Advertisement
২২ মে ২০২৪
Poila Baisakh Special

Poila Baisakh Special: পয়লা বৈশাখে বিক্রিবাটা কম হলেও, দু’বছর পরে হালখাতায় ফিরে খুশি বইপাড়া

নববর্ষের দিন বিকেলের দিকে সাধারণত ভিড়ে গিজগিজ করে কলেজ স্ট্রিট বইপাড়া। এ বার কিছু মানুষ এলেও আগের সেই ভিড়টা ছিল না।

প্রতীকী ছবি।

আর্যভট্ট খান
কলকাতা শেষ আপডেট: ১৬ এপ্রিল ২০২২ ০৭:০২
Share: Save:

অতিমারির দাপটে গত দু’বছরে তলানিতে ঠেকেছিল ব্যবসা। প্রবল আর্থিক সঙ্কটে পড়েছিলেন কলেজ স্ট্রিট বইপাড়ার ছোট প্রকাশক ও ব্যবসায়ীরা। করোনার সেই দাপট অনেকটা কমে যাওয়ায় এ বছর পয়লা বৈশাখে ফের নিজেদের পসরা সাজিয়ে বসেছিলেন তাঁরা। কিন্তু দিনের শেষে তাঁদের অধিকাংশই জানালেন, করোনা কমলেও নববর্ষের কলেজ স্ট্রিটে আগের ছবি এ বারেও ফিরে আসেনি। ব্যবসা যতটা জমবে বলে তাঁরা আশা করেছিলেন, ততটা জমেনি।

বছরের শুরুটা খুব আশাব্যঞ্জক না হলেও এ বার অন্তত নববর্ষটুকু যে পালন করা গেল, তাতেই খুশি সকলে। প্রকাশক ও বই ব্যবসায়ীরা জানাচ্ছেন, এ বারের নববর্ষে অন্তত গত দু’বছরের মতো দোকানের শাটার নামিয়ে ঘরে বসে থাকতে হয়নি। দোকান খুলতে পারায় কিছু বিক্রিবাটা হয়েছে। হালখাতাও করা গিয়েছে।

কলেজ স্ট্রিট সংলগ্ন বঙ্কিম চ্যাটার্জি স্ট্রিটের বেশ কিছু বই ও খাতাপত্রের দোকান এ দিন ফুল দিয়ে সাজানো হয়েছিল। এমনই একটি দোকানের মালিক বললেন, ‘‘এত বড় একটা অতিমারির পরে সব কিছু খুব দ্রুত ঠিক হয়ে যাবে, এমনটা আশা করিনি। তবে এ বার ফের আগের মতো হালখাতা করব বলেই দোকান ফুল দিয়ে সাজিয়েছি। পাইকারি ক্রেতাদের অনেকেই আজ আসেননি। ওঁরা এসে কিছু বকেয়া শোধ করলে সুবিধা হত।’’ তিনি জানালেন, ক্রেতাদের এ দিন লাড্ডুর বাক্স ও ঠান্ডা শরবত দিয়ে আপ্যায়ন করেছেন।

নববর্ষের দিন বিকেলের দিকে সাধারণত ভিড়ে গিজগিজ করে কলেজ স্ট্রিট বইপাড়া। এ বার কিছু মানুষ এলেও আগের সেই ভিড়টা ছিল না। কোনও কোনও প্রকাশকের মতে, ভিড় কম হওয়ার আর একটি কারণ অত্যধিক গরম। কারণ, রোদের তাপ এতটাই ছিল যে, লেখক-সাহিত্যিকেরাও অনেকে বিকেলে রোদ পড়ার আগে আসতে পারেননি। বেশ কিছু প্রকাশনা সংস্থার দফতরে এ দিন ভালই আড্ডা জমেছিল বলে খবর।

নববর্ষে প্রতি বছরই কলেজ স্কোয়ারে বইমেলা হয়। গত দু’বছর বন্ধ থাকার পরে এ বার ফের বইমেলা হচ্ছে সেখানে। কয়েক জন প্রকাশক জানালেন, সল্টলেকে সম্প্রতি কলকাতা বইমেলা হয়ে গিয়েছে। ফের এক মাসের মধ্যে একটি বইমেলা হলেও বইপ্রেমীরা অনেকে এসেছিলেন। কিছু বই ৪০-৫০ শতাংশ ছাড়েও দেওয়া হচ্ছে। অনেকেই কিনে নিয়ে যাচ্ছেন।
কোন্নগর থেকে আসা অনিরুদ্ধ ধর ও সর্বাণী ধর জানালেন, তাঁরা কলকাতা বইমেলায় নিয়মিত আসেন না। বরং এই কলেজ স্কোয়ারের বইমেলায় প্রতি বছর আসেন। কারণ, এখানে বেশ কিছু ভাল বই অনেক বেশি ছাড়ে পাওয়া যায়। করোনার কারণে গত দু’বছর কলেজ স্কোয়ারের বইমেলায় আসতে পারেননি তাঁরা।

প্রকাশকেরা জানালেন, লেখকেরাও অনেকে আড্ডা মেরে ফেরার পথে বইমেলায় ঢুঁ মেরেছেন। এক প্রকাশক জানালেন, কলেজ স্ট্রিটে তাঁর প্রকাশনার দফতরে কয়েক জন লেখক এসেছিলেন। তাঁরা ফেরার পথে বইমেলাতেও যান। বইমেলায় ওই প্রকাশনার স্টলেই বসেছিলেন এক প্রচ্ছদশিল্পী। দু’বছর পরে ফের কয়েকটি বইয়ের প্রচ্ছদ আঁকার সুযোগ পেয়েছেন তিনি। তাঁর কথায়, ‘‘গত দু’বছরে কিছুই হয়নি। এ বার প্রচ্ছদ আঁকতে গিয়ে বুদ্ধির ঘষামাজা শুরু করতে পেরেছি। এটাই বা কম কী!’’

কলেজ স্ট্রিট বইপাড়ার আর এক প্রকাশক এ দিন বললেন, ‘‘করোনাকালে সকলে যেন একটি অন্ধকার সুড়ঙ্গে চলে গিয়েছিলাম। এ বার সেই সুড়ঙ্গের শেষে যে আলো দেখতে পাচ্ছি, এটাই আশার কথা।’’

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

অন্য বিষয়গুলি:

Poila Baisakh Special Bengali New Year
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE