Advertisement
১৯ মে ২০২৪
হাওড়া পুরসভা

এক দশক পরে বদল সম্পত্তি করের কাঠামো

রাজস্ব আদায়ে সামঞ্জস্য আনতে সম্পত্তি করের কাঠামোয় পরিবর্তন করল হাওড়া পুরসভা। এর ফলে পাকা বাড়ির ক্ষেত্রে যেমন ১০ শতাংশ কর বাড়ল, তেমনই টালি এবং‌‌ টিনের চালের বাড়ির কর এক ধাক্কায় কমে গেল ৫৩ শতাংশ।

নিজস্ব সংবাদদাতা
শেষ আপডেট: ১০ ফেব্রুয়ারি ২০১৭ ০১:০২
Share: Save:

রাজস্ব আদায়ে সামঞ্জস্য আনতে সম্পত্তি করের কাঠামোয় পরিবর্তন করল হাওড়া পুরসভা। এর ফলে পাকা বাড়ির ক্ষেত্রে যেমন ১০ শতাংশ কর বাড়ল, তেমনই টালি এবং‌‌ টিনের চালের বাড়ির কর এক ধাক্কায় কমে গেল ৫৩ শতাংশ। বৃহস্পতিবার মেয়র রথীন চক্রবর্তী সম্পত্তি করের বিষয়ে এই সিদ্ধান্তের কথা জানান।

কর কাঠামোয় বৈষম্য ছিল কোথায়? হাওড়া পুরসভার কর্তাদের দাবি, বিগত বাম বোর্ড ৩৪ বছরে মাত্র ১৯টি ওয়ার্ডের সম্পত্তির জেনারেল রিভিশন (জিআর) করেছিল। শেষ বার ওই ওয়ার্ডগুলির জিআর হয়েছিল ২০০৭ সালে। অন্য দিকে, ১৯৮৪ সালের পরে বাকি ২৩ টি ওয়ার্ডে সম্পত্তির মূল্যায়নই হয়নি। পাশাপাশি, ৬টি সংযোজিত ওয়ার্ডের নির্দিষ্ট হোল্ডিং নম্বর না থাকায় সেখানে সম্পত্তি কর মূল্যায়ন
করাই যায়নি।

যে ২৩টি ওয়ার্ডের সম্পত্তির মূল্যায়ন করা হয়নি, সেখানকার বাসিন্দারা পুরনো হারেই কর দিচ্ছেন। পুর প্রশাসন সমীক্ষা করে দেখেছে, ওই সব ওয়ার্ডের ফাঁকা জমিতে একের পর এক বহুতল ও পাকা বাড়ি তৈরি হলেও সেগুলির সম্পত্তি কর বর্তমান বাজারদরের তুলনায় অনেক কম। অন্য দিকে ২০০৭ সালে যে ১৯টি ওয়ার্ডের জিআর হয়েছিল, সেখানকার বর্তমান সম্পত্তি করের সঙ্গে ২৩টি ওয়ার্ডের সম্পত্তি করের মিল নেই।

মেয়র পারিষদ (কর নির্ধারণ) শান্তনু বন্দ্যোপাধ্যায় বলেন, ‘‘২৩টি ওয়ার্ডের পুনর্মূল্যায়ন হওয়ার আগে সেখানকার বাসিন্দাদের এক হাজার বর্গফুটের পাকা বাড়ির জন্য কর দিতে হতো ৫০ টাকা। ১৯টি ওয়ার্ডের বাসিন্দারা প্রতি কোয়ার্টারে সেখানে দিচ্ছিলেন ৪১৩ টাকা।’’ পুনর্মূল্যায়নের পরে ২৩টি ওয়ার্ডে পাকা ছাদযুক্ত এক হাজার বর্গফুটের বাড়ির কর দাঁড়িয়েছে ৪৫৪ টাকা। আবার টালি ও অ্যাসবেস্টসের ছাউনি দেওয়া বাড়ির বার্ষিক কর ৭৬৯ টাকা থেকে নেমে এসেছে ৩৬৩ টাকায়।

রাজস্ব বিভাগের মেয়র পারিষদ অরুণ রায়চৌধুরী বলেন, ‘‘১৯টি ওয়ার্ডে পুনর্মূল্যায়নের পরে সেখানকার বাসিন্দাদেরও দেয় করের পরিমাণ হবে ৪৫৪ টাকা, যা আগের থেকে মাত্র ৪১ টাকা বেশি।’’

কেন করের পরিমাণে এত ফারাক? মেয়র রথীন চক্রবর্তীর দাবি, বিগত বাম বোর্ড গত ৩৪ বছরে মাত্র কয়েকটি ওয়ার্ডের জেনারেল রিভিশন করায় বৈষম্য বেড়েছিল। তাই সম্পত্তির পুনর্মূল্যায়ন করে সব ওয়ার্ডের কর কাঠামোর মধ্যে সামঞ্জস্য আনতেই এই সিদ্ধান্ত। পুরসভা সূত্রে খবর, আগামী এপ্রিল থেকে নতুন কর চালু হবে। সব ওয়ার্ডে একই কর কাঠামো চালু করা হবে এই বছরের অক্টোবরের মধ্যে।

যদিও বাম পুর বোর্ডের মেয়র পারিষদ তথা সিপিএম নেতা সমীর সাহা বলেন, ‘‘তৃণমূল বোর্ডের দাবি ঠিক নয়। কর অনেকটাই বাড়ানো হয়েছে। গলদ রয়েছে মূল্যায়ন পদ্ধতিতেও। কিছু ক্ষেত্রে কর কমলেও বেশির ভাগ ক্ষেত্রে ১০০০ শতাংশ কর বেড়‌েছে।’’ সমীরবাবুর দাবি মানতে চাননি শান্তনুবাবু। তাঁর কথায়, ‘‘বিজ্ঞানসম্মত ভাবে রেন্টাল পদ্ধতিতে কর নির্ধারণ করা হয়েছে।’’

মেয়র আরও বলেন, ‘‘যাঁদের কর বাড়ল, তাঁদের নোটিস পাঠানো হয়েছে। তাঁরা আপত্তি জানিয়ে আবেদন করলে রিভিউ কমিটি তা খতিয়ে দেখে সাত দিনে ব্যবস্থা নেবে। তবে চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত না হওয়া পর্যন্ত ওই আবেদনকারীদের থেকে পুরনো হারেই কর নেওয়া হবে।’’ তিনি জানান, সংযোজিত এলাকার বাসিন্দারা নিজেরাই সম্পত্তির মূল্যায়ন করিয়ে জমা দিয়েছেন। সেখানেও একই কর কাঠামো চালু করা হচ্ছে। এ ছাড়াও সরকারি স্কুল, গ্রন্থাগার, ধর্মীয় প্রতিষ্ঠানের আবেদনের ভিত্তিতে পুরো করই মকুব করা হবে।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

অন্য বিষয়গুলি:

Revenue Howrah municipality Property tax structure
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE