হকারদের দখল থেকে নিউ মার্কেট চত্বরকে বাঁচাতে এক সময়ে তৈরি হয়েছিল সিম পার্কের ভূগর্ভস্থ গাড়ি রাখার জায়গা। সেখানে প্রায় দু’শোটি গাড়ি একসঙ্গে রাখা যেত। সে ভাবেই গাড়ি পার্কিং চলছিল। কিন্তু দু’বছর আগে পরিদর্শনে গিয়ে দমকল দফতরের নজরে পড়ে অগ্নি নির্বাপণ ব্যবস্থার ফাঁক। নির্দেশ জারি করে তাই বন্ধ করে দেওয়া হয় সিম পার্ক। এত দিনেও কেন সেই পার্কিং চালু হল না?
কলকাতা পুরসভার মেয়র পারিষদ (পার্কিং) দেবাশিস কুমার জানান, মাটির নীচের পার্কিং-এর ক্ষেত্রে কিছু ব্যবস্থা নেওয়ার কথা জানিয়েছিল দমকল দফতর। তাদের নির্দেশেই বন্ধ করা হয়েছিল। তা ছাড়া ওই পার্কিং এলাকার উপরে বেশ কয়েক জন হকার পসরা নিয়ে বসে পড়েন। সম্প্রতি পুলিশের সহায়তায় তাঁদের সরানো সম্ভব হয়েছে। সেই কাজ শেষ করতে একটু সময় লেগেছে। এ বার এলাকাটা হকার মুক্ত হওয়ায় ফের দমকল দফতরের সঙ্গে কথা হয়েছে। গত সপ্তাহে সিম পার্কের পার্কিং নিয়ে বৈঠকও হয়েছে।
দীর্ঘদিন ধরেই হকারদের ঘেরাটোপে শহরের ঐতিহ্যশালী নিউ মার্কেট চত্বর। ওই মার্কেটের সামনে থেকে হকারদের দখলদারি সরাতে গত সাত বছরে বার কয়েক আলোচনা এবং বৈঠক হয়েছে পুরসভায়। প্রাক্তন পরিবহণমন্ত্রী তৃণমূল নেতা মদন মিত্র মন্ত্রিত্বে থাকাকালীন, পদস্থ পুলিশ কর্তাদের উপস্থিতিতে পুর ভবনে তৎকালীন বাজার দফতরের মেয়র পারিষদের সঙ্গে বৈঠকও করেছিলেন। দখলদারদের সরাতে নিউ মার্কেট যাওয়ার মূল রাস্তা বার্ট্রাম রোডের মাপজোকও শুরু হয়েছিল। হকারদের বলে দেওয়া হয়েছিল, কতটা জায়গা ছেড়ে বসতে হবে তাঁদের। যদিও শেষমেশ কিছুই হয়নি।
ফলে নিউ মার্কেটে গাড়ি রাখার জায়গায় হকার বসে যাওয়ায় সমস্যা ক্রমেই বেড়েছে। তাতে যাতায়াতের পরিসর কমেছে। সেই সঙ্গে রয়েছে হকারদের দৌরাত্ম্য। দুইয়ের চাপে প্রায় নাভিশ্বাস ওই বাজারে আসা মানুষের। সে সব ভেবেই বাম আমলে ওই পার্কিং তৈরি করা হয়েছিল।
পুরসভার বাজার দফতরের এক আধিকারিক জানান, এমনিতেই নিউ মার্কেট চত্বরের হকারদের দৌরাত্ম্যে অতিষ্ঠ ভাড়ায় থাকা স্থায়ী ব্যবসায়ীরা। তার উপরে গাড়ির রাখার জায়গার অভাব। সব মিলিয়ে নিউ মার্কেট চত্বরের ভয়ঙ্কর পরিস্থিতি। তাঁর অভিযোগ, সম্প্রতি প্রশাসনের নজরে এসেছে, মাটির নীচে ওই পার্কিংয়ের জায়গায় নিয়মিত গাঁজা, চরসের আসর বসছে। সে সব রুখতে বিষয়টি পুলিশকে জানানো হয়েছে।
দমকল দফতর সূত্রের খবর, ভূগর্ভস্থ পার্কিং রাখতে হলে কয়েকটি জায়গায় বায়ু চলাচলের ব্যবস্থা (ভেন্টিলেশন) রাখা প্রয়োজন। অথচ কাঠামো আগেই হয়ে রয়েছে। তাই ওই কাঠামোর উপরে কী ভাবে সেই বায়ু চলাচলের ব্যবস্থা করা যায়, তা নিয়ে পূর্ত দফতরের বিশেষজ্ঞদের পরামর্শ নেওয়া হবে। পুরসভা সূত্রের খবর, ওই কাজ শেষ হলে তবেই ফের পার্কিং প্লাজা চালু করা সম্ভব।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy