নিজের হাতে এক ডজনেরও বেশি দফতর রাখলেন মেয়র শোভন চট্টোপাধ্যায়। বাকি আরও ১৫টির মতো দফতর দেখবেন ডেপুটি মেয়র ও ১২ জন মেয়র পারিষদ। মঙ্গলবার পুর-দফতর বণ্টনের পরে এই চিত্র আরও সুস্পষ্ট হল। এ দিনই দুপুরের পরে এই সংক্রান্ত সার্কুলার বেরিয়ে যায়।
কিন্তু একসঙ্গে এতগুলো দফতরের কাজ দেখা মেয়রের পক্ষে সম্ভব কি? এ নিয়ে ইতিমধ্যেই প্রশ্ন উঠেছে বিভিন্ন মহলে। মেয়র নিজে অবশ্য এর কোনও স্পষ্ট উত্তর দিতে পারেননি। কিছুটা রক্ষণাত্মক ভঙ্গিতে তাঁর ব্যাখ্যা, ‘‘আমার হাতে এতগুলো দফতর থাকলেও কেবল জল সরবরাহ দফতরটি সরাসরি দেখি। বাকিগুলো সম্মিলিত ভাবে দেখি। তাই কোনও সমস্যা হবে না।’’
তবে অভি়জ্ঞ মহলের মতে, প্রশাসনের শীর্ষপদে থাকা ব্যক্তির হাতে কোনও পদই থাকা উচিত নয়। কারণ হিসেবে তাঁদের ব্যাখ্যা, তিনিই তো কাণ্ডারী। সব দফতরই তাঁর কাছে সমান ভাবে গুরুত্বপূর্ণ। তাই যে কোনও দফতরের কাজে ত্রুটি থাকলে তা দূর করার দায়িত্বও তাঁরই। অনেকেরই বক্তব্য— দফতর অন্য সহকর্মীদের মধ্যে বণ্টন না করে নিজের হাতে কুক্ষিগত করা আসলে শীর্ষপদে আসীন ব্যক্তির এক ধরনের ‘অদক্ষতা’ বা ‘নিরাপত্তাহীনতা’র দিকেই ইঙ্গিত করে। যার অর্থ, নিজের টিমের লোকেদের দিয়ে কাজ করিয়ে নিতে তিনি যথেষ্ট পটু নন।
এ ক্ষেত্রেও পুরসভা পরিচালনা করছেন মেয়রই। পুর-আইনে তাঁর ক্ষমতাই শেষ কথা। তাই নিজের হাতে এতগুলো দফতর রাখলে কাজের অগ্রগতি থমকে যেতে পারে বলে মনে করছেন রাজনৈতিক পর্যবেক্ষকরাও।
প্রাক্তন মেয়র সিপিএমের বিকাশরঞ্জন ভট্টাচার্য বলেন, ‘‘এটা ক্ষমতা কুক্ষিগত করার চেষ্টা। তাই মেয়রের হাতে ১৩টি দফতর। যিনি অধিকাংশ সময় মুখ্যমন্ত্রীর পাশে ঘোরেন, তিনি এতগুলো দফতরের জন্য কখন সময় দেবেন জানি না।’’ তাঁর ধারণা, এতে দুর্নীতি লাগামছাড়া হবে। যদিও মেয়র শোভন চট্টোপাধ্যায় পাল্টা জানান, এমনটা আগেও হয়েছে। ৩০ বছর ধরে পুরসভার গুরুত্বপূর্ণ কয়েকটি দফতর মেয়রের হাতেই থেকেছে। এটা নতুন কিছু নয়। যদিও সেই সংখ্যা কখনওই এ বারের মতো ১৩-য় পৌঁছয়নি। গত বারও তাঁর হাতে ছিল ১১টি দফতর।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy