পুরসভার স্বাস্থ্য পরিষেবা মানেই ভরসার ‘অভাব’। সেই খোলস ছেড়ে বেরোতে এ বার উদ্যোগী পুর প্রশাসন। শহরবাসীর কাছে যে পরিষেবা পিছনের সারিতে, তাকে উন্নত করতে জাতীয় স্বাস্থ্য মিশন ও বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার গাইডলাইন অনুসারে পরিকাঠামো গড়ছে তারা। মশাবাহিত রোগ নিবারণের পাশাপাশি চোখ অস্ত্রোপচার, রক্তচাপ, ডায়াবেটিস, হাঁপানির কারণে অসুস্থ হওয়া রোগীদের পাশেও পৌঁছবে পুরসভার পরিষেবা। শহরের অন্য হাসপাতাল ও ক্লিনিকের মতো প্যাথলজিক্যাল পরীক্ষার মান বাড়াতে তৈরি হচ্ছে আধুনিক ল্যাবরেটরি, নিয়োগ করা হচ্ছে টেকনিশিয়ান। এ বিষয়ে কাল, শুক্রবার পিএইচএফআই এবং বক্ষরোগ বিশেষজ্ঞ চিকিৎসা ফেডারেশনের সঙ্গে চুক্তি স্বাক্ষর করবেন পুর কর্তৃপক্ষ।
মশাবাহিত রোগ নিবারণে কলকাতা পুরসভার কাজের প্রশংসা করেছেন স্বয়ং মুখ্যমন্ত্রী। কলকাতার থেকে শিক্ষা নিয়ে অন্য পুরসভাগুলিকে ডেঙ্গি, ম্যালেরিয়া প্রতিরোধে সজাগ হতে বলেছেন। তবে রাজ্য সরকার বা পুর প্রশাসন যা-ই বলুন, পুর স্বাস্থ্য পরিষেবার উপরে ভরসা নেই বহু নাগরিকেরই। পুরসভার ল্যাব থেকে রক্ত পরীক্ষা করাতেও অধিকাংশের অনিচ্ছা। সেই তকমাই ঝেড়ে ফেলতে চায় পুরসভা।
পুরসভার স্বাস্থ্য-উপদেষ্টা তপনকুমার মুখোপাধ্যায় জানান, জাতীয় স্বাস্থ্য দফতরের রিপোর্ট অনুসারে মোট মৃত্যুর ৭০ ভাগ অসংক্রামিত রোগের কারণে। বাকিটা মশাবাহিত এবং অন্য সংক্রামিত রোগে। তাই বাসিন্দাদের সুবিধায় অসংক্রামিত রোগের প্রতি নজর দেওয়াও প্রয়োজন, বুঝেছেন পুরকর্তারা। ইতিমধ্যেই বিশেষজ্ঞদের নিয়ে ডায়াবেটিস সম্পর্কে প্রশিক্ষণ-পর্ব হয়েছে পুরসভায়। পুর চিকিৎসকেরা এখন স্বাস্থ্যকেন্দ্রে আসা রোগীদের ডায়াবেটিস ও রক্তচাপের চিকিৎসাও শুরু করেছেন।
দফতরের এক কর্তা জানান, গত ৪-৫ বছরে পুর-ল্যাবরেটরিগুলি উন্নত হয়েছে। প্রতি বরোয় হয়েছে ডেঙ্গি নির্ণয় কেন্দ্র। পরীক্ষা কেন্দ্রগুলিতে মশাবাহিত রোগাক্রান্তের পাশাপাশি ডায়াবেটিস, কার্ডিওভাস্কুলার রোগের পরীক্ষারও ব্যবস্থা রয়েছে। হচ্ছে লিপিড প্রোফাইল, ক্রিয়েটিনিন, থাইরয়েড পরীক্ষা। ডাক্তারদের কথায়, পরিকাঠামো থাকায় তা পুরোমাত্রায় ব্যবহারে জোর দেওয়া হচ্ছে।
তপনবাবু জানান, কলকাতায় দূষণ ক্রমশই বাড়ছে। ফল হিসেবে হাঁপানি ও সিওপিডি-তে আক্রান্তের সংখ্যাও পৃথিবীর মধ্যে ভারতে বেশি। সম্প্রতি পরিবেশ দফতর থেকে তেমনই রিপোর্ট দেওয়া হয়েছে পুরসভাকে। মেয়র শোভন চট্টোপাধ্যায় আবার পরিবেশ মন্ত্রীও। তাই পুর স্বাস্থ্য দফতর ওই সমস্যা মোকাবিলায় অনেকটাই আশাবাদী। মেয়র পারিষদ (স্বাস্থ্য) অতীন ঘোষ জানান, দেশের কয়েক জন বক্ষরোগ বিশেষজ্ঞ পুরসভায় আসছেন। তাঁরাই পুরসভার চিকিৎসকদের প্রশিক্ষণ দেবেন।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy