আদালতে মীমাংসা এখনও বাকি। ভাড়াটে তুলতে তাই গৃহকর্ত্রীর শেষ ভরসা ছিলেন এক ‘প্রভাবশালী’। সেই বাবদ ওই মহিলা দেড় লক্ষ টাকা দিয়েছিলেন এক ব্যক্তিকে। যিনি নিজেকে রাজ্যের শাসক দলের এক তাবড় নেতার ঘনিষ্ঠ বলেই গৃহকর্ত্রীকে বুঝিয়েছিলেন। কিন্তু তাঁর ঘোর কাটল টাকা দেওয়ার পরে। নগদ নিয়ে যখন গা-ঢাকা দিলেন সেই ব্যক্তি। এ দিকে, মহিলার বাড়ির একতলায় বহাল তবিয়তেই বসে রইলেন সেই ভাড়াটে। শেষ পর্যন্ত শুক্রবার রাতে সেই ‘প্রভাবশালীকে’ গ্রেফতার করল বিধাননগরের পুলিশ।
তদন্তকারীরা জানান, ওই গৃহকর্ত্রী সল্টলেকের সি জে ব্লকের বাসিন্দা শিলু নন্দী। যাঁর থেকে টাকা নিয়েছিলেন বারাসতের বাসিন্দা কৃষ্ণ দাস। শুক্রবার রাতে তাঁকে গ্রেফতার করেছে বিধাননগর (পূর্ব) থানা। পুলিশ জানিয়েছে, বাড়ির একতলায় থাকা ভাড়াটেকে উৎখাত করতে শিলুদেবী ওই ব্যক্তিকে গত বছরের অক্টোবরে টাকা দেন। ধৃত ব্যক্তি সেই টাকা নিয়ে গা-ঢাকা দিয়েছিলেন।
তদন্তকারীরা জানান, ধৃত ব্যক্তি শিলুদেবীকে বলেছিলেন, তিনি শাসক দলের এক প্রভাবশালী নেতার ঘনিষ্ঠ। আর শিলুদেবীও ভেবেছিলেন, ওই ‘প্রভাব’ খাটিয়ে ভাড়াটেকে উঠিয়ে দেওয়া যাবে।
পুলিশের একাংশ মনে করছে, গৃহকর্ত্রীও এ ক্ষেত্রে ঠিক কাজ করেননি। পুলিশের ব্যাখ্যা, এ ক্ষেত্রে ওই মহিলা যা করেছেন, সেটা কার্যত ‘সুপারি’ দেওয়ার সামিল। ঠিক যে ভাবে গিরিশ পার্ক এলাকার এক চায়ের দোকানিকে উচ্ছেদ করার জন্য গোপাল তিওয়ারিকে সুপারি দেওয়া হয়েছিল। যদিও এ ক্ষেত্রে ওই ভাড়াটের তরফে কোনও পাল্টা অভিযোগ পুলিশের কাছে না আসায় আপাতত তদন্তকারীরা ঘটনাটিকে প্রতারণা হিসেবেই দেখছেন।
পুলিশ জানায়, ব্যারাকপুর থেকে কৃষ্ণকে গ্রেফতার করা হয়। যে হেতু তিনি শাসক দলের এক বড় নেতার ঘনিষ্ঠ বলে দাবি করেছিলেন, তাই পুলিশও সব দিক বুঝেই এগিয়েছে। কৃষ্ণকে গ্রেফতারের আগে বারাসতের রবীন্দ্রপল্লি এলাকায় তাঁর সম্বন্ধে খোঁজ নেয় বিধাননগর (পূর্ব) থানা। পুলিশ জানতে পারে, কৃষ্ণ শিলুদেবীকে মিথ্যে বলে টাকা নিয়েছেন। তিনি নিজে প্রভাবশালী নন। শাসক দলের ওই নেতার সঙ্গেও তাঁর কোনও যোগাযোগ নেই। ফলে শুক্রবার রাতে কৃষ্ণকে গ্রেফতার করে পুলিশ।
শনিবার শিলুদেবীর সঙ্গে যোগাযোগ করা হলে তিনি বলেন, ‘‘কৃষ্ণ আমার কাছ থেকে চেকে ও নগদে টাকা নিয়েছে। ২০১৩ সাল থেকে একাধিক কিস্তিতে ওকে টাকা দিয়েছি। কিন্তু কাজ হয়নি। শেষ পালিয়ে বেড়াচ্ছিল।’’
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy