিমা তাপসী বারিক ও তাঁর ছেলে সৌরভ। তাঁরাও চেঁচামেচি শুরু করলে ওই দুষ্কৃতীরা প্রথমে শূন্যে একটি গুলি চালায়। কিন্তু তাতেও তাপসীদেবীরা চেঁচামেচি করতে থাকলে তাঁদের বাড়ির দেওয়াল লক্ষ্য করে ফের আর একটি গুলি চালিয়ে বিধান পার্কের দিকে চম্পট দেয় দুই দুষ্কৃতী। খবর পেয়ে ঘটনাস্থলে আসেন স্থানীয় পুর কোঅর্ডিনেটর দিলীপনারায়ণ বসু এবং বরাহনগর থানার পুলিশ। দিলীপবাবু জানান, ওই এলাকায় স্বর্ণ ব্যবসায়ীদের বেশ কিছু দোকান রয়েছে। তাই গোটা এলাকা সিসি ক্যামেরায় মোড়া। তবে রাজ্যে কড়া নিয়ন্ত্রণ-বিধি চালু থাকায় সব দোকানই বন্ধ। ঘটনার সময়ে রাস্তাতেও লোকজন প্রায় ছিল না বললেই চলে।
দিলীপবাবু বলেন, ‘‘দশ বছর ধরে কাউন্সিলর পদে রয়েছি। এমন ঘটনা ঘটেনি। পুলিশ সিসি ক্যামেরার ফুটেজ দেখে তল্লাশি শুরু করেছে।’’ সূত্রের খবর, যে বাইকে চেপে ওই দুষ্কৃতীরা এসেছিল, সেটির পিছনের দিকের নম্বর প্লেটের উপরে একটি ব্যাগ ঝোলানো ছিল। সামনের নম্বর প্লেটটিও অস্পষ্ট। ব্যারাকপুর পুলিশ কমিশনারেটের এক কর্তা বলেন, ‘‘সমস্ত কিছু খতিয়ে দেখা হচ্ছে। কিছু সূত্র নিয়ে সর্বত্র তল্লাশি শুরু করা হয়েছে।’’
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy