নিউ টাউনে নেপাল ঘোষ নামে এক ব্যক্তিকে খুনের মামলায় শুক্রবার সাজা ঘোষণা করল ফাস্ট ট্র্যাক আদালত। ওই ঘটনায় বৃহস্পতিবার তিন অভিযুক্তকে দোষী সাব্যস্ত করা হয়েছিল। এ দিন তাদের যাবজ্জীবন কারাদণ্ড দিলেন বারাসতের ফাস্ট ট্র্যাক আদালতের বিচারক শ্রীময়ী কুন্ডু।
২০১৬ সালের ২২ জুলাই সকালে নিউ টাউনের তিন কন্যা মোড়ের কাছে রাস্তার ধারে এক সুনসান জায়গায় ক্ষতবিক্ষত একটি মৃতদেহ উদ্ধার করেছিল পুলিশ। নৃশংস ভাবে খুন করা হয়েছিল ওই ব্যক্তিকে। ঘটনার তদন্তকারী অফিসার প্রভাকর অধিকারীর নেতৃত্বে স্বতঃপ্রণোদিত হয়ে মামলা রুজু করে পুলিশ। তদন্তে জানা যায়, মৃতের নাম নেপাল ঘোষ (৪০)। বাড়ি বরাহনগরে। তাঁকে খুনের অভিযোগে এক কিশোর এবং তিন ব্যক্তিকে গ্রেফতার করা হয়। কিশোর বাদে বাকি তিন জনের নাম
সুরজিৎ কর্মকার, ত্রিদীপ বিশ্বাস এবং রাজু শীল।
পুলিশ তদন্তে নেমে জানতে পারে, নেপালের বাড়ির কাছে একটি দোকানে কাজ করত অভিযুক্ত ওই কিশোর। সে নেপালের কাছ থেকে ১০ হাজার টাকা ধার নিয়েছিল। কিন্তু সেই টাকা সে শোধ করছিল না। বারবার তাগাদা দিচ্ছিলেন নেপাল। এর পরে ওই কিশোর বাকি তিন জনের সাহায্যে নেপালকে খুনের পরিকল্পনা করে। সেই পরিকল্পনা অনুযায়ী, টাকা ফেরত দেওয়ার নাম করে নেপালকে ডানলপে ডেকে আনা হয়। তার পরে একটি গাড়িতে উঠিয়ে নেপালকে নিউ টাউনে নিয়ে যায় তারা। কদমপুকুরের কাছে তিন কন্যা মোড় সংলগ্ন একটি ফাঁকা জায়গায় গাড়ির মধ্যেই নেপালকে দড়ি দিয়ে শ্বাসরোধ করে খুন করা হয়। তার পরে গাড়ি থেকে তাঁর দেহ নামিয়ে লোহার রড দিয়ে পিটিয়ে মুখ থেঁতলে দেওয়া হয়। ফাটিয়ে দেওয়া হয় মাথার খুলি, ভেঙে দেওয়া হয় দাঁত। এর পরে নেপালের সঙ্গে থাকা গয়না ও নগদ ২৫ হাজার টাকা নিয়ে চম্পট
দেয় দুষ্কৃতীরা।
সরকারি আইনজীবী গৌতম ঘোষ জানান, রীতিমতো পরিকল্পনা করেই নৃশংস ভাবে খুন করা হয় নেপালকে। অভিযুক্তদের বিরুদ্ধে খুন, তথ্যপ্রমাণ লোপাট এবং ষড়যন্ত্রের অভিযোগ আনা হয়েছিল। মামলায় ২৩ জন সাক্ষ্য দিয়েছেন।
সরকারি আইনজীবী আরও জানান, খুনে অন্যতম অভিযুক্ত ওই কিশোরের বিরুদ্ধে মামলা চলছিল জুভেনাইল আদালতে। পরে সরকার পক্ষ কলকাতা হাইকোর্টে যায়। কোর্টের নির্দেশে ওই কিশোরের ‘মেন্টাল ম্যাচিওরিটি টেস্ট’ হয়। এর পরে মামলা বারাসতের শিশু আদালতে স্থানান্তরিত করা হয়। সেখানেই এখন বিচার-প্রক্রিয়া চলছে।
অভিযুক্তদের অন্যতম আইনজীবী পারভেজ ইসলাম গোলদার জানান, এই রায়ের বিরুদ্ধে তাঁরা উচ্চ আদালতে আবেদন করবেন।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy