দুর্গা সরখেল ( বাঁ দিকে)। তাঁর দেহাংশ উদ্ধার করছে পুলিশ। ফাইল চিত্র।
দক্ষিণ কলকাতার ওয়াটগঞ্জে মহিলার খুনের ঘটনায় তাঁরই ভাসুর নীলাঞ্জন সরখেলকে বৃহস্পতিবার গ্রেফতার করল পুলিশ। বৃহস্পতিবার সকাল ১১টা ৪৫ নাগাদ তাঁকে গ্রেফতার করা হয়। যদিও তাঁর স্বামীর এখনও হদিস পায়নি কলকাতা পুলিশ। টাকা নিয়ে গোলমালের জেরেই কি এই খুন, না কি এর নেপথ্যে রয়েছে আরও গভীর কোনও রহস্য, এখন সেই উত্তর খুঁজছে লালবাজার।
গত ২ এপ্রিল ওয়াটগঞ্জের একটি পরিত্যক্ত এলাকা থেকে মহিলার টুকরো টুকরো দেহ উদ্ধার হয়। তিনটে কালো প্লাস্টিক ব্যাগে মোড়ানো ছিল মহিলার দেহাংশ। ওই প্লাস্টিকের মধ্যে পাওয়া গিয়েছিল মহিলার কাটা মাথা, পা এবং বুকের দিকের অংশ। তবে তাঁর তলপেটের অংশ, হাত এবং পায়ের পাতা গায়েব ছিল। মহিলার দেহাংশ উদ্ধার হলেও সেই মুহূর্তে তাঁর পরিচয় জানা যায়নি। আশপাশের এলাকায় খোঁজ চালানো হয়, নিখোঁজের তালিকাও খতিয়ে দেখে পুলিশ।
দেহ উদ্ধারের ২৪ ঘণ্টার মধ্যে অর্থাৎ ৩ এপ্রিল মহিলার দেহ শনাক্ত হয়। জানা যায়, মহিলার নাম দুর্গা সরখেল। বন্দর এলাকার বাসিন্দা। তিন দিন ধরে নিখোঁজ ছিলেন বলে জানতে পারে পুলিশ। দুর্গার দেহ শনাক্ত করেন তাঁর বাড়ির লোকেরাই। ২০০৭ সালে পশ্চিম বন্দর এলাকার বাসিন্দা ধোনি সরখেলের সঙ্গে তাঁর বিয়ে হয়। দুর্গার বাড়িতে স্বামী ছাড়াও রয়েছেন শাশুড়ি, দেওর এবং ননদ। মৃতার একটি পুত্রও আছে।
এই ঘটনার পরই দুর্গার শ্বশুরবাড়ির লোকেদের জিজ্ঞাসাবাদ শুরু করেছে পুলিশ। এই খুনের ঘটনার সঙ্গে তাঁদের কোনও যোগ রয়েছে কি না, তারও তদন্ত শুরু হয়েছে। দুর্গার দেওর নীলাঞ্জনকে রাতে ডেকে পাঠানো হয়েছিল। তাঁকে জেরাও করেছে পুলিশ। সেই তদন্ত চলাকালীনই দুর্গার ভাসুরকে গ্রেফতার করল পুলিশ। মৃতার স্বামী মাদকাসক্ত বলেই জানতে পেরেছে পুলিশ। তাঁকে রিহ্যাবে পাঠানো হয়েছিল। তবে সেখান থেকে পালিয়ে যান তিনি।
দুর্গার মৃত্যু হয়েছিল তাঁর দেহ উদ্ধারের ১০ ঘণ্টা আগে। প্রাথমিক ভাবে জানা গিয়েছে, দুর্গার গলায় ধারালো অস্ত্রের কাটা দাগ রয়েছে। সাধারণত ধারালো ছুরিতে এই ধরনের সরু কাটা দাগ হয় বলে তদন্তকারীদের অনুমান। তবে তাঁর শরীরের বাকি অঙ্গপ্রত্যঙ্গ কাটার জন্য চপার অথবা করাত ব্যবহার করা হয়ে থাকতে পারে। যদিও পুলিশ নিশ্চিত, ঘটনাস্থলে এ কাজ করা হয়নি। অন্যত্র এই কাজ সম্পন্ন করে ওয়াটগঞ্জে এনে ফেলা হয়েছিল।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy