ঠেকে অতীতের ‘ভুল’ সংশোধন করতে চাইছে কলকাতা পুরসভা।
অতীতে নিয়ম মেনে শহরের বেসরকারি বাজারগুলোর মালিককে ব্যবসা চালানোর অনুমতি দেওয়া হয়েছিল কি না, অর্থাৎ একটি বাজার খোলার জন্য অগ্নি সুরক্ষা বিধি-সহ যে সব অনুমতির প্রয়োজন তা পুরসভার থেকে ঠিক মতো নেওয়া হয়েছিল কি না, বাগড়ি মার্কেটের অগ্নিকাণ্ডের পরে এ বার সে সবই খতিয়ে দেখতে চাইছে পুরসভা। কারণ, অনেক জায়গায় বাজার মালিকের সঙ্গে ভাড়াটে ব্যবসায়ীদের ঝামেলা রয়েছে। যেমন বাগড়ি মার্কেটের ক্ষেত্রেই মালিকের বিরুদ্ধে ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন ব্যবসায়ীরা। তাই শহরের সব বেসরকারি বাজারের ক্ষেত্রে সমস্ত তথ্য সংগ্রহ করে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নিতে চাইছে পুরসভা।
যদিও পুর প্রশাসনের একাংশের মধ্যেই সংশয় রয়েছে আদৌ এ উদ্যোগ কতটা ফলপ্রসূ হবে তা নিয়ে। প্রশাসনের একাংশের বক্তব্য, অগ্নিকাণ্ডের ঘটনা ঘটলে কমিটি গঠন, অগ্নিসুরক্ষা ব্যবস্থা গড়ে তুলতে একগুচ্ছ নির্দেশ-সহ একাধিক পদক্ষেপ করা হয়। কিন্তু শেষে সবই খাতায়-কলমে থেকে যায়। যেমন, ২০১৩ সালে শিয়ালদহের সূর্য সেন মার্কেটে অগ্নিকাণ্ডের পরে বিশেষজ্ঞ দলের সুপারিশ মানা হয়েছিল কি না, জানেন না কেউই! তারও আগে নন্দরাম মার্কেট, স্টিফেন কোর্টের অগ্নিকাণ্ডের ইতিহাস তো রয়েছেই।
পুর আধিকারিকেরা জানাচ্ছেন, পুর আইন অনুযায়ী, বেসরকারি বাজারের মালিককে আগে ব্যবসা চালানোর জন্য পুর কর্তৃপক্ষের কাছ থেকে অনুমতি নিতে হবে। তার পরে ট্রেড লাইসেন্স দেওয়ার প্রশ্ন। সেই অনুমতির উপরে ভিত্তি করে পুর ট্রেড লাইসেন্স দফতর বাজারের সব ব্যবসায়ীদের ব্যক্তিগত ট্রেড লাইসেন্স দেবে। কিন্তু পর্যাপ্ত অগ্নি সুরক্ষা ব্যবস্থা ছাড়াই যদি কোনও বাজার-মালিককে ছাড়পত্র দেওয়া হয়, তাতে পরিস্থিতি বিপজ্জনক হয়ে ওঠার আশঙ্কা রয়েছে। শহরে বেসরকারি বাজার ৪১১টি। পুর আধিকারিকদের একাংশের মতে, এর মধ্যে বহু বাজারের পরিস্থিতি এমন বিপজ্জনক। সে ক্ষেত্রে শুরু থেকেই গড়ে ওঠা কিছু ‘জতুগৃহে’ রমরমিয়ে ব্যবসা চলছে বলে মানছেন আধিকারিকদের একাংশ। কিন্তু পুরো তথ্য হাতে না এলে তাঁরা নিশ্চিত ভাবে কিছু বলতে চাইছেন না।
আধিকারিকেরা জানাচ্ছেন, তাই শহরের সব বেসরকারি বাজারের মালিকানা সংক্রান্ত তথ্য খতিয়ে দেখার সিদ্ধান্ত নিয়েছে পুরসভা। এ ব্যাপারে একাধিক পুর দফতর সমন্বয় রেখে কাজ করবে। এক পদস্থ আধিকারিকের কথায়, ‘‘অনেক আগেই এটা দেখার কথা ছিল। যদিও অতীতে নিয়ম না মেনে বাজার চালু হলে সে ক্ষেত্রে মালিককে নতুন করে ছাড়পত্র নিতে হবে কি না, তা নিয়ে অবশ্য সিদ্ধান্ত হয়নি। বিষয়টি বিবেচনাধীন।’’ মেয়র পারিষদ (বাজার) আমিরুদ্দিন ববি বলেন, ‘‘বেসরকারি মার্কেটগুলির ছাড়পত্র ঠিক ভাবে রয়েছে কি না, সেগুলির কী অবস্থা, সবই দেখা হবে। যে জায়গায় আইনি জটিলতা তৈরি হয়েছে, সেখানে বাজার মালিক ও ভাড়াটে ব্যবসায়ী, দু’পক্ষের সঙ্গেই বসা হবে। এমন অগ্নিকাণ্ড যাতে না হয়, তার উপরে গুরুত্ব দেওয়া হচ্ছে।’’
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy