ভরাট হয়ে যাওয়া বেহালার পঞ্চাননতলার সেই পুকুর। নিজস্ব চিত্র
আস্ত একটা পুকুর ভরাটের অভিযোগ উঠেছিল আগেই। বেহালার পঞ্চাননতলা রোডে। তা নিয়ে পুরসভায় অভিযোগ জানিয়েছিলেন স্থানীয় বাসিন্দাদের একাংশ। দিন কয়েক আগে সেই ভরাট তুলে ফের পুকুর খোঁড়ার কাজ করতে গিয়েছিল পুরসভার দল। কিন্তু অভিযোগ, শাসক দলের অনুগত কয়েক জন পুরকর্মীদের কাজে বাধা দেন। যা শুনে মেয়র ফিরহাদ হাকিম জানিয়েছিলেন, তিনি নিজে ওই এলাকায় গিয়ে যথাযথ ব্যবস্থা নেবেন। এর পরেই বুধবার সকালে মাটি খোঁড়ার জেসিবি মেশিন নিয়ে ঘটনাস্থলে যান মেয়র। সঙ্গে ছিলেন পুলিশ এবং পুরসভার কর্তারাও। ঘটনাস্থলে দাঁড়িয়ে মেয়র স্পষ্ট জানিয়ে দেন, পুরসভার রেকর্ডে ওই জায়গায় পুকুর ছিল বলে উল্লেখ রয়েছে। তাই সেখানে ফের পুকুর খোঁড়া হবে। যদিও এলাকাবাসীর কয়েক জন মেয়রকে জানান, বর্তমানে বিষয়টি আদালতের বিচারাধীন। পরে অবশ্য ফিরহাদ জানান, আদালয়ের রায় মেনে পরবর্তী সিদ্ধান্ত নেওয়া হবে।
কলকাতা পুরসভার ১৩১ নম্বর ওয়ার্ডের অধীনে পঞ্চাননতলা রোডে ওই পুকুরটি। এলাকার কাউন্সিলর প্রাক্তন মেয়র শোভন চট্টোপাধ্যায়। বর্তমানে তিনি ওখানে থাকেন না। তাই দলের নির্দেশে তৃণমূলের পক্ষে ওয়ার্ডের কাজকর্ম দেখভাল করেন রত্না চট্টোপাধ্যায় ও তাঁর সহকর্মীরা। স্থানীয় বাসিন্দাদের একটি অংশের অভিযোগ, শাসক দলের মদতেই পুকুর ভরাটের কাজ হয়েছে। যদিও রত্নাদেবীর বক্তব্য, ‘‘এখন নয়, পুকুরটি ভরাট হয়েছে কয়েক বছর আগে। ওই জায়গা ফাঁকা থাকায় জঞ্জাল জমা হচ্ছিল। বাড়ছিল মশা। তাই সেটা পরিষ্কার করে পার্ক করার উদ্যোগ নেওয়া হচ্ছিল।’’
পুরসভা সূত্রের খবর, প্রায় ১০ কাঠা ওই জমিতে পুকুর ছিল। তা ভরাট করার কাজ শুরু হয়েছে কিছু দিন আগে থেকেই। আপাতত ওই জায়গায় গেলেই দেখা যাবে ভরাটের নিদর্শন। সেখানে পার্ক তৈরি হবে, এমনও বলা হয়েছে প্রোমোটারদের তরফে। যদিও পুরসভার পার্ক এবং উদ্যান দফতরের এক পদস্থ আধিকারিক জানান, পুকুর ভরাট করে কোনও পার্ক পুরসভা করে না। তারা তা করতেও দেবে না।
দিন কয়েক আগে পুরো বিষয়টি মেয়র ফিরহাদ হাকিমের গোচরে আসে। তখন তিনি বলেছিলেন, ‘‘কোনও রাজনৈতিক রং দেখব না। পুকুর ভরাট অন্যায়।’’ তৎক্ষণাৎ ভরাট বন্ধ করে ফের সেখানে পুকুর বার করার জন্য নির্দেশও দেন মেয়র। পুর কমিশনার খলিল আহমেদ সে সময়ে বলেছিলেন, ‘‘ফের সেখানে যাবেন পুরসভার কর্মীরা। তাঁদের সঙ্গে পাঠানো হবে পুলিশ বাহিনীও। কোনও বাধা বরদাস্ত করা হবে না।’’
সেই মতোই এ দিন মেয়র নিজে পঞ্চাননতলায় হাজির হন। তাঁকে দেখে দু’দলে ভাগ হয়ে যান স্থানীয়েরা। এক দলের বক্তব্য, সেখানে পুকুর খোঁড়া হোক। অন্য দলটি বলে, ওখানে পার্ক তৈরি হোক। যদিও শেষমেশ বিষয়টি বিচারাধীন হওয়ায় আপাতত পুকুর খোঁড়ার কাজ বন্ধ রাখতে নির্দেশ দেন মেয়র। পরে পুর ভবনে তিনি বলেন, ‘‘আদালত যা বলবে, সেই মতো কাজ হবে।’’
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy