Advertisement
১৭ মে ২০২৪

ম্যাডক্স স্কোয়্যারে ইঞ্জিনিয়ারকে পিটিয়ে খুন

বন্ধুর গাড়ি করে বিরিয়ানি খেতে বেরিয়েছিলেন। বাড়ি ফিরলেন শববাহী গাড়িতে। পুলিশ জানিয়েছে, ম্যাডক্স স্কোয়ারে দাঁড়িয়ে বিরিয়ানি খাওয়া নিয়ে শুক্রবার রাত দেড়টা নাগাদ রমিত মণ্ডল (২৯) ও তাঁর চার বন্ধুর সঙ্গে স্থানীয় কিছু যুবকের বচসা শুরু হয়।

নিজস্ব সংবাদদাতা
শেষ আপডেট: ২১ জুন ২০১৬ ২২:৫৩
Share: Save:

বন্ধুর গাড়ি করে বিরিয়ানি খেতে বেরিয়েছিলেন। বাড়ি ফিরলেন শববাহী গাড়িতে।

পুলিশ জানিয়েছে, ম্যাডক্স স্কোয়ারে দাঁড়িয়ে বিরিয়ানি খাওয়া নিয়ে শুক্রবার রাত দেড়টা নাগাদ রমিত মণ্ডল (২৯) ও তাঁর চার বন্ধুর সঙ্গে স্থানীয় কিছু যুবকের বচসা শুরু হয়। যা শেষ পর্যন্ত হাতাহাতিতে পৌঁছয়। এই ঘটনায় মাথায় গুরুতর চোট পান রমিত। তাঁকে ইএম বাইপাসের একটি বেসরকারি হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। সোমবার রাতে তিনি মারা যান। রমিত সোনারপুর বিদ্যাসাগর সরণির বাসিন্দা ছিলেন।

শনিবার রমিতের বন্ধুরা এই ঘটনার কথা পুলিশকে জানান। বালিগঞ্জ থানায় তাঁরা ৫-৬ জন অজ্ঞাতপরিচয় ব্যক্তির বিরুদ্ধে লিখিত অভিযোগ দায়ের করেছেন। মঙ্গলবার কলকাতা পুলিশ জানিয়েছে, এই ঘটনায় খুনের মামলা রুজু করা হয়েছে। এক পুলিশকর্তা বলেন, ‘‘ময়নাতদন্তের রিপোর্ট পাওয়ার পরে তদন্তের গতি বাড়বে।’’

কী হয়েছিল শুক্রবার রাতে?

রমিতের বন্ধু চিরঞ্জিত নন্দী মঙ্গলবার জানান, শুক্রবার রাতে তাঁর গাড়িতেই রমিত ও তাঁর অন্য তিন বন্ধু পার্কসার্কাসের একটি রেস্তোরাঁর বিরিয়ানি খাওয়ার জন্য সোনারপুর থেকে রওনা দেন। ওই দোকান থেকে বিরিয়ানি কিনে তাঁরা ম্যাডক্স স্কোয়ারে যান। রাত দেড়টা নাগাদ তাঁরা যখন ম্যাডক্স স্কোয়ারে গাড়ি থামিয়ে বিরিয়ানি খাচ্ছিলেন তখন কয়েক জন স্থানীয় যুবক তাঁদের ওখান থেকে চলে যেতে বলেন। চিরঞ্জিত ও তাঁর আর এক বন্ধু টনি সেই যুবকদের বলেন, তাঁরা খাওয়া শেষ করেই রওনা দেবেন। চিরঞ্জিতের অভিযোগ, এর পরেই তাঁদের গালাগালি এবং ধাক্কা দিতে থাকেন ওই যুবকেরা। অজ্ঞাতপরিচয় ওই যুবকেরা চিরঞ্জিতের গাড়ির কাচ ভেঙে দেয়। পরিস্থিতি বেসামাল হতেই গাড়িতে উঠে পড়েন ওই পাঁচ জন। চিরঞ্জিতের কথায়: ‘‘গাড়ি চালিয়ে যখন বেরিয়ে যাচ্ছি, এমন সময় আর এক বন্ধু দেবজিৎ আমায় ডেকে বলে, রমিতের মাথা দিয়ে রক্ত ঝরছে।’’ রমিত চালকের পিছনের আসনে বসেছিলেন। গুরুতর আহত অবস্থায় তাঁকে গড়িয়াহাটের একটি বেসরকারি হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয়। ওই হাসপাতাল রমিতকে ভর্তি নিতে চায়নি। তারপরে রমিতকে ইএম বাইপাসের একটি বেসরকারি হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। সোমবার রাতে রমিতের মৃত্যু হয়। চিরঞ্জিতের দাবি, শনিবার সকালে তাঁরা বাড়ি যাওয়ার জন্য হাসপাতাল থেকে বেরিয়ে যখন ওই গাড়ির দরজা খোলেন, তখন গাড়ির মধ্যে একটি বড় পাথরের টুকরো দেখতে পান।

এ দিন হাসপাতালের তরফে জানানো হয়েছে, রমিত মাথায় যে ভাবে চোট পেয়েছিলেন তাতে স্পষ্ট তাঁর মাথায় ধারাল অস্ত্রের কোপ দেওয়া হয়েছে। কোনও ইট বা পাথরের আঘাতে এ ভাবে মাথা দু’ভাগ হয়ে যায় না।

রমিতের পরিবারের তরফ থেকে জানানো হয়, মনোরঞ্জন ও রত্না মণ্ডলের একমাত্র ছেলে ছিলেন রমিত। তিনি পেশায় ইঞ্জিনিয়ার ছিলেন। শুক্রবার বিকেল থেকেই রমিতের ফোনে বার বার চিরঞ্জিত, টনি, দেবজিৎ ফোন করেন। কিন্তু কোনও ফোনের জবাব দেননি রমিত। নিজের ঘরে শুয়েছিলেন। শুক্রবার রাতে এই বন্ধুরা রমিতের বাড়িতে আসেন ও একসঙ্গে বেরিয়ে যান। কিন্তু তার পর কী ভাবে এই দুর্ঘটনা ঘটল তা বুঝতে পারছে না রমিতের পরিবার। রমিতের জামাইবাবু তাপস মণ্ডল বলেন, ‘‘ঘটনাটা কী ভাবে ঘটল বুঝতে পারছি না। এখনও বিশ্বাস হচ্ছে না রমিত আর নেই।’’

আরও পড়ুন

কলকাতাতেও ডানা মেলবে এয়ার এশিয়া

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

অন্য বিষয়গুলি:

engineer scuffle Death
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE