পুরসভার পেনশন বিভাগে ঝোলানো সেই নোটিস। নিজস্ব চিত্র
প্রবল আর্থিক সঙ্কটে পড়েছে কলকাতা পুরসভা। কোষাগারের অবস্থা এতটাই সঙ্গিন যে, গত পাঁচ মাস ধরে অবসরকালীন সুবিধা ও পেনশনের টাকা পাচ্ছেন না অবসরপ্রাপ্ত কর্মীরা।
পুরসভা সূত্রের খবর, কোষাগারের সঞ্চয় তলানিতে ঠেকায় পুরসভার পেনশন বিভাগে একটি নোটিসও ঝোলানো হয়েছে। তাতে বলা হয়েছে, ২০২১ সালের সেপ্টেম্বরের পর থেকে যে পুরকর্মীরা অবসর নিয়েছেন, পুরসভার তহবিলের সঙ্কটের জন্য তাঁদের অবসরকালীন সুযোগ-সুবিধা ও পেনশনের টাকা আপাতত দেওয়া যাচ্ছে না। পুরসভা সূত্রের খবর, গত সেপ্টেম্বর থেকে ৬৪০ জন অবসরপ্রাপ্ত কর্মীর পেনশনের ফাইল আটকে রয়েছে। অবসরের পরে বেশ কয়েক মাস কেটে গেলেও পেনশনের টাকা না পেয়ে প্রায়ই সংশ্লিষ্ট বিভাগে এসে দরবার করছেন তাঁরা। পুরসভা সূত্রের খবর, গত কয়েক মাস ধরে অবসরপ্রাপ্ত কর্মীরা রোজই সকাল থেকে পুরসভায় হাজির হয়ে পেনশনের ব্যাপারে তাগাদা দিচ্ছেন। তাঁদের ভিড়ে রীতিমতো লাইন পড়ে যাচ্ছে। দীর্ঘ ক্ষণ অপেক্ষা করার পরে একরাশ হতাশা নিয়ে ফিরে যাচ্ছেন ওই প্রৌঢ়-প্রৌঢ়ারা। পুরসভার এক আধিকারিকের কথায়, ‘‘অবসরপ্রাপ্ত কর্মীদের পেনশন চালু না হওয়ায় তাঁরা সমস্যায় রয়েছেন। পুরসভা বিষয়টি খতিয়ে দেখছে।’’
পেনশনের টাকা হাতে না পেয়ে বর্তমানে অনিশ্চয়তায় ভুগছেন অবসরপ্রাপ্তদের অনেকেই। মেয়র হিসাবে শপথ নেওয়ার দিনই ফিরহাদ হাকিম বলেছিলেন, ‘‘শপথ নেওয়ার এই মুহূর্তে ৭০০ কোটি টাকা ঋণের বোঝা রয়েছে পুরসভার মাথায়।’’ মেয়রের সে দিনের সেই মন্তব্যেই বোঝা গিয়েছিল, পুরসভার আর্থিক অবস্থা কতটা খারাপ।
মাস দুয়েক আগে অবসর নেওয়া এক পুরকর্মীর খেদ, ‘‘আমি ও আমার স্ত্রী, দু’জনেই অসুস্থ। মাসে তিন হাজার টাকার ওষুধ লাগে। অবসরের পরে পেনশন না মেলায় খুব সমস্যায় রয়েছি। কী করব, বুঝে উঠতে পারছি না।’’ পুরসভার পেনশন বিভাগ সূত্রের খবর, গত কয়েক মাস ধরে অবসরপ্রাপ্ত কর্মীদের একই প্রশ্নের জবাব দিতে দিতে ক্লান্ত বিভাগীয় আধিকারিকেরা। এক শীর্ষ আধিকারিকের কথায়, ‘‘পুরসভার কোষাগারের অবস্থা এই মুহূর্তে ভীষণ খারাপ। অবসরপ্রাপ্ত কর্মীদের কী ভাবে পেনশন দেওয়া যায়, তা নিয়ে ভাবনাচিন্তা চলছে।’’
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy