এ বার ছিপ ফেলে মাছ ধরে খাওয়ার বাঙালি বিলাসকে উস্কে দিয়ে পর্যটনের প্যাকেজ।
আমুদে বাঙালির বিলাসের সঙ্গে সমার্থক মধ্যযুগের সেই চেনা বাক্য, ‘মৎস্য মারিব খাইব সুখে।’ এক সময়ে খাল-বিল-নদী-নালা-পুকুরে ভরা বঙ্গদেশে বাঙালির অবসর বিনোদনের অন্যতম ছিল মাছ ধরা। তার পরে সেই মাছ বাড়িতে এনে রান্না হত, কখনও বা চড়ুইভাতি। কিন্তু জলাশয়ের সংখ্যা দিন দিন কমতে থাকায়, বিশেষত শহরাঞ্চলে নির্মাণের জন্য পুকুরের পর পুকুর ভরাট হয়ে যাওয়ায় মাছ ধরে খাওয়ার শখ যেন শুধুই স্মৃতি।
সেই স্মৃতিকেই এ বার খানিকটা হলেও বাস্তবে ফিরিয়ে আনছে পশ্চিমবঙ্গ পর্যটন উন্নয়ন নিগম। এক বেলার জন্য আকর্ষক পর্যটনের মোড়কে। যেখানে নদীতে মাছ ধরার সঙ্গে সঙ্গে খাওয়া-ঘোরাফেরার সঙ্গে থাকছে মৎস্যজীবী ও তাঁদের পরিবারের সঙ্গে নাচগানে মেতে থাকার সুযোগও। নাম ‘গো ফিশিং’।
দুবাইয়ে পর্যটকদের জন্য এমন প্যাকেজের বন্দোবস্ত পুরনো। সারা দিন গায়ে রোদ মেখে, টাটকা বাতাস নিয়ে সেখানে সমুদ্রে মাছ ধরার মজাই আলাদা। এ রাজ্যে অবশ্য এই প্রথম। এখানে ‘গো ফিশিং’-এর সমস্ত ব্যবস্থা করা হবে নামখানায় হুগলি নদীতে।
এ প্রসঙ্গে রাজ্যের পর্যটনমন্ত্রী গৌতম দেব বলেন, ‘‘মাছ ধরা বাঙালির পুরনো শখগুলির মধ্যে একটি। তা পর্যটনের মোড়কে উপস্থাপনা করছি।’’
প্যাকেজ অনুযায়ী, সকালে বাস ছাড়বে বি বা দী বাগের ট্যুরিজম সেন্টার থেকে। বাসেই দেওয়া হবে সকালের খাবার। তরতাজা হতে ডায়মন্ড হারবারে সরকারি অতিথিশালায় খানিক বিশ্রাম। এর পরেই নামখানা পৌঁছে লঞ্চে চাপা। ওই লঞ্চে স্থানীয় মৎস্যজীবীরা থাকবেন জাল নিয়ে। থাকবে মাছ ধরার ছিপ, বড়শি, হুইল, চার, টোপও। জলবিহার করতে করতে জেলেদের মাছ ধরা যেমন দেখা যাবে, তেমনি পর্যটকেরাও চাইলে ছিপ দিয়ে মাছ ধরতে পারবেন। দুপুরে লঞ্চেই খাওয়া। তবে পর্যটন উন্নয়ন নিগমের পাকা রাঁধুনিরা নন, সে সব পদ রাঁধবেন মৎস্যজীবীদের ঘরণীরা— এক্কেবারে নিজস্ব প্রণালীতে। পরে আর এক দফা মাছ ধরার মজা। মাছ ধরে তা ভেজে খাওয়া হবে লঞ্চেই। সঙ্গে নাচগানের মাধ্যমে মৎস্যজীবীদের সংস্কৃতির সঙ্গে পরিচিত হওয়ারও সুযোগ থাকছে। নামখানায় লঞ্চ ফিরবে বিকেলে। সেখান থেকে বাসে কলকাতা।
নিগমের এক কর্তা বলেন, ‘‘আগামী বছর ৭ জানুয়ারি প্রথম যাত্রা। তার পরে ২১ ও ২৮ জানুয়ারি। কেমন সাড়া মিলছে, তা দেখেই দিন আরও বাড়ানো হবে কি না, সেই সিদ্ধান্ত নেওয়া হবে।’’
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy