Advertisement
১৮ মে ২০২৪
KMC

KMC: নাগরিক সুরক্ষা নিয়ে ‘উদাসীন’ কর্মীরাই, পুর পর্যালোচনায় বিতর্ক

পুরসভার কর্তা-আধিকারিকদের হোয়াটসঅ্যাপ গ্রুপে নাগরিক সুরক্ষা সংক্রান্ত কোনও মেসেজ পোস্ট হলেও সংশ্লিষ্ট অফিসারদের থেকে সাড়া মিলছে না।

ফলে নাগরিক সুরক্ষা বিঘ্নিত হওয়ার পাশাপাশি, অনভিপ্রেত বা দুর্ঘটনা ঘটার আশঙ্কাও থাকছে।

ফলে নাগরিক সুরক্ষা বিঘ্নিত হওয়ার পাশাপাশি, অনভিপ্রেত বা দুর্ঘটনা ঘটার আশঙ্কাও থাকছে। ফাইল ছবি

নিজস্ব সংবাদদাতা
কলকাতা শেষ আপডেট: ২৪ অগস্ট ২০২২ ০৭:২৩
Share: Save:

অনেক ক্ষেত্রে নাগরিক সুরক্ষার মতো গুরুত্বপূর্ণ বিষয়েও পুরকর্তা-আধিকারিকদের একাংশের থেকে ঠিক মতো সাড়া মিলছে না। এই সংক্রান্ত খবর পেলেও তাঁরা উত্তর দিচ্ছেন না। অর্থাৎ বকলমে নাগরিক সুরক্ষার সঙ্গে সম্পর্কিত গুরুত্বপূর্ণ বিষয়ে পুর প্রশাসনের একাংশ সম্পূর্ণ ‘উদাসীন’। —এই অভিযোগ শহরের নাগরিকদের নয়, এই পর্যালোচনা খোদ পুর কর্তৃপক্ষেরই! যা সাম্প্রতিক সময়ে যথেষ্ট তাৎপর্যপূর্ণ বলে মনে করছে ওয়াকিবহাল মহল।

কারণ অনেকের মতে, সাম্প্রতিক কালে রাজ্য রাজনীতিতে ক্ষমতাসীন দলের ‘ভাবমূর্তি’ নিয়ে প্রশ্ন ওঠার পরিপ্রেক্ষিতে স্বচ্ছ ভাবমূর্তি তৈরির সংগঠিত পদক্ষেপের একটা অংশ হল পুর কর্তৃপক্ষের এই ‘আত্মবিশ্লেষণ’ বা ‘শুদ্ধিকরণ’ প্রক্রিয়া। প্রশাসনিক কাজকর্মে পুরকর্তা, আধিকারিকদের দায়বদ্ধতা মনে করিয়ে দিয়ে পরোক্ষে পুরসভা নিজস্ব ‘ভাবমূর্তি’ স্বচ্ছ রাখতে চাইছে বলেই মনে করা হচ্ছে।

পুর প্রশাসন সূত্রের খবর, অন্তর্বর্তী একটি নোটে পুর কর্তৃপক্ষ দ্ব্যর্থহীন ভাষায় জানিয়েছেন, পুরসভার কর্তা-আধিকারিকদের হোয়াটসঅ্যাপ গ্রুপে নাগরিক সুরক্ষা সংক্রান্ত কোনও মেসেজ পোস্ট হলেও সংশ্লিষ্ট ডিরেক্টর জেনারেল বা কন্ট্রোলিং অফিসারদের থেকে সাড়া মিলছে না। ফলে নাগরিক সুরক্ষা বিঘ্নিত হওয়ার পাশাপাশি, অনভিপ্রেত বা দুর্ঘটনা ঘটার আশঙ্কাও থাকছে। এ ক্ষেত্রে দেরি না করে সংশ্লিষ্ট ঘটনা কর্তৃপক্ষের নজরে আনার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। প্রসঙ্গত, জমা জলে বিদ্যুৎস্পৃষ্ট হওয়া, বিপজ্জনক বাড়ি ভেঙে বা গাছ উপড়ে দুর্ঘটনা-সহ একাধিক ক্ষেত্রে পুরসভার ভূমিকা নিয়ে অতীতে প্রশ্ন উঠেছে। বিশেষত বর্ষায় জমা জলে বিদ্যুৎস্পষ্ট হওয়ার ঘটনা প্রতি বছর ঘটেই চলেছে। একই ভাবে এমন ঘটনার পরে পুরসভা ও অন্য সংস্থার মধ্যে চাপানউতোর বা পুরসভার তরফে ঘটনা খতিয়ে দেখার আশ্বাসও রীতিতে পরিণত হয়েছে।

কিন্তু সাম্প্রতিক লিখিত নোটে বলা হয়েছে, বিপদের আশঙ্কা থাকা সংশ্লিষ্ট ‘পাবলিক ইউটিলিটি’ পুরসভার না হলেও তার দায়িত্ব পুরকর্তারা এড়াতে পারেন না। বরং ঘটনাটি জানার ২৪ ঘণ্টার মধ্যে সংশ্লিষ্ট ‘পাবলিক ইউটিলিটি’ যে সংস্থা বা দফতরের অধীনে, তাদের বিষয়টি জানাতে হবে। নোটের বয়ান অনুযায়ী— ‘সে কারণে পুরসভার সমস্ত অফিসারদের, বিশেষ করে পুরসভার মুখ্য ইঞ্জিনিয়ারিং দফতর (সিভিল) অধীনস্থ বরো এগজিকিউটিভ ইঞ্জিনিয়ারদের নাগরিক সুরক্ষাকে বিঘ্নিত করতে পারে, এমন কোনও ঘটনা দ্রুত কর্তৃপক্ষের নজরে আনার নির্দেশ দেওয়া হচ্ছে।’ প্রত্যাশিত ভাবে পুর কর্তৃপক্ষের এই অন্তর্বর্তী পর্যালোচনা বিতর্ক তৈরি করেছে। কারণ, নাগরিক সুরক্ষার সঙ্গে প্রাণহানি বা দুর্ঘটনার মতো গুরুত্বপূর্ণ প্রেক্ষিত জড়িয়ে রয়েছে। এমন ক্ষেত্রে হোয়াটসঅ্যাপ গ্রুপে মেসেজ পোস্টের পরেও পুরকর্তাদের একাংশের নীরব থাকা শুধু ‘পেশাদারিত্ব’ নয়, তাঁদের ‘সংবেদনশীলতা’ নিয়েও প্রশ্ন তুলছে। এমনই মত পুর প্রশাসনের একাংশের। এক পুরকর্তার কথায়, ‘‘সব থেকে বড় কথা, এই বিশ্লেষণ বাইরের কারও নয়। এটি খোদ পুর কর্তৃপক্ষের।’’

ফলে প্রশাসনিক কাজকর্মে কর্তা, আধিকারিকদের নিজস্ব দায়িত্ব মনে করানোর মাধ্যমে পরোক্ষে পুরসভার নিজস্ব ‘ভাবমূর্তি স্বচ্ছ রাখতে এই ‘শুদ্ধিকরণ’ প্রক্রিয়া কি না— আপাতত এই প্রশ্নেই সরগরম পুর মহল।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

অন্য বিষয়গুলি:

KMC Municipal Service
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE