অঘটন: হাসপাতালে মতিলাল দাস। (ইনসেটে) ভাঙাচোরা হুইলচেয়ারটি। সোমবার। ছবি: সুদীপ্ত ভৌমিক
দু’টো পা হাঁটুর নীচ থেকে কাটা। ঘোরাঘুরির জন্য একমাত্র ভরসা হুইলচেয়ার। কিন্তু বিশ্ব প্রতিবন্ধী দিবসে সেই হুইলচেয়ারই দুর্ঘটনায় দুমড়ে-মুচড়ে গেল। ফলে গত কয়েক বছর ধরে যে চেয়ার নিয়ে ঘোরাঘুরি করতেন, ফুটপাতের দোকান চালাতেন, এখন সেটি না থাকায় কী করে যে তাঁর চলবে, সেটাই ভাবাচ্ছে বছর ষাটের মতিলাল দাসকে।
সোমবার সকালে খন্না মোড়ের কাছে হুইলচেয়ারে করে রাস্তার ধার দিয়ে বাড়ি ফিরছিলেন মতিলালবাবু। সেই সময়ে ২৩০ রুটের একটি বাস বেপরোয়া গতিতে এসে তাঁকে ধাক্কা মেরে পালানোর চেষ্টা করে। ধাক্কায় হুইলচেয়ার থেকে ছিটকে রাস্তায় পড়ে যান মতিলালবাবু। পাশেই নন্দনবাগানে তাঁর বাড়ি। খবর পেয়ে ছুটে আসেন স্ত্রী ও পড়শিরা। মতিলালবাবুকে উদ্ধার করে আর জি কর মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয়। তাঁর স্ত্রীর কথায়, ‘‘পড়ে গিয়ে মাথায় চোট লেগেছে। সিটি স্ক্যান করাতে হয়েছে। রিপোর্ট এলে জানা যাবে, কী হয়েছে।’’
দুর্ঘটনার জেরে আতঙ্কিত হয়ে পড়েন মতিলালবাবু। ভয় পেয়ে যান তাঁর স্ত্রীও। তিনি বলেন, ‘‘একে পা নেই। তার উপরে এই দুর্ঘটনা। প্রাণে যে বেঁচে গিয়েছেন, সেটাই রক্ষে।’’ কিন্তু হুইলচেয়ারটি পুরো ভেঙে যাওয়ায় এর পরে মতিলালবাবু যে অসুবিধায় পড়বেন, সেটাই ভাবাচ্ছে তাঁর স্ত্রীকে। তিনি জানান, নন্দনবাগানের একচিলতে ঘরে দু’জনে থাকেন। ছেলেরা কাজের সূত্রে রাজ্যের বাইরে। মানিকতলার কাছেই ফুটপাতে জামাকাপড় বিক্রি করেন মতিলালবাবু। সেই আয়ে কোনও রকমে সংসার চলে।
এ দিনের দুর্ঘটনার পরে স্থানীয়েরা বাসটিকে আটকে রাখলেও চালক পালিয়ে যান। অভিযোগ, খন্না মোড়ের কাছে বেশ কিছু বেসরকারি রুটের বাস প্রতিদিনই রেষারেষি করতে গিয়ে গতি বাড়িয়ে দেয়। এ দিনও বেপরোয়া ভাবে বাস চালানোর জন্যই এই দুর্ঘটনা।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy