ফাইল চিত্র।
স্নাতক স্তরে ভর্তির চিত্র খুব একটা বদলাল না। কিন্তু ঘুরেফিরে বিপাকে পড়লেন সেই পড়ুয়া ও শিক্ষক-শিক্ষিকারাই।
স্নাতকে ফাঁকা আসন পূরণ করতে ভর্তির সময়সীমা প্রায় এক মাস বাড়িয়ে দিয়েছিল রাজ্য সরকার। আজ, সোমবার সেই সময়সীমা শেষ হচ্ছে। রবিবার পর্যন্ত ভর্তির যে চিত্র, তা মোটেই আশানুরূপ নয় বলেই দাবি কলেজগুলির। তার মধ্যে সিমেস্টার পদ্ধতিতে পঠনপাঠন শুরু হয়েছে জুলাইয়ের প্রথমে। যে ক’জন নতুন ভর্তি হচ্ছেন, তাঁরা দেড় মাস পিছিয়ে পড়লেন। কী ভাবে সমতা ফেরাবেন, তা ভেবে কূল পাচ্ছেন না তাঁরা। এ দিকে, সেই পড়ুয়াদের উপরে বিশেষ ভাবে নজর দিতে বাড়তি ঝক্কি নিতে হবে শিক্ষক-শিক্ষিকাদেরও।
এ বছর স্নাতকে ভর্তিতে দুর্নীতির অভিযোগকে কেন্দ্র করে বিতর্ক হয়। যার জেরে ব্যাহত হয় ভর্তি প্রক্রিয়া। কাউন্সেলিং আপাতত বন্ধ রেখে অনলাইনে টাকা জমা দেওয়ার সিদ্ধান্ত নেওয়ার পাশাপাশি প্রথম পর্যায়ে ভর্তির সময়সীমা ৬ জুলাই থেকে বাড়িয়ে ১০ জুলাই করা হয়। অথচ ভর্তির শেষে দেখা যায়, কলকাতা বিশ্ববিদ্যালয়ের অধীনস্থ ১৩১টি কলেজেই ৪০ হাজার আসন খালি পড়ে রয়েছে। যে আসন নিয়ে বিপুল অর্থ লেনদেনের অভিযোগ, সেই সব আসন কেন এত ফাঁকা, তা নিয়ে প্রশ্ন তুলেছিল শিক্ষামহল। তার পরে দ্বিতীয় পর্যায়ে ১৭ জুলাই তড়িঘড়ি সংরক্ষিত আসনগুলি অসংরক্ষিত হিসেবে ঘোষণা করার পরামর্শ দেয় সরকার এবং ২০ অগস্ট পর্যন্ত ভর্তির সময়সীমা বাড়ানোর নির্দেশ দেওয়া হয়।
কলকাতা বিশ্ববিদ্যালয় সূত্রের খবর, ১৩১টি কলেজে অনার্স-সহ আসন সংখ্যা প্রায় ১ লক্ষ ৩০ হাজার। এর মধ্যে প্রায় ৬০ হাজারই সংরক্ষিত। সেই ৬০ হাজারের মধ্যে ৩৫ হাজার মতো আসনে কেউ ভর্তিই হননি। সঙ্গে রয়েছে অসংরক্ষিত ক্ষেত্রের কিছু ফাঁকা আসনও। সবটা মিলিয়ে সেই সংখ্যা দাঁড়ায় প্রায় ৪০ হাজার। সরকারের নির্দেশের পরে দিন বাড়িয়েও লাভ হয়নি। এরই পাশাপাশি, যাদবপুর বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তি শুরু হতেই কলেজ ছেড়ে সেখানেও চলে গিয়েছেন বেশ কিছু পড়ুয়া। ফলে সেই ৪০ হাজার আসনের মধ্যে অধিকাংশই ফাঁকা থেকে গেল বলে মনে করছে কলকাতা বিশ্ববিদ্যালয়। ‘‘সমস্ত কলেজের থেকে সম্পূর্ণ পরিসংখ্যান এলে চিত্রটি আরও পরিষ্কার হবে,’’ বলেন বিশ্ববিদ্যালয়ের এক কর্তা।
লেডি ব্রেবোর্ন কলেজের অধ্যক্ষা শিউলি সরকার বলেন, ‘‘অনেক পড়ুয়াই মাঝপথে অন্যত্র চলে গিয়েছেন। আর নতুন করে কয়েক জন ভর্তি হয়েছেন। কিন্তু সব মিলিয়ে এখনও অনেক আসনই ফাঁকা থেকে গিয়েছে।’’ তবে তাঁর আক্ষেপ, জুলাই মাসের ২ তারিখে ক্লাস শুরু হয়েছে। যেহেতু এ বছর থেকে সিমেস্টার পদ্ধতি শুরু হয়েছে, তাই এই ক’দিনে কোর্সের অনেক কিছু পড়ানো হয়ে গিয়েছে। নতুন যাঁরা ভর্তি হলেন, তাঁরা কিছুটা অসুবিধেয় পড়বেন বলেই আশঙ্কা। তবে তিনি জানান, শিক্ষিকাদের বলা হয়েছে বিশেষ যত্ন নিয়ে ওই পড়ুয়াদের কোর্স সম্পূর্ণ করাতে।
সুরেন্দ্রনাথ কলেজের অধ্যক্ষ ইন্দ্রনীল কর জানান, তাঁর কলেজেও অনেক আসন ফাঁকা রয়েছে। তবে দ্বিতীয় পর্যায়ে বেশ কয়েক জন ভর্তিও হয়েছেন। ‘‘সংরক্ষিত আসন তো পূর্ণই হল না’’, বলেন চিত্তরঞ্জন কলেজের অধ্যক্ষ শ্যামলেন্দু চট্টোপাধ্যায়। বিবেকানন্দ কলেজ ফর উইমেনের অধ্যক্ষা সোমা ভট্টাচার্যেরও মত, পরিস্থিতির খুব একটা পরিবর্তন হল না। কোনও কোনও বিভাগে মাত্র দু’-তিন জন করে ভর্তি হয়েছেন।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy