শব্দদূষণ সমস্যার সুরাহা হচ্ছে না। প্রতীকী ছবি।
শব্দদূষণ রোধে রাজ্য সরকারের তরফে পদক্ষেপ করা হলেও তা পর্যাপ্ত কি না, সেটা সংশয়ের ঊর্ধ্বে নয়। শব্দদূষণ সংক্রান্ত মামলায় সোমবার এমনই মন্তব্য করল জাতীয় পরিবেশ আদালত। এ দিন আদালতে ওই মামলা ছিল।তারই রায়ে আদালত জানিয়েছে, বারংবার নির্দেশ দেওয়ার পরেও শব্দদূষণ সমস্যার সুরাহা হচ্ছে না।
সংশ্লিষ্ট মামলায় রাজ্য সরকার হলফনামা দিয়ে জানিয়েছিল, শব্দদূষণ রোধে সচেতনতা প্রচার, সাউন্ড লিমিটর বিতরণ (শব্দের মাত্রা নিয়ন্ত্রণের যন্ত্র), নির্দিষ্ট এলাকায় শব্দের মাত্রা পরিমাপের ব্যবস্থা-সহ (সাউন্ড মনিটরিং সিস্টেম) একাধিক পদক্ষেপ করা হয়েছে। যার পরিপ্রেক্ষিতে পরিবেশ আদালতের মন্তব্য, শুধুমাত্র ব্যবস্থার আয়োজন করাটাই যথেষ্ট নয়। সেই ব্যবস্থা ঠিক মতো কাজ করছে কি না, নির্দিষ্ট সময় অন্তর তার মূল্যায়নেরও প্রয়োজন রয়েছে। অন্ততপক্ষে ছ’মাস অন্তর শব্দদূষণ প্রতিরোধমূলক ব্যবস্থার মূল্যায়ন করা দরকার বলেও মন্তব্য করেছে আদালত।
প্রসঙ্গত, ২০২০ সালের সেপ্টেম্বরে শব্দদূষণ সংক্রান্ত মূল মামলাটির নিষ্পত্তি করে দিয়েছিল পরিবেশ আদালত। শব্দবিধি পালনের জন্য পুলিশ-প্রশাসনকে প্রয়োজনীয় নির্দেশও দিয়েছিল। কিন্তু তার পরেও একই ভাবে শব্দদূষণ হয়ে চলেছে বলে ফের মামলা দায়ের হয় ২০২১ সালে। আদালতের নির্দেশ অমান্য করে যানবাহন, লাউডস্পিকার, ডিজে-সহ একাধিক উৎস থেকে নির্গত শব্দের জেরে যে সাধারণ মানুষের প্রাণ ওষ্ঠাগত, সে কথা জানানো হয় মামলার আবেদনে। এ-ও বলা হয়, মাইক্রোফোন-সহ সমস্ত ধরনের শব্দযন্ত্রে সাউন্ড লিমিটর লাগাতে হবে, সেই নির্দেশ বাধ্যতামূলক করার পরেও তা ধারাবাহিক ভাবে লঙ্ঘিত হচ্ছে। যার পরিপ্রেক্ষিতে রাজ্য সরকার, রাজ্য পুলিশ ও রাজ্য দূষণ নিয়ন্ত্রণ পর্ষদের কাছ থেকে হলফনামার আকারে জবাবদিহি চায় আদালত।
সংশ্লিষ্ট সব পক্ষের হলফনামা খতিয়ে দেখে আদালত তার রায়ে উল্লেখ করে, শব্দদূষণ এখন আর নিছক সমস্যার মধ্যে সীমাবদ্ধ নেই। বরং, তা স্বাস্থ্যের পক্ষে রীতিমতো বিপজ্জনক হয়ে উঠেছে। ঘুম, শোনার ক্ষমতা, কথা বলা, মানসিক ও শারীরিক স্বাস্থ্যের উপরে শব্দদূষণের প্রভাব তো রয়েছেই। এমনকি, লাগাতার বিকট শব্দের জেরে মানুষ উন্মাদ পর্যন্ত হতে পারে। এই পরিস্থিতির মোকাবিলায় রাজ্য পরিবেশ দফতর ও রাজ্য পুলিশের মধ্যে সমন্বয় গড়ে তোলা প্রয়োজন বলে জানিয়েছে পরিবেশ আদালত। সেই সমন্বয়ের ভিত্তিতে দূষণ-রোধে কী কী করণীয়, তা নিয়ে সংশ্লিষ্ট সব পক্ষের মধ্যে নিয়মিত আলোচনা প্রয়োজন বলেও জানিয়েছে তারা। একই সঙ্গে আদালত মন্তব্য করেছে, এই সক্রিয়তা রাজ্যের প্রতিটি জেলা ও প্রধান শহরগুলিতেও প্রয়োজন।
এই মামলার আবেদনকারী সুভাষ দত্ত বলেন, ‘‘আদালতের নির্দেশের পরেও শব্দবিধি লঙ্ঘিত হচ্ছে ধারাবাহিক ভাবে। ফলে, নিয়ম লঙ্ঘনের বিষয়টি আরও গুরুত্ব সহকারে দেখা দরকার। তবে এ ব্যাপারে টাস্ক ফোর্স গঠন করে শুধু খাতায়কলমে নয়, রাস্তায় নেমে শব্দদূষণ প্রতিরোধ করা প্রয়োজন।’’
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy