Advertisement
১৮ মে ২০২৪
Waterlogged

শেষ হয়নি নিকাশির কাজ, বৃষ্টির জল নামল না এক দিন পরেও

কলকাতা পুরসভার নিকাশি দফতরের আধিকারিকেরা জানিয়েছেন, রবিবার রাতে শহরে বৃষ্টিপাতের গড় পরিমাণ ছিল ৮৪ মিলিমিটার।

ভোগান্তি: সোমবার বিকেলেও  জল নামেনি আমহার্স্ট স্ট্রিট থেকে। ছবি: সুমন বল্লভ

ভোগান্তি: সোমবার বিকেলেও জল নামেনি আমহার্স্ট স্ট্রিট থেকে। ছবি: সুমন বল্লভ

নিজস্ব সংবাদদাতা
কলকাতা শেষ আপডেট: ১৪ জুলাই ২০২০ ০১:৪৭
Share: Save:

শহরের বেশ কিছু অংশ বর্ষায় ভাসতে পারে, সেই ইঙ্গিত আগেই ছিল। রবিবার রাতে টানা এক ঘণ্টার বৃষ্টিতে উত্তর এবং দক্ষিণ কলকাতায় বহু জায়গায় যে জল জমেছিল, তা দিনভর রয়ে গেল সোমবারেও। পাম্প চললেও নিকাশির সংস্কারে যে সমস্যা ছিল এই বৃষ্টিতে তা ফের প্রকট হল।

কলকাতা পুরসভার নিকাশি দফতরের আধিকারিকেরা জানিয়েছেন, রবিবার রাতে শহরে বৃষ্টিপাতের গড় পরিমাণ ছিল ৮৪ মিলিমিটার। রাত ৮টা থেকে ৯টা পর্যন্ত মুষলধারে বৃষ্টি হয়। তাতেই জল জমে যায় মধ্য ও উত্তর কলকাতার চিত্তরঞ্জন অ্যাভিনিউ সংলগ্ন মুক্তারামবাবু স্ট্রিট, তারক প্রামাণিক রোড, কলুটোলা, কেশব সেন স্ট্রিট, ঠনঠনিয়া, বিধান সরণি, আমহার্স্ট স্ট্রিট, মানিকতলার একাংশ এবং পামারবাজার এলাকায়। দক্ষিণ কলকাতায় মূলত জল জমেছে খিদিরপুর এলাকার রমানাথ পাল রোড, গোপাল ডাক্তার রোড, একবালপুর লেন-সহ বেশ কিছু এলাকায়। এ ছাড়াও ধাপার বেশ কিছু নিচু এলাকাতেও জল জমে রয়েছে। অসুবিধায় পড়েছেন সেখানকার বাসিন্দাদের অনেকেই। বহু জায়গাতেই হাঁটু জল ঠেলে তাঁদের যাতায়াত করতে হয়। বেশ কিছু রাস্তায় জমা জল দ্রুত সরছে না বলে পুরসভার কন্ট্রোল রুমে অভিযোগও এসেছে।

কলকাতা পুরসভার নিকাশি দফতরের হিসেব অনুযায়ী, রবিবার উত্তর কলকাতার মানিকতলা, পামার ব্রিজ, ঠনঠনিয়া, ধাপা লকগেট এবং উল্টোডাঙা অঞ্চলে বৃষ্টির পরিমাণ ছিল যথাক্রমে ৮৪, ১০৪, ১০৩, ৯২ এবং ৭০ মিলিমিটার। পুর কর্তৃপক্ষ জানান, দক্ষিণ কলকাতার বালিগঞ্জ, কালীঘাট, যোধপুর পার্ক এবং মোমিনপুর পাম্পিং স্টেশনে যথাক্রমে ৬২, ৬১, ৬২ এবং ৬১ মিলিমিটার বৃষ্টি হয়। মূল দক্ষিণ কলকাতায় উত্তরের চেয়ে বৃষ্টি কম হওয়ায় জল দাঁড়ানোর সমস্যা হয়নি।

কলকাতা পুরসভার প্রশাসকমণ্ডলীর সদস্য তথা নিকাশি দফতরের প্রাক্তন মেয়র পারিষদ তারক সিংহ বলেন, “রবিবার শহরে গড়ে ৮৮ মিলিমিটার বৃষ্টি হয়েছে। কোনও কোনও অঞ্চলে ১০০ মিলিমিটারের বেশি বৃষ্টি হয়েছে। শহরের বেশির ভাগ জায়গা থেকেই সোমবার সকালের দিকে জল নেমে গিয়েছে। তবে কিছু জায়গায় নিকাশির সমস্যা রয়েছে। তার ফলেই জল নামতে দেরি হচ্ছে।’’

সমস্যা কোথায়? পুরসভা সূত্রের খবর, চিত্তরঞ্জন অ্যাভিনিউ সংলগ্ন অঞ্চল এমনিতেই নিচু। তা ছাড়াও, মুক্তারামবাবু স্ট্রিট-সহ সংলগ্ন অঞ্চলে নিকাশির লাইনে সমস্যা রয়েছে। ভূগর্ভস্থ নিকাশি নালার সঙ্গে একটি পানীয় জলের পাইপলাইন থাকায় সেখানে বৃষ্টির জল যাওয়ার জন্য যতটা পরিসর থাকা প্রয়োজন, তা নেই। তার জেরেই জল নামতে সমস্যা হচ্ছে। এই প্রকল্পে প্রযুক্তিগত সমস্যা থাকার ফলে নিকাশির সংস্কারেও দেরি হচ্ছে। কাজ বাকি রয়েছে ঠনঠনিয়া পাম্পিং স্টেশনেও। একই ভাবে, খিদিরপুর এলাকায় লকডাউনের জেরে আটকে গিয়েছে ভূগর্ভস্থ নিকাশির সংস্কারের কাজ। কবিতীর্থ এলাকায় একটি পাম্পিং স্টেশন তৈরির প্রকল্পও শেষ হয়নি। এ ছাড়া, গোটা শহর জুড়েই ভূগর্ভস্থ নিকাশি নালার পলি তোলা শুরু করতে দেরি হওয়ায় জল নামতে দেরি হচ্ছে।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

অন্য বিষয়গুলি:

Waterlogged Monsoon Drainage System
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE