বিপদঘণ্টি বাজিয়ে চোখ খুলে দিয়েছে দমদমের এক রেস্তোরাঁ! এক ক্রেতার উচ্ছিষ্ট যে নির্দ্বিধায় অপর ক্রেতার প্লেটে সাজিয়ে দেওয়া যায়, ধারণার বাইরে ছিল অভিযানকারী আধিকারিকদেরই। এ বার তাই শহরের রেস্তোরাঁয় ভেজাল ধরার অভিযানের পাশাপাশি এঁটো ও বাসি খাবারের কী গতি হচ্ছে, তাও নজরে রাখবে কলকাতা পুরসভা।
পুরকর্তারা জানিয়েছেন, পুরসভা বছরখানেক ধরেই শহর জুড়ে ভেজাল খাবার রুখতে অভিযান চালিয়ে যাচ্ছে। অভিযানে নেমে টন টন ভেজাল খাবার, কাটা ফল ফেলেও দেওয়া হয়েছে। কিন্তু রেস্তোরাঁর এঁটো খাবারও যে বিক্রি হতে পারে, তা ভাবতে পারেননি তাঁরা। স্বাস্থ্য দফতরের এক আধিকারিক জানান, এত দিন তাঁরা শহরের বিভিন্ন দোকানের তৈরি খাবারে ক্ষতিকারক কোনও রং বা রাসায়নিক মেশানো হচ্ছে কি না, তা দেখতেন। এ বার থেকে উচ্ছিষ্টের বিষয়েও খোঁজ নেওয়া হবে।
পুরসভা সূত্রে খবর, কলকাতায় কয়েক হাজার ছোটবড় রেস্তোরাঁ রয়েছে। কিছু রেস্তোরাঁর আবার দেশজোড়া নাম। সেই সব দোকানের হেঁশেলেও কি ঢুকবে পুরসভা?
ভেজাল দফতরের এক ইনস্পেক্টর বলেন, ‘‘মানুষ পয়সা দিয়ে ভাল মানের খাবার পাচ্ছেন কি না, তা দেখাই তো আমাদের কাজ। প্রয়োজনে যে কোনও রেস্তোরাঁর হেঁশেলে ঢুকতে হতে পারে।’’ কিন্তু এত বড় শহরে অভিযান চালানোর মতো পরিকাঠামো কি পুরসভার আছে?
স্বাস্থ্য দফতরের মেয়র পারিষদ অতীন ঘোষ জানান, ভেজাল প্রতিরোধে পুরসভায় যথেষ্ট সংখ্যক ইনস্পেক্টর, কর্মী নেই। এ নিয়ে ইতিমধ্যেই রাজ্য প্রশাসনের কাছে আবেদন জানানো হয়েছে। পুরসভার এক পদস্থ কর্তা জানান, কেন্দ্রীয় সরকার এ নিয়ে সব রকম সহায়তার আশ্বাস দিয়েছে। টাকাও বরাদ্দ করেছে। কিন্তু রাজ্যের টালবাহানায় তা এখনও কাজে লাগানো যায়নি।
তবে ওই কর্তার আশ্বাস, কর্মীর অভাব সত্ত্বেও পুর-প্রশাসন ভেজাল প্রতিরোধে অভিযান চালাবে। দমদমের মতো ঘটনা কলকাতায় যাতে না ঘটে, তার জন্য শহরের নানা রেস্তোরাঁর হেঁশেলে খুব শীঘ্রই হানা দেবে পুরসভার দল। যদিও এক কাউন্সিলর জানান, বেশ কিছু নামী রেস্তোরাঁর মাথায় শাসক দলের নেতাদের হাত রয়েছে। সেখানে কি ঢুকতে পারবেন পুর প্রতিনিধিরা? পুরবোর্ডের এক কর্তা জানান, খোদ মুখ্যমন্ত্রী চান এ সব বন্ধ করতে। তাই পুর প্রশাসন এ বার কোমর বেঁধে ভেজাল ও উচ্ছিষ্ট খাবার বিক্রির সব রকম প্রচেষ্টা রুখবে।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy