Advertisement
৩০ এপ্রিল ২০২৪
Hawkers

তিনটি বাজার থেকে ২০ জন! বাকি হকারেরা কি আঁধারেই

অতীতে কলকাতা পুরসভা শহরে একাধিক বার হকার সমীক্ষা শুরু করেও ব্যর্থ হয়েছে বলে অনেকেই মনে করেন। নতুন এই পদ্ধতি সেই আশঙ্কা ফের ঘনীভূত করছে।

ফাইল ছবি।

ফাইল ছবি।

নিজস্ব সংবাদদাতা
কলকাতা শেষ আপডেট: ১৭ ফেব্রুয়ারি ২০২৩ ১৩:৪৭
Share: Save:

মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের নির্দেশ মতো শংসাপত্র দেওয়ার পাশাপাশি হকারদের দেওয়া হবে স্টলের নম্বরও। শহরের তিনটি বাজার থেকে ২০ জন হকারকে পুর কর্তৃপক্ষের বাছাই করার এই সিদ্ধান্তে ফের প্রশ্ন উঠতে শুরু করেছে। গত বছরই গড়িয়াহাট, নিউ মার্কেট এবং হাতিবাগান বাজারের যথাক্রমে ২৪০০, ২০০০ এবং ১৪০০ জন হকারের নাম নথিভুক্ত করা হয়েছিল। কথা ছিল, ফুটপাতের এক-তৃতীয়াংশ জায়গা হকারদের জন্য রেখে বাকি অংশ দখলমুক্ত করা হবে। তার পরেই দেওয়া হবে হকার শংসাপত্র (ভেন্ডিং সার্টিফিকেট)। প্রশ্ন উঠেছে, কার্যক্ষেত্রে নতুন বছরের প্রথম দেড় মাস চুপচাপ থাকার পরেও হকার শংসাপত্র এবং স্টল নম্বর দেওয়ার ক্ষেত্রে ২০ জনকে বাছাই করা হল কিসের ভিত্তিতে? বাকি ৫,৭৮০ জনের ভবিষ্যৎ-ই বা কী?

অতীতে কলকাতা পুরসভা শহরে একাধিক বার হকার সমীক্ষা শুরু করেও ব্যর্থ হয়েছে বলে অনেকেই মনে করেন। নতুন এই পদ্ধতি সেই আশঙ্কা ফের ঘনীভূত করছে। গোটা শহরে হকার সমীক্ষা শেষ হওয়ার আগেই পুরসভা যে পদ্ধতিতে ২০ জন হকারকে স্টল নম্বর দিতে চলেছে, তা নিয়েও বিভ্রান্তি বাড়ছে। প্রশ্ন, মুখ্যমন্ত্রীর নির্দেশ বলেই কি কর্তৃপক্ষ তড়িঘড়ি ২০ জনকে শংসাপত্রের সঙ্গে স্টল নম্বরও দিতে চলেছেন?

বৃহস্পতিবার মেয়র পারিষদ (হকার পুনর্বাসন কমিটি) দেবাশিস কুমার পুরভবনে নিজের অফিসে পুর সচিব-সহ অন্য পদস্থ আধিকারিকদের নিয়ে বৈঠক করেন। কী পদ্ধতিতে হকারদের স্টল নম্বর দেওয়া হবে, তা নিয়ে আলোচনা হয়। স্থির হয়, কোন হকার কতটা জায়গায় বসবেন, তা সংশ্লিষ্ট হকারের স্টল নম্বরে লেখা থাকবে।

দীর্ঘদিন ধরে হকারদের শংসাপত্র বিলির কাজ শুরু না হওয়ায় ক্ষোভ বাড়ছে তাঁদের মধ্যে। তার উপরে স্টল নম্বর ও জায়গার মাপ নির্ধারণে মুখ্যমন্ত্রীর নির্দেশ পাওয়ায় পুরসভার ‘চাপ’ বেড়েছে। পুর আধিকারিকদের আশঙ্কা, হকারদের তড়িঘড়ি স্টল নম্বর দিতে গিয়ে আগামী দিনে এই প্রক্রিয়া ‘জগাখিচুড়ি’ হতে পারে। নিয়ম মতো শংসাপত্র পাওয়া হকারদের নাম এবং স্টল নম্বর পুরসভার খাতায় নথিভুক্ত থাকবে। বছরে এক বার ‘ফি’ দেবেন হকারেরা।

‘হকার সংগ্রাম কমিটি’র সাধারণ সম্পাদক শক্তিমান ঘোষ মনে করেন, ‘‘স্টল নম্বর দেওয়ার নির্দিষ্ট পদ্ধতি রয়েছে। সারা শহরের সমীক্ষার কাজ শেষ না-করে প্রথম ২০ জন

হকারকে স্টল নম্বর দিলে ওই সব হকার ও পুরসভা ভবিষ্যতে সমস্যায় পড়বেন।’’ হকার সংগ্রাম কমিটির যুগ্ম সম্পাদক দেবাশিস দাসের কথায়, ‘‘স্টল নম্বর দিতে গেলে নিয়ম মেনে দেওয়া বাধ্যতামূলক। গড়িয়াহাট, নিউ মার্কেট ও হাতিবাগান বাজারের ২০ জনকে প্রথমেই স্টল নম্বর দেওয়া হলে পরে ওই সব হকারদের পাশের স্টল নম্বর দিতেই বিভ্রান্তি তৈরি হবে। পাশাপাশি স্টলের নম্বরেও মিল থাকবে না।’’

দেবাশিস কুমারের অবশ্য দাবি, কলকাতায় যেমন সব পিন কোড পাশাপাশি নেই, তেমনই হকারদের সব স্টল পর পর না থাকতেই পারে। বাকি হকারদের প্রসঙ্গে তাঁর বক্তব্য, বিষয়টা ভেন্ডিং কমিটির সিদ্ধান্তে হবে। পুরসভা সূত্রের খবর, কমিটির সমীক্ষা রিপোর্ট বুধবার জমা পড়েছে। যেখানে নিউ মার্কেটের ফুটপাত ও রাস্তার বেহাল অবস্থার কথা বলা হয়েছে।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

অন্য বিষয়গুলি:

hawkers
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE