আগামী ১৩ নভেম্বর ভাইফোঁটার দিন সারা রাত কালী প্রতিমা ভাসান দেওয়া যাবে। মঙ্গলবার পুজো কমিটিগুলির সঙ্গে বৈঠকে এ কথা জানিয়েছেন পুলিশ কমিশনার সুরজিৎ করপুরকায়স্থ।
উদ্যোক্তাদের একাংশের দাবি ছিল, যেহেতু ১৩ নভেম্বর ভাইফোঁটা, তাই ভাসান এক দিন পিছিয়ে দেওয়া হোক। কিন্তু পুলিশ কমিশনার সেই ‘আবদার’ মানতে চাননি। তিনি জানিয়ে দেন, ‘‘ভাইফোঁটা তো দিনের বেলা হবে। আপনারা সারা রাত ধরে কালী প্রতিমা ভাসান দেবেন। এতে সমস্যার কিছু নেই।’’ পুজো উদ্যোক্তারা কেউই অবশ্য এর পরে আর কোনও
মন্তব্য করেননি।
পুজো কমিটিগুলি যাতে হাইকোর্টের নির্দেশ, দূষণ বিধি সব মেনে চলে তার জন্য বেশ কয়েক বছর ধরেই পুরস্কার দেওয়ার প্রচলন করেছে কলকাতা পুলিশ। পুলিশ কমিশনার বলেন, এ বার পুরস্কারের সংখ্যা বাড়ানো হচ্ছে। বড় পুজোর জন্য যেমন পুরস্কার থাকবে, তেমনই সব বিধি মেনে চললে পুরস্কার পাবে মাঝারি এবং ছোট পুজো কমিটিও। এত দিন মোট ছ’টি পুরস্কার দেওয়া হত। পুলিশ কমিশনারের ঘোষণা, ‘‘এ বার আমরা প্রতি ডিভিশনে দু’টি করে মোট ১৬টি পুরস্কার দেব। প্রতিটি ডিভিশনে একটি বড় পুজো এবং একটি মাঝারি অথবা ছোট পুজোকে পুরস্কৃত করা হবে।’’
দুর্গাপুজোর সময়ে বাইকবাহিনীর দাপটে জেরবার হয়েছিল পুলিশ। বেশির ভাগ ক্ষেত্রেই বাইক বাহিনীকে নিয়ন্ত্রণ করতে পারেনি তারা। বাইক সংক্রান্ত দুর্ঘটনায় পুজোর ক’দিন ১২ জনের মৃত্যু হয়েছিল শহরে। সেই পরিপ্রেক্ষিতে কালীপুজোর সময়ে পুলিশ বাহিনীকে সজাগ রাখা হবে বলে জানিয়েছেন পুলিশ কমিশনার। তিলজলার একটি পুজো কমিটির প্রশ্ন ছিল, তাদের পুজোটি বাইপাসের ধারে হওয়ায় প্রতি বার গভীর রাতে বেপরোয়া বাইকবাহিনীর দাপটে দর্শনার্থীদের সমস্যা হয়। পুলিশকতার্রা জানান, আজ, বুধবার পুলিশ কমিশনার কালীপুজো নিয়ে পুলিশের বৈঠক ডেকেছেন। সেখানে বাইকবাহিনী নিয়ন্ত্রণের বিষয়টি বিশেষ গুরুত্ব পাবে।
পুজো কমিটিগুলির দাবি ছিল, অনেক বহুতল বাড়ির ছাদে বাজি ফাটানোর উপরে কোনও নিয়ন্ত্রণ থাকে না। এমন সব বাজি ফাটে যে তার শব্দ এবং ধোঁয়ায় দর্শনার্থীরা সমস্যায় পড়েন। এ নিয়ে রাজ্য দূষণ নিয়ন্ত্রণ পর্ষদের প্রতিনিধি সুব্রত মুখোপাধ্যায় বলেন, আগামী শনিবার, ৭ নভেম্বর শহরের বহুতলগুলির প্রতিনিধিদের সঙ্গে পুলিশ, দমকল এবং পর্ষদ বৈঠকে বসবে। সেখানেই বহুতল বাড়িগুলিকে বাজি ফাটানোর নিয়ম সম্পর্কে সতর্ক করে দেওয়া হবে। এই প্রসঙ্গে পুলিশ কমিশনার বলেন, ‘‘গত বছর কালীপুজোর সময়ে রামকৃষ্ণ মিশনের এক সন্ন্যাসী দিল্লিতে ছিলেন। ওই রাতে তিনি আমাকে ফোন করে বলেন, ‘‘বাজির শব্দে আমি থাকতে পারছি না। এর থেকে কলকাতা অনেক ভাল।’’ গত বার কলকাতায় যে বাজি ফেটেছে এ বার তার থেকেও নিয়ন্ত্রিত ভাবে বাজি ফাটাতে হবে।’’
দুর্গাপুজোর সময়ে দেশপ্রিয় পার্কের সব থেকে বড় পুজো নিয়ে বিপদে পড়েছিল কলকাতা পুলিশ। আগে থেকে কোনও ব্যবস্থা না নেওয়ায় পুজোর মুখে সেটি বন্ধ করে দেয় কলকাতা পুলিশ। তার যাতে পুনরাবৃত্তি কালীপুজোয় না হয় সে ব্যাপারে পুজো কমিটিগুলির সাহায্যও চান পুলিশ কমিশনার। তিনি বলেন, কলকাতা হাইকোর্টের নির্দেশ লঙ্ঘন করে শহরে কালীপুজোর মণ্ডপ
তৈরির কোনও অভিযোগ এখনও পর্যন্ত আসেনি। শেষ পর্যন্ত যাতে সেটাই থাকে সে ব্যাপারে পুজো কমিটিকে সজাগ থাকার অনুরোধ জানিয়েছেন সুরজিৎবাবু।
শহরে এ বার মোট ৩ হাজার ৩১৯টি পুজো হচ্ছে বলে কলকাতা পুলিশের পক্ষ থেকে জানানো হয়েছে।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy