গোটা দেশ জুড়েই চালু হয়েছে এই ওয়েবপেজ। প্রতীকী ছবি।
একসঙ্গে থাকবেন স্থির করেছেন দুই বান্ধবী। একটি বাড়ি যখন প্রায় পছন্দ, হঠাৎ সন্দেহ হল মালিকের। দুই তরুণীর প্রেমের সম্পর্ক জানতে পেরে আর ভাড়া দেননি বাড়িটি। অভিযোগ, সেই ঘটনা মুখে মুখে ছড়াতে দক্ষিণ শহরতলির একটি বিস্তীর্ণ অঞ্চলে বাড়ি পেতে সমস্যা হয় ওই যুগলের। কোন আইনজীবীর কাছে গেলে সাহায্য মিলবে, তা বুঝতেও গড়াল বছর।
বাড়ি থেকে ছেলেকে বিয়ের জন্য চাপ দেওয়া হচ্ছিল বেশ কিছু বছর ধরে। শেষে যখন কোনওমতে জানালেন তিনি সমকামী, সঙ্গে সঙ্গে নিয়ে যাওয়া হল মনোবিদের কাছে। সেখানে ঘটল আরও বড় বিপত্তি। মনোবিদও তাঁর মনটা বুঝলেন না বলে বক্তব্য যুবকের। কিন্তু কোন মনোবিদের কাছে গিয়ে যে একটু সাহায্য মিলবে, তাও জানা ছিল না তাঁর।
রূপান্তরকামী এক পুরুষকে শিকার হতে হয়েছে যৌন হেনস্থার। থানায় অভিযোগ দায়ের তো দূর, তাঁর সমস্যা বোঝাতে গিয়েই জুটল হাজার টিপ্পনী। অভিয়োগ তো দায়ের হলই না, বরং মনোকষ্ট বেড়ে রীতিমতো অবসাদগ্রস্ত হয়ে পড়লেন তিনি। কার কাছে যে যাবে, কে বলে দেবে?
এ তো গেল মাত্র তিনটি ঘটনা। এমন সমস্যার উদাহরণ রয়েছে ভুরি ভুরি। ফলে সমকামী ও রূপান্তরকামী সমাজের বহু মানুষকেই এমন বহু সমস্যার মুখোমুখি হতে হয় নিত্যদিন। শুধু এ শহর নয়, গোটা দেশ জুড়েই। তাঁদের সমস্যা কে বুঝবে, তা-ই অনেক ক্ষেত্রে বুঝে উঠতে হাত থেকে বেরিয়ে যায় বহু মূল্যবান সময়। এর সমাধান হিসেবেই এ বার চালু হয়েছে একটি ওয়েবপেজ। কলকাতা-সহ দেশের মোট ৩০টি শহরের কোথায় কোথায় গিয়ে যৌনতার নিরিখে প্রান্তিক মানুষেরা পেতে পারেন সমমনস্ক চিকিৎসক, মনোবিদ, আইনজীবীর সাহায্য— সবেরই সন্ধান থাকছে সেখানে। তারই সঙ্গে থাকছে সমকামী ও রূপান্তরকামী সমাজের লড়াই নিয়ে নানা আলোচনা।
যৌনতার নিরিখে প্রান্তিক মানুষদের অধিকার নিয়ে কাজ করা একটি সংস্থার তরফে পবন ঢাল বলেন, ‘‘গোটা দেশেই সামাজিক নানা সমস্যায় পড়েন সমকামী ও রূপান্তরকামীরা। কলকাতা অনেক শহরের তুলনায় কিছুটা সহানুভূতিশীল হলেও অসুবিধে কম নয় এখানেও।’’ ওয়েবপেজের আনুষ্ঠানিক সূচনার জন্য বেঙ্গালুরু থেকে শহরে এসেছেন সমাজকর্মী বৃন্দা। তিনি জানান, অন্য শহরের তুলনায় কলকাতা কিছুটা বেশি সচেতন সমকামী ও রূপান্তরকামীদের লড়াই নিয়ে। এখানে বেশ কয়েক জন চিকিৎসক-আইনজীবী তাঁদের নিয়ে কাজ করেন। তবে দেশের অন্য প্রান্তে বসে তা তো জানা সম্ভব নয়। এক জায়গায় সেই সব তথ্য পাওয়া গেলে অনেকেরই কাজে লাগবে। তা ছাড়া, পেজটি দেখে আরও বেশি মানুষ এই কাজে এগিয়েও আসতে পারেন বলে আশা তাঁদের।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy