Advertisement
০১ নভেম্বর ২০২৪

শিখিয়েছে দিল্লি, পুলিশের বিশেষ টহলদারি এ শহরেও

দিল্লির পথে এ বার কলকাতা! রাজধানী শহরে দিনরাত টহল দেয় পুলিশের বিশেষ দল। কোথাও হাঙ্গামা-গোলমালের খবর পেলেই তড়িঘড়ি অবস্থা সামাল দিতে ঘটনাস্থলে পৌঁছে যায় দলটি। লালবাজার সূত্রের খবর, চলতি সপ্তাহের শেষ থেকেই মহানগরের অলিগলিতেও এমন টহলদারি পুলিশের দেখা মিলবে। খাতায়-কলমে যার পোশাকি নাম ‘ইনটেনসিভ সিটি পেট্রোলিং’।

এমন গাড়িতেই ঘুরবে টহলদার পুলিশ। রিপন স্ট্রিটে ওয়্যারলেস বিভাগের অফিসে।

এমন গাড়িতেই ঘুরবে টহলদার পুলিশ। রিপন স্ট্রিটে ওয়্যারলেস বিভাগের অফিসে।

শিবাজী দে সরকার
শেষ আপডেট: ১২ অগস্ট ২০১৪ ০৩:২৪
Share: Save:

দিল্লির পথে এ বার কলকাতা!

রাজধানী শহরে দিনরাত টহল দেয় পুলিশের বিশেষ দল। কোথাও হাঙ্গামা-গোলমালের খবর পেলেই তড়িঘড়ি অবস্থা সামাল দিতে ঘটনাস্থলে পৌঁছে যায় দলটি। লালবাজার সূত্রের খবর, চলতি সপ্তাহের শেষ থেকেই মহানগরের অলিগলিতেও এমন টহলদারি পুলিশের দেখা মিলবে। খাতায়-কলমে যার পোশাকি নাম ‘ইনটেনসিভ সিটি পেট্রোলিং’।

কলকাতায় অবশ্য টহলদারি পুলিশ রয়েছে। শহরের ৯টি গুরুত্বপূর্ণ মোড়ে ওয়্যারলেস বিভাগের হেভি রেডিও ফ্লাইং স্কোয়াডের গাড়ি মোতায়েন থাকে। ৩৫টি রেডিও ফ্লাইং স্কোয়াডের গাড়ি শহরের নানা প্রান্তে ঘুরে বেড়ায়। তা সত্ত্বেও ফের নতুন করে টহলদারি দল তৈরির প্রয়োজন পড়ছে কেন?

লালবাজার সূত্রের খবর, কলকাতার পুলিশ কমিশনার সুরজিৎ করপুরকায়স্থ চান, রাস্তায় পুলিশের উপস্থিতি বৃদ্ধি পাক। সর্বত্র পুলিশের উপস্থিতি যাতে নাগরিকদের চোখে পড়ে, তেমনই ব্যবস্থা করতে চান কলকাতার পুলিশ কমিশনার। এতে যেমন শহরে অপরাধের আশঙ্কা কিছুটা হলেও হ্রাস পাবে, তেমন কোন নাগরিক বিপদে পড়লে তাঁর পাশে দ্রুত পৌঁছেও যেতে পারবে পুলিশ। যদিও পুলিশকর্তাদের একাংশ এই ব্যবস্থার পিছনে অন্য কারণও দেখতে পাচ্ছেন।

পুলিশের একটি অংশ জানাচ্ছে, শহরের বিভিন্ন প্রান্তে আচমকাই গোলমালের খবর মেলে। থানার অফিসারদের পৌঁছনোর আগে সেখানে টহলদার পুলিশ পাঠানো হয়। কখনও কখনও তাতে হোমগার্ড বা গ্রিন পুলিশের কর্মীরাও থাকেন। অপটু হাতে গোলমাল নিয়ন্ত্রণ করতে গিয়ে তাঁরা বড় সমস্যা তৈরি করে ফেলেন। দুর্ঘটনার নজিরও রয়েছে। সম্প্রতি হরিদেবপুরে একটি পারিবারিক গোলমাল মেটাতে গিয়েছিলেন এক পুলিশ কনস্টেবল ও এক হোমগার্ড। অভিযুক্তকে গ্রেফতার করে নিয়ে আসার সময়ে সে হোমগার্ডের সার্ভিস রিভলভার ছিনিয়ে নিয়ে গুলি করেন। মৃত্যু হয় ওই হোমগার্ডের। লালবাজারের এক পুলিশকর্তা বলেন, “ওই ঘটনার প্রেক্ষিতে এই টহলদারি দল আরও উপযোগী হয়ে উঠেছে।”

কী ভাবে কাজ করবে এই দল?

কলকাতা পুলিশের আটটি ডিভিশনে থানার অফিসারদের নিয়ে প্রায় চল্লিশটি দল গঠন করা হচ্ছে। একটি দলে এক জন সাব-ইনস্পেক্টরের নেতৃত্বে কনস্টেবল এবং হোমগার্ডেরা থাকবেন। কলকাতা পুলিশ এলাকায় কোনও ঘটনার খবর পেলে দ্রুত ঘটনাস্থলে পৌঁছবে এক অফিসার-সহ পাঁচ সদস্যের ওই বিশেষ দল। এর জন্য প্রতি থানা থেকে বাছাই করা কর্মীদের ‘পুলিশ ট্রেনিং স্কুলে’ বিশেষ প্রশিক্ষণও দেওয়া হচ্ছে বলে জানিয়েছে পুলিশ।

লালবাজার সূত্রের খবর, চলতি সপ্তাহের শেষ থেকে শহরের রাস্তায় আধুনিক মানের গাড়িতে টহল দিতে দেখা যাবে পুলিশের ওই বিশেষ দলকে। কন্ট্রোল রুম বা থানা থেকে কোনও খবর পাওয়া মাত্র তারা ঘটনাস্থলে পৌঁছে যাবে অল্প সময়ের মধ্যেই। প্রাথমিক তদন্ত থেকে শুরু করে প্রযোজনীয় সব কাজই শুরু করবে ওই দল। প্রয়োজনে তারাই যোগাযোগ করবে স্থানীয় থানা থেকে লালবাজারের প্রধান কন্ট্রোল রুমে। প্রতিটি দলের নির্দিষ্ট থানা এলাকায় টহল দেওয়ার কথা।

কলকাতা পুলিশের এক কর্তা জানান, কোনও এলাকা থেকে গোলমালের খবর এলে সেই জায়গার সবচেয়ে কাছে থাকা বিশেষ দলকে ঘটনাস্থলে পৌঁছে যাওয়ার নিদের্শ দেওয়া হবে। তাঁর কথায়, ‘ইনটেনসিভ সিটি পেট্রোলিং’-এর প্রতিটি গাড়িতে ‘গ্লোবাল পজিশনিং সিস্টেম’ (জিপিএস) লাগানো থাকবে। দুঘর্টনাস্থলের সবচেয়ে কাছে থাকা দলটিকে জিপিএসের মাধ্যমে জেনে নিয়ে সেখানে পৌঁছতে বলা হবে। কলকাতা পুলিশের একাংশের মতে, যে কোনও সমস্যায় দ্রুত কর্মীরা পৌঁছে গিয়ে সাহায্য করলে পুলিশের ভাবমূর্তি উন্নত হবে।

অন্য বিষয়গুলি:

patrol kolkata police shibaji dey sarkar
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE