এসএসকেএম-এ যন্ত্রণায় কাতরাচ্ছেন রবীন বিশ্ব। শনিবার। —নিজস্ব চিত্র।
পথ দুর্ঘটনা ঠেকাতে ‘সেফ ড্রাইভ সেভ লাইফ’-এর লাগাতার প্রচার চলছে। তা সত্ত্বেও এক শ্রেণির চালকের বেপরোয়া মানসিকতার যে বিন্দুমাত্র বদল হয়নি তা ফের প্রমাণ হল শনিবার সকালের পথ দুর্ঘটনায়। এ দিন ইস্টার্ন মেট্রোপলিটন বাইপাসে একটি বেপরোয়া বাস ধাক্কা মারে একটি স্কুটারে। স্কুটারচালকের ডান হাত গুরুতর ভাবে জখম হয়েছে।
পুলিশ সূত্রের খবর, শনিবার সকালে হরিদেবপুরের সুকান্তপল্লির বাড়ি থেকে স্কুটার চালিয়ে সল্টলেকের একটি হোটেলে কাজে যাচ্ছিলেন বছর তিরিশের রবীন বিশ্ব। শনিবার বেলা সাড়ে এগারোটা নাগাদ বাইপাসের অম্বেডকর ব্রিজের কাছে বারুইপুর-বারাসতগামী একটি বেসরকারি বাসের ধাক্কায় রাস্তায় ছিটকে পড়ে যান রবীন। বাসের পিছনের চাকা তাঁর ডান হাতের উপর দিয়ে চলে যায়। খবর পেয়ে পুলিশ ঘটনাস্থলে পৌঁছে অ্যাম্বুল্যান্সে করে তাঁকে প্রথমে ন্যাশনাল মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে নিয়ে যায়। পরে অবস্থার অবনতি হওয়ায় তাঁকে এসএসকেএম হাসপাতালে স্থানান্তরিত করা হয়।
শনিবার বিকেলে এসএসকেএম-এর জরুরি বিভাগে গিয়ে দেখা গেল, ট্রলিতে যন্ত্রণায় ছটফট করছেন রবীন। তিনি বললেন, ‘‘বাইপাসে বাঁ দিক ঘেঁষে স্কুটার চালিয়ে যাচ্ছিলাম। হঠাৎ পিছন থেকে বেসরকারি বাসটা এসে আমাকে ধাক্কা মেরে ফেলে দেয়। তার পরেই ডান হাতের উপর দিয়ে বাসের পিছনের চাকা চলে যায়।’’ ঘটনার পরে প্রগতি ময়দান থানার পুলিশ বাসটিকে আটক করে। গ্রেফতার করা হয়েছে বাসচালক কিশোরকুমার দাসকে।
প্রসঙ্গত চলতি বছরের ১৮ জানুয়ারি এজেসি বসু রোডে দু’টি বেসরকারি বাসের রেষারেষির জেরে হাত খোয়া গিয়েছিল পার্ক সার্কাসের বাসিন্দা শাবানা আখতারের। পুলিশ সূত্রের খবর, মেয়েকে স্কুলে পৌঁছে দিয়ে বাড়ি ফেরার সময়ে ২৩০ নম্বর রুটের একটি বেসরকারি বাস থেকে নামতে গিয়েছিলেন তিনি। একই রুটের অন্য একটি বাস তাঁকে ধাক্কা মারে। পরে হাসপাতালে অস্ত্রোপচারে তাঁর হাত বাদ যায়। গত বছর ৭ জুন ভোরে মালবাহী গাড়ির ধাক্কায় বাগুইআটির বাসিন্দা তপতী রায়ের ডান হাতটি বাদ যায়। তিনি নিমতলা শ্মশানঘাট থেকে ছোট লরিতে চেপে বাগুইআটিতে বাড়ি ফিরছিলেন। শোভাবাজারের অরবিন্দ রোডের কাছে বিপরীত দিক থেকে আসা একটি বেপরোয়া ম্যাটাডোরের ধাক্কায় তপতীর ডান হাতটি কাটা পড়ে।
‘সেফ ড্রাইভ, সেভ লাইফ’-এর এত প্রচার সত্ত্বেও পথ দুর্ঘটনা থামানো যাচ্ছে না কেন? লালবাজারের এক কর্তা বলেন, ‘‘সরকারের তরফে যতই প্রচার করা হোক না কেন, চালকেরা নিজেরা সচেতন না হলে পথ দুর্ঘটনা থামানো যাবে না।’’
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy