Advertisement
০১ নভেম্বর ২০২৪

ফোন চুরির নালিশ করতে গিয়ে জুটল পুলিশের ‘মার’

মাত্র এক বছর আগে কেনা দামি মোবাইল চুরি গিয়েছিল। ফোন ফেরত পেতে পুলিশের কাছে অভিযোগ জানাতে গিয়েছিলেন দুই যুবক। উল্টে তাঁদেরই বেধড়ক মারধর করার অভিযোগ উঠল পুলিশের বিরুদ্ধে। পুলিশের অবশ্য পাল্টা অভিযোগ, ওই দুই যুবক থানায় বসে তাদের সঙ্গে অভব্য ব্যবহার করেন এবং তাদের মারধর করেন। পরে দু’পক্ষই পরস্পরের বিরুদ্ধে অভিযোগ দায়ের করে।

আদিল নাসেরের পিঠে মারের দাগ। বুধবার। —নিজস্ব চিত্র।

আদিল নাসেরের পিঠে মারের দাগ। বুধবার। —নিজস্ব চিত্র।

নিজস্ব সংবাদদাতা
শেষ আপডেট: ২৩ এপ্রিল ২০১৫ ০০:০১
Share: Save:

মাত্র এক বছর আগে কেনা দামি মোবাইল চুরি গিয়েছিল। ফোন ফেরত পেতে পুলিশের কাছে অভিযোগ জানাতে গিয়েছিলেন দুই যুবক। উল্টে তাঁদেরই বেধড়ক মারধর করার অভিযোগ উঠল পুলিশের বিরুদ্ধে। পুলিশের অবশ্য পাল্টা অভিযোগ, ওই দুই যুবক থানায় বসে তাদের সঙ্গে অভব্য ব্যবহার করেন এবং তাদের মারধর করেন। পরে দু’পক্ষই পরস্পরের বিরুদ্ধে অভিযোগ দায়ের করে।

ঘটনাটি ঘটেছে মঙ্গলবার দুপুরে একবালপুর থানায়। আহত এক যুবককে স্থানীয় নার্সিংহোমে ভর্তি করা হয়েছে। ওই রাতেই এলাকাবাসী ঘটনার প্রতিবাদে একবালপুর থানার সামনে বিক্ষোভ দেখান।

কলকাতা পুলিশের ডিসি (বন্দর) মহম্মদ ইমরান ওয়াহাব বলেন, ‘‘দু’পক্ষের অভিযোগই পেয়েছি। অভিযুক্ত সাব-ইনস্পেক্টর পীযূষ সরকারকে ‘ক্লোজ’ করা হয়েছে। তাঁর বিরুদ্ধে বিচারবিভাগীয় তদন্তেরও নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। ওই দুই যুবকের অভিযোগও খতিয়ে দেখার নির্দেশ দিয়েছি।’’ পুলিশ সূত্রের খবর, ওই সাব-ইনস্পেক্টর মাসখানেক আগে চাকরিতে যোগ দিয়েছেন। এখন তিনি ‘প্রবেশনারি পিরিয়ড’-এ আছেন।

ঠিক কী হয়েছিল মঙ্গলবার রাতে? পুলিশ সূত্রে খবর, একবালপুরের বাসিন্দা আদিল নাসের এবং তাঁর ভাই আকিব মোবাইল চুরি যাওয়ার অভিযোগ জানাতে থানায় এসেছিলেন। আদিল যোগেশচন্দ্র চৌধুরী কলেজের আইন বিভাগের তৃতীয় বর্ষের ছাত্র। আকিব এ বছর উচ্চ মাধ্যমিক পরীক্ষা দিয়েছে। আদিল পুলিশকে জানিয়েছেন, সম্প্রতি আকিবের মোবাইল হারিয়ে যাওয়ার খবর পেয়ে তিনি তাঁদের এক ভাড়াটেকে সন্দেহ করেন। তাঁকে জিজ্ঞাসাবাদ করার পরেই জানা যায়, তিনিই ফোনটি নিয়েছিলেন। পরে ফোনটি পাওয়া গেলেও সিম কার্ডটি মেলেনি। এর পরেই আদিল ও আকিব থানায় অভিযোগ জানাতে যান।

আদিলের অভিযোগ, ‘‘পুলিশ আমাদের এফআইআর না নিয়ে সিম কার্ড পাওয়া যাচ্ছে না বলে অভিযোগ জানাতে বলে। লিখিত অভিযোগ নিতেও তারা টালবাহানা করছিল। আমার বাবা আবু নাসের পেশায় আইনজীবী। তাঁর নামের আগে যখন আইনজীবী শব্দটি লিখতে যাই, তখন পুলিশ আপত্তি জানায়। এই নিয়ে বচসার সূত্রপাত।’’ তাঁর কথায়, ‘‘কয়েক জন পুলিশকর্মী আমাকে গালিগালাজ করেন এবং আমাকে লক-আপের সামনে নিয়ে গিয়ে মারধর করেন। লাঠি আর রড দিয়ে পিঠে মারা হয়। পরে ভাইকেও মারধর করে পুলিশ। শেষমেশ বুধবার আমি লিখিত অভিযোগ জানাই।’’

পুলিশের অভিযোগ, আদিল থানার মধ্যেই সাব-ইনস্পেক্টর পীযূষ সরকারের সঙ্গে অভব্য আচরণ করেন ও তাঁকে মারধর করেন। পুলিশ তখন তাঁদের বাধা দেয়। এই নিয়ে দুই পক্ষে ধস্তাধস্তিও হয়। পরে আদিল ও আকিব পীযূষবাবুর বিরুদ্ধে অভিযোগ দায়ের করেন। পুলিশকে মারার অভিযোগ প্রসঙ্গে আদিল বলেন, ‘‘আমার বিরুদ্ধে মারামারির অভিযোগ থাকলে থানার সিসিটিভিতেই তা দেখতে পাওয়া যাবে। পুলিশকে আমি চ্যালেঞ্জ জানাচ্ছি। অভিযোগ প্রমাণ হলে আমি সব দোষ স্বীকার করে নেব।’’

এ ব্যাপারে আকিব বলেন, ‘‘গত বছরই মোবাইলটা কিনেছিলাম। সেটা পাওয়া গেলেও সিম কার্ড পাচ্ছিলাম না। তাই পুলিশের কাছে গিয়েছিলাম। পুলিশের সব নিয়ম না-ই জানতে পারি। তাঁরা ভাল ভাবে আমাদের বলতে পারতেন। তা না করে থানার মধ্যেই মারধর করলেন কেন?’’

সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE